নদীকে পেছনে রেখে ছবি তুলবেন স্বামী; এ জন্য নদীর অল্প পানিতে নেমেছিলেন তিনি। কিন্তু স্ত্রী যখন মোবাইলে স্বামীর ছবি তুলতে ব্যস্ত, ঠিক তখনই নদীর জোয়ারে তলিয়ে যান স্বামী। শেষ পর্যন্ত বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা তার মরদেহ উদ্ধার করেন।
সোমবার (৩ অক্টোবর) দুর্গপূজার অষ্টমীর দিনে ভোরের ঘটনা। এদিন উত্তর কলকাতার ভূতনাথ ঘাটে রাতুল নামে ওই ব্যক্তি গঙ্গায় নেমেছিলেন ছবি তুলতে।
উত্তর বন্দর থানার পুলিশের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, মৃতের নাম রাতুল ভট্টাচার্য (৪২)। বাড়ি বাগুইআটির রঘুনাথপুরে। সোমবার ভোরে উত্তর কলকাতার ভূতনাথ ঘাটে গঙ্গায় তলিয়ে যান রাতুল। সেই সময় ঘাটে তেমন একটা ভিড় ছিল না। ফলে দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে উদ্ধার করার মতো তেমন কাউকে সেখানে পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘাটে পৌঁছায়। খবর দেয়া হয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরে। তাদের কর্মীরা এসে গঙ্গায় রাতুলের খোঁজ শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত ভূতনাথ ঘাটেরই এক জায়গায় কাদায় আটকে থাকা অবস্থায় রাতুলের মরদেহ মেলে।
না বুঝে গঙ্গায় নেমে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার একাধিক ঘটনা ভূতনাথ ঘাটে আগেও ঘটেছে। কয়েক মাস আগেও হাওড়া থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের দুই পরীক্ষার্থী ভূতনাথ ঘাটে এসেছিল স্নান করতে। জোয়ারের টানে তারা দুজনেই তলিয়ে যায়।কলকাতা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বারবার সাবধান করা সত্ত্বেও লোকজন এ নিয়ে ভাবেন না। দিনের ব্যস্ত সময়ে যখন জোয়ার চলে, তখন সাধারণত ঘাটের কাছে থাকা নিরাপত্তাকর্মীরা বাঁশি বাজিয়ে সবাইকে সাবধান করেন। কিন্তু এ দিন প্রায় কাকভোরে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। তখন সেখানে কেউ ছিলেন না।’
রাতুলের পরিবার জানায়, স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে রাতুল রোববার রাতে ঠাকুর দেখে এ দিন ভোরে ভূতনাথ ঘাটে পৌঁছান। পানিতে নেমে রাতুল তার স্ত্রী লিপিকাকে ছবি তুলে দিতে বলেন। লিপিকা যখন ছবি তুলছেন, তখনই পানির স্রোতে ভেসে যান রাতুল।
তার স্ত্রী লিপিকা জানান, ‘রাতুল সামাজিকমাধ্যমে নিজের ছবি পোস্ট করতেন। রাতুল আমাকে মোবাইলে ওর ছবি তুলতে বলেছিল। ও পানিতে নেমেছিল। আমি যখন ছবি তুলছি, তখনই পানির স্রোতে ও ভেসে যায়। তখন যে গঙ্গায় জোয়ার চলছিল, আমরা বুঝতে পারিনি।’
এ জাতীয় আরো খবর..