১৯৭১ সালে যারা দেশকে ভালোবেসে নিজের জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন, সেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেরই বহু বছর ঝুপড়িঘরে অতিকষ্টে দিন কেটেছে। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে কেউ কেউ ভেবেছিলেন, হয়তো এভাবেই জীবন কেটে গেল। কিন্তু স্বপ্নের মতোই এখন পাল্টে গেছে সেই চিত্র। সারা দেশের মতো শেরপুরেও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসনের জন্য দেয়া হয়েছে একটি করে বাড়ি। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ‘বীর নিবাস’ পেয়ে ভাগ্য বদলেছে জাতীয় বীরদের।
দুই দফায় সদর উপজেলায় ২৮টি, শ্রীবরদীতে ৪৯টি, ঝিনাইগাতীতে ২৩টি, নালিতাবাড়িতে ৫১টি ও নকলা উপজেলায় ৪৫টি বাড়ি বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। চার শতক জমির ওপর ৭৫০ বর্গফুটের প্রতিটি পাকা বাড়িতে রয়েছে দুটি বেড রুম, একটি ড্রইং রুম, একটি রান্না ঘর ও দুটি বাথরুম। স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে এমন সম্মান আর উপহার পেয়ে খুশি জাতীয় বীর ও তাদের স্বজনরা।
মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের স্বজনরা জানান, একটা সময় ঝুপড়িঘরে রাতে ঘুমাতে পারেননি শান্তিমতো। বর্তমানে পাল্টে গেছে সেই চিত্র। এখন নিরাপদে ঘুমাতে পারেন তারা।
সরকারের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল ইসলাম হিরু। তিনি বলেন, সরকার যে ঘরগুলো দিচ্ছে তা অবশ্যই ভালো কাজ। এতে করে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা তাদের মাথাগোঁজার ঠাঁই পাবেন এবং পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে ও শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন।
‘বীর নিবাস’ পেয়ে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনমান উন্নত হবে বলে জানালেন শেরপুরের জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার। তিনি বলেন, ‘জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে যাওয়া বীর যোদ্ধাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে শেরপুর জেলার অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেয়া ঘর পেয়ে তাদের জীবনমান বদলে যাবে।’
অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় জেলায় মোট ১৯৬টি বাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৯৭টি বাড়ি উপকারভোগীদের কাছে হস্তান্তর ও ৯৮টি বাড়ির নির্মাণকাজ চলমান আছে। আর প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা।
এ জাতীয় আরো খবর..