প্রতিদিনের অতি গুরুত্বপূর্ণ পণ্য কিনতে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন অতি দরিদ্র শ্রেণির মানুষের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় সারা দেশে ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস) পদ্ধতিতে চাল ও আটা বিক্রি হচ্ছে। ওই প্রকল্পের আওতায় শেরপুর পৌর শহরে পাঁচজন ডিলারের মাধ্যমে চলছে এ কার্যক্রম। কিন্তু বরাদ্দের তুলনায় গ্রাহক প্রায় তিন গুণ হওয়ায় তৈরি হয়েছে নতুন ভোগান্তি। গভীর রাত থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকে ফিরে যাচ্ছেন খালি হাতে।
শেরপুরের বিভিন্ন ডিলারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খাদ্য অধিদফতরের বাস্তবায়িত কার্যক্রমের আওতায় প্রতিটি ওয়ার্ডে সপ্তাহে দুদিন ভর্তুকি মূল্যে জনপ্রতি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৩০ টাকা দরে ৫ কেজি চাল এবং ২০ টাকা দরে ৫ কেজি আটা। আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে এসব পণ্য বিক্রি করা হয়। প্রতি বিক্রয় দিবসে একজন ডিলার এক টন চাল ও এক টন আটা বিক্রির জন্য বরাদ্দ পেয়ে থাকেন। এসব পণ্য তারা দুইশ মানুষের মাঝে সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করেন।
একজন ডিলার জানান, আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে বিক্রি হওয়ায় শীত উপেক্ষা করে ভোর থেকে ডিলারের দোকানের সামনে অন্তত ৫০০ নারী-পুরুষ ভিড় জমান। অথচ ডিলারদের বরাদ্দ থাকে মাত্র দুইশ জনের জন্য। ফলে অনেকেই পণ্য না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে যান। সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে সকালে দোকান খোলার অন্তত ৫-৬ ঘণ্টা আগ থেকে লোকজন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপর এক ডিলার সময় সংবাদকে বলেন, ‘আগে আমরা চাল-আটা নিয়ে বিক্রির জন্য অপেক্ষা করতাম। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সম্প্রতি শহরের আশপাশের ইউনিয়ন থেকেও লোকজন গভীর রাত থেকে লাইনে অপেক্ষা করেন। রাতভর অপেক্ষা করেও অনেকে ফিরছেন খালি হাতে। তবে সরকার যদি প্রতি বিক্রি দিবসে চাল-আটার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, তবে এ সংকট কমানো সম্ভব হবে।
চাল-আট কিনতে আসা ক্রেতাদের অভিযোগ, ‘গভীর রাত থেকে অপেক্ষা করেও বেশির ভাগ সময় খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। সরকার যদি বরাদ্দ বাড়ায়, আমরা দু-মুঠো খেয়ে বাঁচতে পারি।’
শেরপুর খাদ্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. লুৎফর রহমান বলেন, সরকার থেকে যে পরিমাণ খাদ্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, আমরা তা সঠিকভাবে বিতরণ করার চেষ্টা করছি। বর্তমানে আটার জন্য ভোক্তার প্রচণ্ড চাপ লক্ষ করা যাচ্ছে এবং আমরা তা মনিটরিং করছি যে, বরাদ্দের পণ্য সঠিক পরিমাণে ভোক্তা পাচ্ছে কি না।
এ জাতীয় আরো খবর..