লক খুলে একটি প্রাইভেটকার চুরি করতে সময় লাগে মাত্র দশ সেকেন্ড! তাও আবার দিনেদুপুরে। কোনো আধুনিক প্রযুক্তি নয়; একটি মাস্টার কিই (চাবি) যথেষ্ট। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে পার্কিং করা গাড়ি মুহূর্তেই হাওয়া করে দিচ্ছে সংঘবদ্ধ চোরচক্র।
গাড়ি চুরির কয়েকটি অভিযোগে মামলার পর চারজনের একটি চক্রকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। পুলিশ বলছে, আট বছরে দুই শতাধিক গাড়ি চুরি করেছে চক্রটি।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানী ঢাকা, ময়মনসিংহ, নরসিংদী ও গাজীপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে এ চোরচক্রের চার সক্রিয় সদস্যকে চারটি প্রাইভেটকারসহ গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ।
গ্রেফতার আসামিরা হলেন: পারভেজ, কামাল হোসেন গাজী, বাবু মিয়া ওরফে নাজমুল হাসান ও সুমন। এ সময় তাদের কাছ থেকে চারটি চোরাই প্রাইভেটকার, পাঁচটি চোরাই কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও দুটি মাস্টার কি উদ্ধার করা হয়।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ১৩ সেপ্টেম্বর, সকাল ৯টা। অন্যান্য দিনের মতোই তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার একটি সড়কে গাড়ি পার্কিং করে অফিসে ঢোকেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সাইদুল হাসান। টি-শার্ট পরা এক যুবক গাড়ির কাছে এসে দাঁড়ান। ফোনে কথা বলার ভঙ্গি করে আশপাশের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন। আশপাশে কারোর উপস্থিতি না দেখে টার্গেট প্রাইভেটকারটির দরজা খুলে ভেতরে ঢোকেন। সঙ্গে থাকা মাস্টার কি দিয়ে দেয়া হয় স্টার্ট। গাড়ি নিয়ে দেন চম্পট।
গাড়ি চুরির মামলায় চারজনকে গ্রেফতারের পর জানা যায়, এরা একসময় ছিলেন পরিবহন শ্রমিক। গ্যারেজ মালিকদের প্রলোভনে এ পথে নামেন তারা। কারওয়ান বাজার ও উত্তরা এলাকার নির্দিষ্ট কিছু জায়গা থেকে মাস্টার কি সংগ্রহ করেন। মূলত পুরনো মডেলের প্রাইভেটকার তাদের টার্গেট।
গোয়েন্দারা বলছেন, চুরির পর গ্যারেজে দালাল বা সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি করা হয় গাড়ি। তারা আবার দোকানে দোকানে পার্টস আলাদা করে বিক্রি করেন। শুধু তাই নয়, ইঞ্জিন আর রেজিস্ট্রেশন নম্বরের ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করেও বিক্রি করা হয় চোরাই গাড়ি।
ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, একটা গ্যারেজের মালিকের সঙ্গে তারা চুক্তিবদ্ধ হন। বলেন, ‘আমরা ব্যাটারি, গাড়ি ও মোটরসাইকেল চুরি করব। আপনারা বিক্রির ব্যবস্থা করবেন।’
তেজগাঁওয়ে চুরি হওয়া গাড়ি ছাড়াও ধানমন্ডি ও গাজীপুর এলাকা থেকে এ চক্রের চুরি করা প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়েছে।
এ জাতীয় আরো খবর..