সিরাজগঞ্জে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালককে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুবছর পর মূল আসামি শিমুল খানকে (২৪) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগশন (পিবিআই)।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আটক আসামি শিমুল আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আটক আসামিরা জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, আসামি শিমুল ও অপর আসামি রেজাউল দুজনই মাদকাসক্ত ছিল। ভিকটিম মেহেদীর কাছে আসামি শিমুল অটোরিকশা চালানো শিখতো। হত্যার ২০ দিন আগে ভিকটিম মেহেদীর প্রতিবেশী চাচা শাকিল আসামি রেজাউলের কাছে মোবাইল বন্ধক রেখে ৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট নেয়। পরে শাকিল দাবি করে আসামি রেজাউলের দেওয়া ইয়াবা ট্যাবলেট নকল। তাই শাকিল তার দেওয়া মোবাইল রেজাউলের কাছ থেকে ফেরত চায়। আসামি রেজাউল ইয়াবা ট্যাবলেট না দেওয়া পর্যন্ত মোবাইল ফেরত দিতে রাজি হয় না। এ ঘটনা নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়।
পরবর্তীতে শাকিল বিষয়টি সিএনজি চালক মেহেদী হাসান রাজকে জানালে তিনি আসামি রেজাউল ও শিমুলকে শাকিলের মোবাইল ফোন ফেরত দিতে বলে। কিন্তু আসামি রেজাউল মোবাইল ফেরত দিতে রাজি না হওয়ায় ভিকটিম মেহেদী হাসান রাজ আসামি রেজাউল ও শিমুলকে পুলিশের কাছে মাদকসহ ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে আসামি রেজাউল ও শিমুল পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভিকটিমকে ১০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট দেওয়ার কথা বলে শিয়ালকোল ইউনিয়নের আনারস বাগানে নিয়ে যায়। পরে রেজাউল ও শিমুল দুইজন মিলে নেশাজাতীয় দ্রব্য ও ঘুমের ওষুধ সেবন করিয়ে গলায় গামছা বেঁধে তাকে হত্যা করে। পরে শিমুল তার কাছে থাকা একটি ধারালো এন্টিকাটার দিয়ে মেহেদীর গলা কেটে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে আসামিরা ভিকটিমের মরদেহ ঘটনাস্থলে ফেলে ভিকটিমের অটোরিকশা নিয়ে বগুড়া জেলার শেরপুর থানার ধুনট বাজারে ফেলে আসে।
মামলার তদন্তকালে আসামি রেজাউল শেখকে (৩১) সদর থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তিনি সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার খোর্দ্দ শিয়ালকোল এলাকার মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে।
প্রসঙ্গত, নিহত মেহেদী হাসান রাজ (২৪) পেশায় একজন সিএনজি চালক ছিল। গত বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সিএনজিসহ নিজ বাড়ি থেকে বের হয়। পরে মেহেদী বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের লোকজন তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে। নিখোঁজের ৮ দিন পর শিয়ালকোল ইউনিয়নের ফুলবাড়ি আনারস বাগান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে মেহেদীর বাবা সেলিম শেখ বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি সদর থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করে।