বাউল সম্রাট বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩২তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী ঐতিহাসিক লালন স্মরণোৎসব শুরু হয়েছে।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কালিগাং নদীপাড়ে বিশাল মঞ্চে সোমবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ উৎসবের উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি মোহাম্মদ সাইদুর রহমান।
এ সময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কুষ্টিয়া-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ।
তবে তার আগেই সকাল থেকে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমির আয়োজনে ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে এ স্মরোণৎসব শুরু হয়েছে। শেষ হবে ১৯ অক্টোবর রাতে।
এ উৎসবকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে মাজার প্রাঙ্গণে ভক্ত-অনুসারীরা উপস্থিত হয়েছেন। দেশ বিদেশ থেকে আসা লালন ভক্তদের আনাগুনায় লালন চত্বর কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। এখনও ভক্তদের আসা থেমে নেই সন্ধ্যা পর্যন্ত আসা চলবে। লালন উৎসবকে ঘিরে শহরের আবাসিক হোটেল ও আশপাশের বাড়িগুলো লালন ভক্তদের আগমনে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকছেন- জাতীয় সংসদ সদস্য কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ, জাতীয় সংসদ সদস্য কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো.খাইরুল আলম, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্রশাসক হাজী রবিউল ইসলাম, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আজগর আলী, কুমারখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খান, কুমারখালী পৌরসভার মেয়র মো. সামছুজ্জামান অরুন, কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মণ্ডলসহ অনেকে। আলোচনা সভা শেষে রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হবে লালন একাডেমির পরিবেশনায় লালন সংগীত; চলবে মধ্যরাত পর্যন্ত। অনুষ্ঠানের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে পুলিশ ও র্যাবকে।
কুষ্টিয়া লালন একাডেমির সদস্য লালন শিল্পীনাদিম শাহ বলেন, লালন সাঁই এর বার্ষিক স্মরণোৎসব উপলক্ষে তার সাধন-ভজনের তীর্থস্থান ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গণ এবার পরিণত হয়েছে উৎসবের আমেজ। দেশ-বিদেশ থেকে লালনভক্ত, বাউল অনুসারী ও সুধীজনসহ অসংখ্য মানুষের আগমন ঘটছে এখানে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম বলেন, লালন স্মরণোৎসব ও গ্রামীণ মেলাকে কেন্দ্র করে মাজার প্রাঙ্গণ ও তার আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুরো মাজার এলাকায় সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে। জেলা পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। সেই সঙ্গে আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন।
১৮৯০ সালের এ দিনে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার আখড়া বাড়িতে বাউল সম্রাট লালন শাহ দেহ ত্যাগ করেন। করোনার কারণে পর পর দুই বছর লালন স্মরোণৎসব বন্ধ ঘোষণা করেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম। তবে মনের টানে আখঁড়া বাড়িতে আসা সাধু ভক্তরা সাধুসঙ্গ বসান লালন মাজারের আশপাশে এলাকার বাড়িতে।
এ জাতীয় আরো খবর..