রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে শিশু মারুফা জাহান মাইশার (৬) ভুল চিকিৎসায় মারা যাওয়ার ঘটনায় মামলা করেছে নিহত শিশুর পরিবার।
আজ মঙ্গলবার রাতে ডিএমপির রুপনাগর থানায় মামলাটি করেন নিহত মাইশার বাবা মো. মোজ্জাফর হোসেন। মামলায় জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক (সার্জন) আহসান হাবীব, ডাক্তার শরিফুল ইসলাম ও ডাক্তার রনিকে অভিযুক্ত করা হয়। এছাড়াও আলম মেমোরিয়াল হাসপাতাল অজ্ঞাত মালিক কর্তৃপক্ষকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান সরদার। তিনি বলেন, রূপনগরের আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে শিশু মাইশার মৃত্যুর ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে একটি অবহেলা জনিত মৃত্যু ধারায় মামলা হয়েছে। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন দাসকে।
নিহত মাইশার বাবা মামলায় অভিযোগ করেছেন, আগুনে পুড়ে যাওয়ায় শিশু মাইশার হাত বাঁকা হয়ে যায়। এই সমস্যা নিয়ে গত ২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় মিরপুর-১১ নম্বরের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসক আহসান হাবীবের শরণাপন্ন তারা। শিশু মাইশার হাত দেখে হাবীব তাঁদের জানান, অপারেশন করলে মাইশার হাত স্বাভাবিক হয়ে যাবে। ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে অপারেশনের খরচ বেশি তবে তার মালিকানাধীন হাসপাতাল আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে অপারেশন করালে ৭০ হাজার টাকা লাগবে।
মামলা আরও বলা হয়, অস্ত্রোপচারের আগেই ৫০ হাজার টাকা নেন হাবীব। সেই অনুযায়ী গত ৩০ নভেম্বর সকালে আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে মাইশার হাতে অস্ত্রোপচার হয়। প্রথমে অপারেশন সাকসেসফুল বলে পরিবারের সদস্যদের আশ্বস্ত করে। কিন্তু ঘণ্টা দেড়েক পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, শিশুটির অবস্থা খারাপ, তাকে আইসিইউ সাপোর্ট দেওয়ার জন্য মিরপুর-১ এর মাজার রোডের গ্লোবাল স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিতে হবে। ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা জানান আগেই মৃত্যু হয়েছে মাইশার। আমার মেয়ে মারা গেছে এটা জানানোর পরে আলম মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে আমাদের সঙ্গে আসা নার্স অপারেশনের খরচ বাবদ নেওয়া ৫০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দেন। মরদেহ বাড়িতে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সও ঠিক করে দেয়। দাফনের জন্য গোসল করাতে গিয়ে নারীরা দেখতে পান, শিশু মাইশার নাভির নিচে পুরো পেটে সেলাই করা। বিষয়টি ডাক্তার হাবীবকে জানালে নিজের দায় চাপান ডাক্তার শরিফুল ইসলাম ও ডাক্তার রনির ওপর।
মামলায় নিহতের বাবা আরও অভিযোগ করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অসৎ উদ্দেশ্যে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে।