মাধ্যমিকের পাঠ্যবইয়ে বঙ্গবন্ধুর বাবাকে পরিচয় করিয়ে দিতে ব্যবহার করা হয়েছে কেরানি শব্দ। লেখা হয়েছে তার খণ্ডিত নাম। আর ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর গ্রেফতার হওয়াকে বলা হয়েছে গ্রেফতার বরণ। এ ছাড়া বানান ও তথ্যগত ভুলে ভরা ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বেশ কয়েকটি বই। ইতিহাসবিদরা বলছেন, এ ধরনের ভুল তথ্য ইতিহাস বিকৃতকারীদের হাতিয়ার হবে।
বছরের প্রথম দিন কোটি কোটি শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে বিশ্বে অনন্য নজির স্থাপন করেছে বাংলাদেশ।
প্রতিবছর পাঠ্যপুস্তকের ভুল নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হলেও এবার তা বহুগুণ। সবশেষ ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ৭ নম্বর পৃষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাবা শেখ লুৎফর রহমানকে পরিচয় করিয়ে দিতে কেরানি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি ছিলেন আদালতের সেরেস্তাদার। নামের আগে লেখা হয়নি শেখ।
৭১ পৃষ্ঠায় ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে নেই বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা। বাঙালি শব্দ লেখা হয়েছে দুভাবে। ৭৭ পৃষ্ঠায় ভুলভাবে লেখা হয়েছে কর্নেল ও সেনাবাহিনী বানান। বলা হয়েছে, কর্নেল ওসমানী জেনারেল পদে থেকে প্রধান সেনাপতি হন। প্রকৃতপক্ষে তিনি কর্নেল পদ থেকেই প্রধান সেনাপতি হন।
সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার বরণ করেছিলেন। মূলত তাকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গ্রেফতার করেছিল। ইতিহাসবিদরা বলছেন, পাঠ্যপুস্তকের এসব ভুল তথ্য নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার পাশাপাশি ইতিহাস বিকৃতকারীদের হাতিয়ার হবে।
এ বিষয়ে ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মেসবাহ কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অপপ্রচারের হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে এটা। সে ক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্ম ভুল বার্তা পেতে পারে।
তবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘পাঠ্যপুস্তকে থাকা সব ভুল পর্যায়ক্রমে সংশোধন করা হবে। আমাদের যত ভুলভ্রান্তি বা ঘাটতি আছে, সব কাটিয়ে উঠতে পারব বলে আশা করছি।’
এর আগেও নবম-দশম শ্রেণির বেশ কয়েকটি পাঠ্যবইয়ে নানা ভুল ধরা পড়ে। আদালত থেকে তলব করা হয় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে।