মাদারীপুরের কালকিনিতে শুরু হয়েছে ২০০ বছরের পুরনো ঐহিত্যবাহী কুণ্ডুবাড়ি মেলা। শ্যামাপূজাকে ঘিরে অনুষ্ঠিত চার দিনের এই মেলায় কোটি কোটি টাকার মালামাল বিক্রি হয়। সুলভে জিনিসপত্র পাওয়ায় হাজার হাজার দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর মেলা প্রাঙ্গণ।
জানা যায়, হিন্দু সম্প্রদায়ের শ্যামাপূজা উপলক্ষে মাদারীপুরের কালকিনির ভুরঘাটায় শুরু হয়েছে চার দিনব্যাপী কুণ্ডুবাড়ি মেলা। মেলাকে ঘিরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের দুই পাশসহ প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসেছে সারি সারি দোকান। পাওয়া যাচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। সঙ্গে রয়েছে কাঠের তৈরি বিভিন্ন আসবাবপত্রও। এসব জিনিস সুলভে কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা। আর ভালো বিক্রি হওয়ায় খুশি বিক্রেতারাও।
বরিশালের গৌরনদীর কটকস্থল থেকে আসা ক্রেতা গিয়াস উদ্দিন মিয়া বলেন, মেলাতে সব ধরনের জিনিসপত্র পাওয়া যায়। এ জন্য সুলভে কিনতে আসছি মেলায়।
মাদারীপুর শহর থেকে যাওয়া ক্রেতা জেবু ইসলাম বলেন, পরিবারের সবাইকে নিয়ে মেলায় আসছি। একদিকে কেনাকাটা, অন্যদিকে বিনোদন এই দুই ধরনের উপভোগ হয় এই মেলাতে। সবকিছুর দাম সাধ্যমতো হওয়ায় কেনাকাটা করে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি।
রাজধানী ঢাকার জুরাইন থেকে আসা ব্যবসায়ী মো. সবুজ হোসেন বলেন, প্রতিবছরই আসি এই মেলায়। এবারও আশা নিয়ে আসছি। মালামাল সবকিছু বিক্রি করে যাব, এটাই প্রত্যাশা।
টাঙ্গাইল থেকে আসা আরেক ব্যবসায়ী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ৩০টি ছোট-বড় খাট নিয়ে আসছি মেলাতে। ৪ দিনের মেলায় জমজমাট কেনাবেচা শুরু হয়েছে। আশার করছি, বেচাকেনাও বেশ ভালো হবে।
মাদারীপুরের কালকিনির ভুরঘাটার কুণ্ডুবাড়ি মেলা কমিটির সহসভাপতি স্বপন কুন্ডু জানান, পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য ধরে রাখতেই প্রতিবছর এই মেলা হয়ে আসছে। এলাকাবাসী, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সহযোগিতায় প্রতিবছর বড় আকারে মেলার আয়োজন করা হয়। আগামীতে আরও বড় আকারে মেলা সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
মাদারীপুরের কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন জানান, প্রায় ২০০ বছর আগে এখানকার মহেষ চন্দ্র কুণ্ডু এই মেলার আয়োজন করেন। সেই থেকে একটানা হয়ে আসছে মেলা। ঐতিহ্যবাহী মেলায় প্রতিবছর কয়েক কোটি টাকার মালামাল বিক্রি হয়। সেই জন্য বিশেষ নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, মেলায় আগত দর্শনার্থীর নিরাপত্তায় থানা পুলিশের পাশাপাশি জেলার পুলিশও কাজ করছে। এ ছাড়া ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে হওয়ায় ট্রাফিক পুলিশও দায়িত্ব পালন করছে। মোটকথা মেলাকে ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এ জাতীয় আরো খবর..