1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
বাংলাদেশ-মিয়ানমার পতাকা বৈঠক শুরু | Bastob Chitro24
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৫ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ-মিয়ানমার পতাকা বৈঠক শুরু

ঢাকা অফিস
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২২

সীমান্ত উত্তেজনার ঘটনায় অবশেষে পতাকা বৈঠক শুরু বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ও মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির। বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে এ বৈঠক হচ্ছে। রোববার (২৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টায় এ বৈঠক শুরু হয়।

এর আগে সকাল ৯টার দিকে টেকনাফ এসে পৌঁছায় মিয়ানমারের ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল।  এ সময় টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাটে তাদের স্বাগতম জানান। পরে তাদের শাহপরীরদ্বীপ বিওপিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পতাকা বৈঠকে মিলিত হয় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী।


এর আগে সকাল সাড়ে ৮ টায় বিজিপির দুইটি স্পীডবোট গিয়ে জলসীমা থেকে জান্তা সরকারের প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন।

বৈঠকে চলমান সীমান্ত উত্তেজনাই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে বলে জানিয়েছে বিজিবি। তবে মাদক চোরাচালান, অনুপ্রবেশ সহ নানা বিষয়েও আলোচনা হবে।

মিয়ানমার ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মিয়ানমার মংডুর ১ নম্বর বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্রাঞ্চের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল কাও না ইয়ান শো আর বাংলাদেশের ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার।
তবে বৈঠক নয়, সীমান্তে কোনো রকম উত্তেজনা চান না সীমান্তের বাসিন্দারা। আর নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই রাষ্ট্রের জন্য ভুল-বোঝাবুঝি হয় এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার বার্তা দেয়াই হবে পতাকা বৈঠকের মূল উদ্দেশ্যে।

সীমান্তের কাঁটাতার, দীর্ঘ এই কাঁটাতারের মাধ্যমে আলাদা হয়েছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। নিশ্চিত করেছে আলাদা দুটি রাষ্ট্রের পরিচয়।
সীমান্তে বাংলাদেশ অংশে সবসময় বিরাজ করে শান্তিপূর্ণ অবস্থা। কিন্তু সীমান্তে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে গত ৩ মাস ধরে চলছে গোলাগুলি, গোলাবর্ষণ ও যুদ্ধবিমান বা হেলিকপ্টার থেকে গোলা নিক্ষেপ। সংঘর্ষ মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলছেও কয়েক দফায় তাদের ছোড়া মর্টার শেল ও গুলি এসেছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। এর মধ্যে মর্টার শেল বিস্ফোরিত হয়ে শূন্যরেখায় মারা যায় এক রোহিঙ্গা। আর মাইন বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় এক রোহিঙ্গা কিশোরের।

সীমান্তের এমন পরিস্থিতিতে বারবার কড়া প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি উত্তেজনা কমাতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি। পতাকা বৈঠকের প্রস্তাব দিলে অবশেষে দীর্ঘ ৩ মাস পর ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে সম্মত হয় মিয়ানমার।

বিজিবির টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার জানান, রোববার সকালে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্য বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। উভয়পক্ষের ব্যাটালিয়ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। আলোচনায় বসতে একাধিকবার বিজিপির কাছে চিঠি দেওয়া হয়। পরে তারা বৈঠক করতে সম্মতি দেয়। বিকেলে ব্যাটালিয়ন সদরদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানাবেন বিজিবি রামু সেক্টর এর সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ আজিজুর রউফ।
তবে সীমান্তে গোলাগুলি, গোলাবর্ষণ বা উত্তেজনা চান না সীমান্তের বাসিন্দারা। স্বস্তি ফেরাতে বৈঠকে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের।

উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী বলেন, সীমান্তের খুব কাছাকাছি মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলির কারণে সীমান্তের বাসিন্দাদের নির্ঘুম রাত কাটাতে। মিয়ানমারের কারণে মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। তাই মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় যেন তাদের মধ্যে থাকে। এটার জন্য যাতে বাংলাদেশ সীমান্তের বাসিন্দার কোনো ক্ষতি না হয় এ ব্যাপারে ব্যবস্থার নেয়ার জন্য পতাকা বৈঠকে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।

আর নিরাপত্তা বিশ্লেষক কমোডর (অব.) নুরুল আবছার বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার নিকটবর্তী দুটি দেশ। এখন পর্যন্ত দুদেশের মধ্যে সম্পর্কের কোনো অবনতি হয়নি। তাই দুই রাষ্ট্রের জন্য ভুল-বোঝাবুঝি হয় এমন কর্মকাণ্ড থেকে মিয়ানমারকে বিরত থাকার বার্তা দেয়াই হবে পতাকা বৈঠকের মূল উদ্দেশ্যে।

বিজিবি পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলা সংঘর্ষ যেন বাংলাদেশকে প্রভাবিত করতে না পারে, সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ না ঘটে ও দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সুসম্পর্ক উন্নয়নে জোর দেয়া হবে। এর পাশাপাশি সীমান্তের অন্যান্য ইস্যুসমূহ নিয়েও আলোচনা করা হবে।

গত আগস্টে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে শুরু হয় ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টারশেল বিস্ফোরণ। ২৮ আগস্ট মিয়ানমারের ছোড়া দুটি শেল এসে পড়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে। সীমান্তে গোলাগুলিতে হতাহতের ঘটনায় একাধিকবার মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ।

এ অবস্থায় গত ১০ অক্টোবর পরিস্থিতি দেখতে সীমান্ত পরিদর্শনে আসেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ। তিনি জানান, প্রতিবাদ জানিয়ে বিজিপির কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি