কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের বার্ষিক সাধারণ সভা ও বনভোজন -২০২৩ অনুষ্ঠিত হয় ১১ ফেব্রুয়ারি শনিবার দিনব্যাপী -কুষ্টিয়া রেনউইক বিনোদন পার্ক ও রিসোর্টে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নে (বিএফইউজে)’র সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেছেন পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে যেমন সাংবাদিকেরা নিরাপদ নয়, তেমনি নিজের বেডরুমেও সংবাদকর্মীরা নিরাপত্তাহীন। তার প্রমাণ শিশু সন্তানের সামনে সাগর-রুনীর নৃশংস হত্যাকাণ্ড। কর্মস্থলে সাংবাদিক নিরাপদ নয়, তার প্রমাণ কুষ্টিয়ার সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেলকে নিজ অফিস থেকে ডেকে নিয়ে খুন। ১৪ বছরে ৫৪ জন সাংবাদিক খুনের দায় সরকার এড়াতে পারেনা।
বিএফইউজে সভাপতি, একের পর এক সাংবাদিক খুনের ঘটনায় তদন্তের নামে তামাশা ও প্রহসন বন্ধ করার আহবান জানিয়ে বলেন, ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করুন। সাংবাদিকেরাই তাদের সহকর্মীর খুনীদের খুঁজে বের করবে। সংগঠনের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বাচ্চুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শামীম উল হাসান অপুর সঞ্চালনায় সাধারণ সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএফইউজের সহসভাপতি রাশিদুল ইসলাম, নির্বাহী পরিষদ সদস্য এইচ এম আলাউদ্দিন ও জাকির হোসেন, কুষ্টিয়া এডিটরস ফোরামের সভাপতি মজিবুল শেখ, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল-মামুন সাগর, সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান ডাবলু, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি লুৎফর রহমান কুমার, যুগ্ম সম্পাদক এম এ জিহাদ, এম শিহাব উদ্দিন, এস এম শাহীন, শাহরিয়ার ইমন প্রমুখ। বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেন, কুষ্টিয়ার সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেল হত্যার ৭ মাস অতিক্রান্ত হলেও প্রকৃত খুনিদের ধরা হয়নি। দুই জনকে গ্রেফতারের নামে আইওয়াশ করা হয়েছে। হত্যার ক্লু পাওয়ার দাবি করলেও ক্ষমতাধর খুনিচক্র এখন অধরা। বিএফইউজে সভাপতি বলেন, দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা ছাড়া সাংবাদিক খুন-নির্যাতন ও গণমাধ্যমে বিরাজমান অস্থিরতার অবসান হবে না, হাজারো সাংবাদিকের দুর্দশা, বেকারত্ব, নিরাপত্তাহীনতা ঘুচবেনা।
তিনি বলেন, কোন সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানো কিংবা কোন দলকে ক্ষমতায় বসানো সাংবাদিকদের কাজ নয়। কিন্তু গণতন্ত্রের পক্ষে, মানবাধিকারের পক্ষে, মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে সাংবাদিকেরা বরাবরই লড়াই করেছে। কারণ গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা না থাকলে স্বাধীন সাংবাদিকতা থাকে না। আর স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ না থাকলে সংবাদমাধ্যম ভঙ্গুর হয়ে পড়ে, অরাজকতা বিরাজ করে। বাংলাদেশে এখন সত্যিকারের সাংবাদিকতা অনুপস্থিত। এম আবদুল্লাহ বলেন, ২০২২ সালেই ৫ সাংবাদিক খুনের ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে এক সাংবাদিক খুন ও ১৮ জন সাংবাদিক নিপীড়নের স্বীকার হয়েছেন। বিএফইউজে সভাপতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ সর্বাত্মক আন্দোলনের ওপর জোর দিয়ে বলেন, সাংবাদিক সমাজকে দমন-নিপীড়ন চালিয়ে কোন স্বৈরাচারী সরকার টিকতে পারেনি। ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্যেও সাংবাদিকদের সংগ্রাম করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন বলেন, সাংবাদিক সমাজকে শৃঙ্খলিত করার জন্যে গণমাধ্যম কর্মী আইন, প্রেস কাউন্সিল আইনের সংশোধন, ২৯ টি প্রতিষ্ঠানকে তথ্য পরিকাঠামো ঘোষণা করা হয়েছে।