রাজধানী ঢাকায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে গরম কাপড়ের চাহিদা। বড় শপিং মল থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকানে সব শ্রেণির ক্রেতাদের ভিড়। তবে, নতুন কাপড়ের দাম বেশি হওয়ায় রাজধানীর ছিন্নমূল মানুষের বেশিরভাগ পুরনো ও তুলনামূলক একটু কম দামী কাপড়ের দোকানের দিকে বেশি ঝুঁকছে।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা গেছে, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, মহাখালী ও বসুন্ধরা সিটির শপিং মলের সামনে ক্রেতাদের বেশ ভিড়।
একাধিক শীতের পোশাক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিশু ও বয়স্কদের শীতের কাপড় বেশি বিক্রি হচ্ছে। এসব কাপড়ের মধ্যে মাফলার, সোয়েটার, হুডি, মাথার টুপি, ফুলহাতা গরম কাপড়ের গেঞ্জি বিক্রি হচ্ছে বেশি।
কারওয়ান বাজারে শীতের কাপড় বিক্রি করছেন মো. হানিফ। তিনি সময় সংবাদকে বলেন, আজ শীত বেশি পড়ায় গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। বিশেষ করে কম আয়ের লোকজন, যেমন রিকশাচালক, নির্মাণশ্রমিকরা অধিক হারে কিনতে আসছেন।
রংপুর থেকে ঢাকায় এসে রিকশা চালাচ্ছেন মো. সেলিমুজ্জামান। তিনি সময় সংবাদকে বলেন, আজকে ঢাকায় শীত বেশি। গাড়ি চালানো যাচ্ছে না। তারপরও উপায় না পেয়ে রিকাশ নিয়ে বের হয়েছি। দৈনিক পরিবারের খরচ ৬০০ টাকা। ইনকাম করতে না পারলে খাব কী? সেজন্য বাধ্য হয়ে বের হতে হচ্ছে।
ফার্মগেটে গরম কাপড় কিনতে আসা মো. সজীব হাসান বলেন, এতদিন ঢাকায় শীত পড়েনি। আজকে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। সকালে অফিস যেতে কষ্ট হয়েছে, সেজন্য গরম কাপড় কিনতে এসেছি।
এদিকে শীত বেশি পড়ায় গরম কাপড়ের দাম বেশি নিচ্ছেন এমন অভিযোগ করে ক্রেতারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা গরম কাপড়ের দাম বেশি নিচ্ছে। শীতের তীব্রতার বৃদ্ধির সঙ্গে তারা (ব্যবসায়ীরা) দাম বেশি নিচ্ছেন।
অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, শীত বেশি পড়ায় গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। এজন্য দাম একটু বেশি।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বলেন, আগামী ২ থেকে ৩ দিন দেশব্যাপী শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা নেই। কিন্তু ময়মনসিংহ বিভাগ ও উত্তরাঞ্চলের ঘন কুয়াশা রয়েছে। বৃষ্টির আশঙ্কা না থাকায় এ কুয়াশা সাতদিন পর্যন্ত থাকতে পারে। এ সময়ে দিনে ও রাতে সমান তাপমাত্রা থাকলেও রাতে বেশি ঠান্ডা অনুভূত হবে। ঢাকায় আগামী ৩ থেকে ৪ দিন স্থিতিশীল অবস্থায় ১৪ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকতে পারে।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এ ছাড়া পরবর্তী তিন দিনের আবহাওয়ায় সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
আবহাওয়ার বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বাড়তি অংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মঙ্গলবার দেশের সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আগের দিন সোমবার (২ জানুয়ারি) দেশের সর্বোচ্চ ২৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় কক্সবাজারের টেকনাফে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।