জামালপুর সদর উপজেলার বটতলা উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শহীদ মিনারের বেদিতে মঞ্চ বানিয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেখানে সংসদ সদস্যসহ অতিথিরা অনুষ্ঠানের শেষ পর্যন্ত জুতা পায়ে অবস্থান করেছে।
দুপুর ১টার দিকে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সাংসদ মো. মোজাফফর হোসেনসহ অতিথিরা একে একে সবাই জুতা পায়ে মঞ্চে উঠে চেয়ারে বসেন। বেদিতে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যান্য লোকজনকেও জুতা পায়ে দেখা যায়। অনুষ্ঠানটি দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে শেষ হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক ও বটতলা উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো.শফিকুল আলম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেন।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামালপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল জলিল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এ.কে আজাদ বাদল ও সদস্য আবুল খায়ের খোকা মাস্টার, বাঁশচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল আলীম, সহসভাপতি মাহামুদুল হাসান বাচ্চু, শাহজাহান আলী, সরোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ প্রমুখ।
এ প্রসঙ্গে জামালপুরের ভাষা ও মুক্তিসংগ্রাম গবেষণা কেন্দ্রের সদস্য জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ২১ ফেব্রুয়ারিতে শদীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ছাড়া অন্য কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। জুতা নিয়ে শহীদ মিনারে পদচারণা করা ভাষা শহীদদের প্রতি অবমাননা ও আইন অমান্য করার সামিল। যারা এ ধরনের আচরণ করবে, তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া উচিৎ।
জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক ও বটতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শফিকুল আলম বলেন, ‘অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম। স্কুল কর্তৃপক্ষ সেখানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। আর সবাই তো সেখানে জুতা পায়ে দিয়ে উঠেছে, তাই আমিও উঠেছি।
বটতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদা বলেন, ‘প্রত্যেক বছরই সেখানে অনুষ্ঠান করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় সেখানে করা হয়েছে। প্রধান অতিথিরাই যদি উঠেন, তাহলে আর কী!’
জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘সেটা যে শহীদ মিনার আমি বুঝতেই পারিনি। আমি ভেবেছি, সেটা একটি ভাঙা মঞ্চ। কেউ যদি আমাকে বলত সেটা শহীদ মিনার, তাহলে আমি জুতা নিয়ে উঠতাম না। প্রয়োজনে আমি সেখান থেকে নেমে যেতাম।