মালবাহী ও যাত্রীবাহী – সব ধরনের নৌযান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণসহ ১০ দফা দাবিতে সারা দেশে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন নৌযান শ্রমিকরা। রোববার (২৭ নভেম্বর) ভোর থেকে দেশের সবকটি নৌবন্দরে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে এ কর্মসূচি চলছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। এমনকি বন্দরের পাশে থাকা ১৭টি ঘাটে লাইটার জাহাজ থেকে পণ্য উঠা-নামার কাজও বন্ধ।
চট্টগ্রাম বন্দরের শ্রমিক নেতারা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। শনিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে এখন পর্যন্ত কোনো পণ্য খালাস বা উঠা-নামার কোনো কাজই করেননি তারা।
শ্রমিকদের ১০ দফা দাবি হলো: নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দান, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদানসহ শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, খাদ্য ভাতা ও সমুদ্র ভাতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা, দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা, চট্টগ্রাম থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহে দেশের স্বার্থবিরোধী অপরিণামদর্শী প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা, বালুবাহী বাল্কহেড ও ড্রেজারের রাত্রিকালীন চলাচলের ওপর ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিলকরণ, নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস দেয়াসহ ভারতীয় সীমানায় সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করা, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করে সকল লাইটার জাহাজকে সিরিয়াল মোতাবেক চলাচলে বাধ্য করা, চরপাড়া ঘাটে ইজারা বাতিল ও নৌ-পরিবহন অধিদফতরের সব ধরনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করা।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) পূর্বনির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হওয়ায় রোববার প্রথম প্রহর থেকে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করে নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের নেতাকর্মীরা।
শনিবার বেলা ১১টায় বিভাগীয় নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের আয়োজনে বরিশাল নদীবন্দর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে নগরের অশ্বিনী কুমার টাউন হলের সামনে বিক্ষোভ করে। পরে পুনরায় বিক্ষোভ মিছিল করে নৌবন্দরে যায়।
সমাবেশে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক একে আজাদ, শ্রমিক জোটের সমন্বয়কারী মোজাম্মেল সিকদার ও হারুনুর রশিদ সিকদারসহ অন্যরা।
এর আগে, একই দাবিতে বিক্ষোভ করে সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন নৌযান শ্রমিকরা।