দুই বছর পর করোনাভাইরাস সংক্রমণ শিথিল হওয়ায় মানুষের জীবনযাত্রায় ফিরেছে স্বাভাবিক ছন্দ। আর পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে রমজানের প্রথম সপ্তাহের পর থেকে বেচাবিক্রিতে সুখের খবর ভেসে বেড়াচ্ছে ব্যবসা অঙ্গনে। ইতোমধ্যে শিক্ষা-সংস্কৃতির পাদপীঠ কুমিল্লা মহানগরীতে জমে ওঠেছে ঈদ বাজার। শুক্র-শনিবার ছুটির দিন থাকায় শপিংমল, মার্কেট ও বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শো-রুমগুলোতে ছিল ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।
মহানগরীর শপিংমল ও মার্কেটের দোকানগুলো মেয়েদের থ্রিপিস, লেহেঙ্গা, নারীদের বিভিন্ন ধরণের শাড়ি, কসমেটিক্স, জুয়েলারি আইটেম, শিশুদের পোশাক, জুতা আর ছেলেদের শার্ট প্যান্টসহ সকল বয়সী পুরুষের পাঞ্জাবির বিশাল কালেকশনে সজ্জিত। প্রচণ্ড গরমের কারণে দিনে ক্রেতাদের ভিড় কিছুটা কম থাকলেও ইফতারের পর মহানগরীর রাস্তায় তীব্র যানজট এড়িয়ে নারী-পুরুষের ঢল নামে শপিংমল ও মার্কেটগুলোতে।
ইতোমধ্যে আসন্ন ঈদুল ফিতর আনন্দময় করে তুলতে নতুন পোশাক কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে ওঠেছেন কুমিল্লার মানুষ। মহানগরীতে বসবাস করা লোকজন ছাড়াও প্রতিদিনই বিভিন্ন উপজেলা থেকে নারী-পুরুষরা ঈদের কেনাকাটায় যোগ হচ্ছেন শপিংমল ও মার্কেটগুলোতে। বর্তমানে ঈদ পোশাকের মধ্যে শিশুদের পোশাক এবং নারীদের থ্রিপিস সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
কুমিল্লা মহানগরীর কান্দিরপাড় মনোহরপুরের সাত্তার খান কমপ্লেক্স, খন্দকার হক টাওয়ার, ময়নামতি গোল্ডেন টাওয়ার, নূর মার্কেট, সাইবার ট্রেড, আনন্দ সিটি সেন্টার, হিলটন টাওয়ার, নিউ মার্কেট, হোসনে আরা ম্যানসন, সাইবার ট্রেড, গণি ভূঞা ম্যানসন, চৌরঙ্গী শপিং সেন্টার, লাকসাম রোডে বিবি সমতট, রামঘাট এলাকায় কুমিল্লা টাওয়ার ও রেইসকোর্সের ইস্টার্ণ এয়াকুব প্লাজায় কোলকাতা, মুম্বাই এমনকি পাকিস্তানি পোশাকের ধূমের ভেতরেও দেশিয় ফ্যাশনের প্রতি ছেলেমেয়েদের আকৃষ্ট করতে মহানগরীর নজরুল এভিনিউতে আড়ং, ফড়িং, জেন্টেল পার্ক, রঙ, বিশ্বরঙ, সাদাকালো, অঞ্জনস, বাদুরতলায় ইনফিনিটি, সেইলর, ওয়ার্ল্ডসম্যানস, আর্ট, ক্যাটসআই, লাকসাম রোডে টপটেন, ইজি শো-রুমে বাহারি ডিজাইনের ড্রেস প্রদর্শন করা হয়েছে।
মহানগরীর শপিংমল ও মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, মহামারি করোনার জন্য গত দুই বছর সেভাবে বেচাবিক্রি করতে পারেননি তারা। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ক্রেতা আকর্ষণে সব ধরনের চেষ্টাই তারা করছেন। শপিংমলগুলোতে বিশেষ আলোকসজ্জা করা হয়েছে।
এবারের ঈদে ছেলেদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে পাকিস্তান, মুম্বাই ও কোলকাতার তৈরি নামিদামি ব্র্যান্ডের মধ্যে গুলজার, মান্নাত, মিনহাল, নূর, কারিজমা, তায়াওক্কাল, রিলেশা, মিলান, আনজারা, আফরিনের সিল্ক ও জর্জেটের থ্রিপিস। এছাড়াও গঙ্গা, বিবেকের কটনের থ্রিপিস রয়েছে। মহানগরীর কান্দিরপাড় নূর মার্কেটের থ্রিপিস সেন্টার রিলেশনের সত্ত্বাধিকারী আলী হায়দার কামাল জানান, রোজার শুরু থেকেই ক্রেতা সমাগম ধীরে ধীরে বাড়ছে। গরমের কারণে দিনে কিছুটা কম হলেও ইফতারের পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ভিড় লেগে থাকে। সামনের দিকে ভিড় আরও বাড়বে। এবারে মেয়েরা জর্জেট ও সিল্কের পোশাকের প্রতি বেশি ঝুঁকেছেন। আর পোশাকে ডিজাইনের দিক থেকেও অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার অনেক ভিন্নতা এবং নান্দনিকতা আনা হয়েছে।
এদিকে কুমিল্লার বড় বড় শপিং সেন্টার ও নামিদামি শাড়ি কাপড়ের দোকানগুলোতে বিদেশি শাড়ির বাজার দখলে নিয়েছে বৈচিত্র্য আর কারুকাজে ভরা দেশিয় শাড়ি।