নড়াইলে আমন ধানের কাঙ্ক্ষিত ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। মোটা ধান প্রতি মন ১২০০ এবং সরু ধান মানভেদে ১৪০০-১৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। ভরা মৌসুমে ধানের নিম্নমুখী বাজার দরের চিরাচরিত রীতি পাল্টে এবার ধানের উচ্চ মূল্যে কৃষকের চোখেমুখে প্রশান্তি এনে দিয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, ধানের ভালো ফলন ও কাঙ্ক্ষিত দাম অগামীতে ধান চাষের সম্প্রসারণে ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে।
পাকা ধানের আশাভরা সোনালি হাতছানি এখন নড়াইলের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে। হেমন্তের শিশির ভেজা ভোরের বাতাসে মিশে থাকা নতুন ধানের মৌ মৌ সুবাসে মাতোয়ারা চারদিক। মাঠে মাঠে আশার ফলস ঘরে তুলতে কৃষাণ-কৃষাণীর ব্যস্ততার নয়নাভিরাম নানা ছবি।
সংশ্লিষ্টরা বলছে, প্রথম দিকে অনাবৃষ্টির ফলে সেচ সংকটে আমন আবাদ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিলেও পরে দফায় দফায় বৃষ্টিপাতে ধানের বাম্পার ফলনে চাষিরা আশান্বিত হয়ে ওঠে। নতুন ধানে সয়লাব নড়াইলের হাট-বাজার। জেলার সবচেয়ে বড় ধানের মোকাম তুলারামপুর, মাইজপাড়াসহ বিভিন্ন হাটে মোটা আমনের মধ্যে স্থানীয়জাতের গুটিস্বর্ণা, মাঝারি ধরনের হাইব্রিড ধানীগোল্ড, বিনা-৭ এবং সরু জাতের স্থানীয় হাবুধান, ব্রি-৭৫, ব্রি-৭৮ এছাড়া অতি সম্প্রতি কাটা শেষ হওয়া আউশধানের মধ্যে স্থানীয় মোটা জাতের রাতুল, ইরিভোজন ধান অধিক পরিমাণে বাজারে উঠছে। প্রতিবারই ধান কাটার ভরা মৌসুমে ধানের বাজার পড়ে গেলেও এবার ব্যতিক্রম দৃশ্য। ধানের দাম না কমায় কৃষকের চোখেমুখে খুশির ঝিলিক বইছে। এদিকে ধানের উচ্চ মূল্যের চলমান ধারা বজায় থাকবে এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন তারা।
কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক তাদের পাশে আছে জানিয়ে নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, ‘হাইব্রিড ধানের আবাদ বৃদ্ধির পাশাপশি চাষের অনুকূল আবহাওয়া এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমানে বাজারে ধানের ভালো দাম আসন্ন বোরো মৌসুমে ধানের আবাস সম্প্রসারণে চাষিদের আগ্রহী করবে।’
তিনি আরও জানান, এ বছর জেলায় ৪২ হাজার ২৫ হেক্টর লক্ষমাত্রার বিপরীতে অতিরিক্ত আরও ৬৫ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে, যার ২৬ ভাগ হাইব্রিড। এ থেকে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৪৭০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) পর্যন্ত জেলার ৫৮ ভাগ জমির আমনধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে।
এ জাতীয় আরো খবর..