1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
কুড়িগ্রামে এক টাকার রেস্টুরেন্ট | Bastob Chitro24
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৫ পূর্বাহ্ন

কুড়িগ্রামে এক টাকার রেস্টুরেন্ট

ঢাকা অফিস
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩

দেশের দরিদ্রতম জেলা কুড়িগ্রামে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে চালু হলো এক টাকার রেস্টুরেন্ট। এক টাকায় শহরের রেস্টুরেন্টের খাবার পেয়ে খুশি হতদরিদ্র মানুষ।

দেশের প্রেক্ষাপটে বাজারে এক টাকা এখন নেহাত মূল্যহীন। প্রায় বিলুপ্তির পথে এক টাকার নোট। দোকানিরা এর চাহিদা সারেন চকলেট দিয়েই। তবে এক টাকায় রেস্টুরেন্টের খাবার অবিশ্বাস্য হলেও এমন ব্যতিক্রম আয়োজন করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।

দারিদ্র্যপীড়িত কুড়িগ্রাম জেলার সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চরসুভারকুঠি গ্রাম। এখানেই বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন স্থায়ীভাবে চালু করেছে বিশেষ এই রেস্টুরেন্ট।

এক টাকার এই রেস্টুরেন্টে পাওয়া যাচ্ছে খিচুড়ি, ভাত, মাছ, মাংস, ডিমসহ বারো পদের খাবার। এতে ক্ষুধার্ত মানুষ রেস্টুরেন্টে গিয়ে পছন্দের খাবার খেতে পারছে। মনোরম ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসে তৃপ্তিসহকারে পছন্দের খাবার খেতে পেরে খুশি সুবিধাভোগীরা।

রেস্টুরেন্টে খাবার খেতে আসা আছিয়া বেগম জানান, এক টাকার রেস্টুরেন্টে নাতনিকে নিয়ে খেতে এসেছি। আমরা কোনোদিনও রেস্টুরেন্টে বসে খাবার খাই নাই। আজ এক টাকা দিয়ে শান্তি করে খেলাম।

সুবিধাভোগী ৬৫ বছর বয়সের বৃদ্ধ আকবর আলী বলেন, জীবনে ভালো হোটেলে টাকা দিয়ে খাবার কিনে খেতে পারিনি। তবে এখানে বসে তৃপ্তি সহকারে খেতে পারছি।

সন্তানকে নিয়ে এ রেস্টুরেন্টে এসছেন চর সুভারকুটি এলাকার ছালেহা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। টাকা দিয়ে মাছ, মাংস কিনে খেতে পারি না। তবে এখানে অনেক দিন পর ভালো খাবার খেলাম।’

তবে এক টাকার রেস্টুরেন্টে রয়েছে পেশাদার বাবুর্চি, রেস্টুরেন্ট স্টাফ, মেন্যু কার্ড এবং বাহারি সব পুষ্টিকর খাবার। রেস্টুরেন্টটিতে একসঙ্গে ৩০ থেকে ৩৫ জন মানুষ বসে খেতে পারবে। আর একদিনে এখানে আয়োজন করা হয় ৫ শতাধিক মানুষের খাবার। বর্তমানে সপ্তাহে একদিন চলবে এই রেস্টুরেন্টের কার্যক্রম।

এই কাজে সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসার আহ্বান আয়োজকদের। তারা বলেন, বিত্তবানরা এগিয় আসলে প্রতিদিন এই রেস্টুরেন্ট চালানো সম্ভব।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ প্রধান সালমান খান ইয়াছিন বলেন, বর্তমানে সপ্তাহে একদিন এই রেস্টুরেন্টের কার্যক্রম চলবে। তবে এই কাজে সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে প্রতিদিন কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা আছে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০০ মানুষকে এই রেস্টুরেন্ট থেকে সেবা দেয়া সম্ভব।

কুড়িগ্রামে এই রেস্টুরেন্টটি একটি মডেল উল্লেখ করেন তিনি আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন দরিদ্র এলাকায় এই ধরনের কার্যক্রম চালু করা গেলে মানুষ ক্ষুধার কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে। এর পাশাপাশি পুষ্টিজনিত অভাবের রোগ থেকেও এই জনপদের মানুষের মুক্তি মিলবে বলে জানান তিনি।

আর বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড মেম্বার জামাল উদ্দিন জানান, এই রেস্টুরেন্ট প্রতিষ্ঠা করার মূল উদ্দেশ্য সমাজে ধনী-গরিবের বৈষম্য দূর করা।

বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সুবিধার বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক প্রধান আকরুম হোসেন বলেন, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা নিজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দরিদ্র, এতিম, অসহায়দের খুজে বের করে তাদের টোকেন দেয়।

রেস্টুরেন্টরে কার্যক্রম সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবক হৃদয় বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি জীবনে প্রথমবারের মতো রেস্টুরেন্টে ওয়েটারের কাজ করছি। সেটিও বিনা পয়সায়। এতে হোটেলের ওয়েটার, বাবুর্চিসহ কর্মচারীদের ঘাম ঝরানো শ্রম উপলব্ধি করা যাবে।

উল্লেখ্য, এর আগে ঢাকা ও কক্সবাজারে চালু করা হয় বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এক টাকার রেস্টুরেন্ট।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি