পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মৃদু বিষধর একটি ‘কালনাগিনি’ উদ্ধার করেছেন অ্যানিমল লাভারস অব পটুয়াখালী সংগঠনের সদস্যরা। সাপটির দৈর্ঘ্য দেড় ফুট।বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের আদমপুর গ্রাম থেকে সাপটি উদ্ধার করা হয়। পরে এ প্রাণীটিকে উপজেলা প্রাণী কল্যাণ উন্নয়ন কেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
অ্যানিমল লাভারস অব পটুয়াখালীর সদস্যরা জানান, নীলগঞ্জ ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের আল মনজির নামে এক ব্যক্তির বসতবাড়ির জালে লাল-কালো ফোঁটা ফোঁটা বর্ণের সাপটি আটকা পড়ে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাপটি উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকর্মী রাকায়েত হোসেন জানান, এই সাপ সচরাচর দেখা যায় না। বর্তমানে সাপটির চিকিৎসা চলছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ফাতরার বনে সাপটি অবমুক্ত করা হবে।
কালনাগিনি সম্পর্কে বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা জানান, দেশে পাওয়া দৃষ্টিনন্দন সাপগুলোর মধ্যে কালনাগিনি (Ornate Flying Snake) অন্যতম। অঞ্চলভেদে সাপটিকে উড়াল সাপ, সুন্দরী সাপ, কালসাপ ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। ইংরেজি নামের সঙ্গেও ‘ফ্লাইং স্নেক’ রয়েছে, তবে সাপটি মোটেও উড়তে পারে না। এটি গাছের উঁচু ডাল থেকে নিচু ডালে লাফিয়ে নামে। কালনাগিনি দিবাচর ও শান্ত স্বভাবের সাপ। খুব বেশি বিরক্ত না হলেও কামড়ায় না। এরা গিরগিটি, বাদুড়, ইঁদুর, ছোট পাখির ডিম ও কীটপতঙ্গ খায়। এরা সাধারণত পোকামাকড়, টিকটিকি, গিরগিটি, ব্যাঙ ও ছোট পাখি ইত্যাদি খায়। সাধারণত মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত এদের প্রজনন মৌসুম। সাপটি একবারে ৬-১২টি ডিম পাড়ে, যা থেকে দু-মাস পর বাচ্চা ফোটে।তিনি বলেন, কালনাগিনি নির্বিষ সাপ। অথচ নাটক-সিনেমায় কালনাগিনিকে ভয়ংকর বিষধর সাপ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ফলে মানুষ সাপটি দেখামাত্রই মেরে ফেলে। এতে সুন্দর প্রাণীটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে।