দেশের ৩১টি জেলায় আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব মসজিদের উদ্বোধন করেন তিনি।
উদ্বোধন করা মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে: ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও নগরকান্দা, গাজীপুরের কাপাসিয়া, গোপালগঞ্জের সদর উপজেলা, কিশোরগঞ্জের সদর ও কটিয়াদি, মানিকগঞ্জের ঘিওর ও সাটুরিয়া, নরসিংদীর সদর উপজেলা ও মনোহরদি, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ও জেলা সদর, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা, বগুড়ার ধুনট ও নন্দীগ্রাম, নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলা, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা।
এছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলা, পাবনার ভাঙ্গুরা, সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, রংপুরের গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া, ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলা, শেরপুর সদর, পিরোজপুর সদর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর ও কসবা, খাগড়াছড়ির সদর ও মানিকছড়ি, কুমিল্লার চান্দিনা ও চৌদ্দগ্রাম, খুলনার রূপসা, কুষ্টিয়ার খোকশা ও ভেড়ামারা, মেহেরপুর জেলা সদর ও গাংনী, সাতক্ষীরার দেবহাটা, সিলেটের গোয়াইনঘাট, সুনামগঞ্জ জেলা সদর ও জগন্নাথপুর এবং হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধু গড়ার কাজ শুরু করেন। মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে তিনি মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। তার সময়েই ওআইসি ভুক্ত হয় দেশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদে ধর্মের বদনাম হয়; বিষয়টি নতুন প্রজন্মকে বোঝাতে মডেল মসজিদগুলোর মাধ্যমে ইমামরা ভূমিকা রাখতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্মের নামে অধর্ম চর্চা বন্ধ করবে এসব মসজিদ। এছাড়া এগুলো ইসলামের জ্ঞান ও মূল্যবোধ বাড়াতেও কাজ করবে।
বক্তব্যের শুরুতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ার কাজ শুরু করেন বঙ্গবন্ধু। মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে তিনি মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেন। তার সময়েই ওআইসির সদস্য হয় বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুই ইসলামিক ফাউন্ডেশেন ও ইসলামিক বোর্ড গঠন করেন।
বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যে তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা হচ্ছে সেটিও তিনি দেশে নিয়ে আসেন এবং সেখানে জায়গা ঠিক করে দেন।
মসজিদের বয়ানে মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বলার জন্য ইমামদের অনুরোধ জানিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে যাতে আমাদের সন্তানরা না জড়ায় এ জন্য আপনারা এসবের কুফল তুলে ধরবেন। আমরা চাই, ইসলামের সঠিক শিক্ষা সন্তানরা যেন পায়। আমরা চাই, এদেশে প্রতিটি মানুষ যেন নিরাপদে তাদের ধর্ম পালন করতে পারে এটাই ইসলামের শিক্ষা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র করছি, ইসলাম ধর্ম যাতে আরও উন্নতভাবে পালন করতে পারে। ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা যাতে পায়। ইসলামের মূল্যবোধের প্রচার ও প্রসার যেন ঘটে।
ইমাম-মুয়াজ্জিনসহ ধর্ম প্রচারের সরকারি উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যেন সঠিকপথে দেশকে এগিয়ে নিতে পারি, সে চেষ্টা করছি। আওয়ামী লীগ সব সময় ইসলামের খেদমত করে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে যুক্ত হওয়া ঠেকাতে ইমামদের সচেতনতা তৈরির আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ্য, বর্তমান সরকার সারা দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার নির্মাণের প্রকল্প নিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মডেল মসজিদগুলোতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাসহ অজু ও নামাজের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে। এছাড়াও থাকবে হজ গমনে ইচ্ছুকদের জন্য রেজিস্ট্রেশন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র ও ইসলামিক লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, দাফনের আগের আনুষ্ঠানিকতা, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, হিফজখানা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও কুরআন শিক্ষার ব্যবস্থা, ইসলামি সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এবং ইসলামি দাওয়াত, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র এবং মসজিদের সঙ্গে দেশি ও বিদেশি অতিথিদের বোর্ডিং সুবিধা।
এর আগে ২০২১ সালের ১০ জুন সারা দেশে মোট ৫৬৪টির মধ্যে প্রথম ধাপে ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হয়।