করোনায় আক্রান্ত হয়ে চীনে এক সপ্তাহে ৬৩ হাজারের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বেইজিংয়ের বরাতে এমনটাই জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। মহামারি শুরু হওয়ার পর এত রোগী একসঙ্গে ভর্তি হওয়ার খবর এটাই প্রথম বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) সিএনএনের প্রতিবেদনে উঠে আসে এ তথ্য।
২০১৯ সালে চীন থেকেই ছড়িয়ে পড়ে করোনা সংক্রমণ। এরপর থেকে দেশটিতে বাড়তে থাকে শনাক্তের হার ও মৃত্যু। ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও আবারও গেল বছরের শেষদিকে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে সংক্রমণ। আর এবার ঘটেছে আরও ভয়াবহ ঘটনা। ধারণা করা হচ্ছে, করোনা বিধি নিষেধ শিথিল হওয়া, চান্দ্রবর্ষ উপলক্ষে চীনা নাগরিকদের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের কারণে দিনে দিনে সংক্রমণের মাত্রা বাড়ছে।
একজন চিকিৎসক বলেন, কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে যেসব রোগী ভর্তি হচ্ছেন তাদের নিয়মিত সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে। চীনে বেশ কয়েকটি প্রদেশে পরপর তিনটি ঢেউ আঘাত হেনেছে। যার কারণে অনেকে জ্বরে ভুগে হাসপাতাগুলোকে ভর্তি হয়েছেন। অনেকেই আবার মারাত্মক উপসর্গ নিয়ে জরুরি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। সবাইকে সুশৃঙ্খলভাবে চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কোভিড প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় চীনে তিন বছর ধরে লকডাউনসহ নানা বিধিনিষেধ, নিয়মিত শনাক্তকরণ পরীক্ষার পাশাপাশি কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বজায় রেখেছিল শি জিন পিং প্রশাসন। তবে গেল বছর তীব্র বিক্ষোভের মুখে ‘জিরো কোভিড’ নীতি বাতিলের ঘোষণা দিয়ে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে চীন সরকার। খুলে দেয়া হয় সীমান্ত। শিথিল করা হয় ভ্রমণ সংক্রান্ত জটিলতা।
তবে যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, ইতালিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে চীনা পর্যটকদের কোভিড সনদ দেখানোর বাধ্যবাধকতা জারি করা হয়েছে।
এদিকে চীনে জিরো কোভিড নীতি বন্ধ করে দেয়ার পর মৃত্যুর সংখ্যা ব্যাপকহারে বেড়ে গেছে। করোনা এবং করোনা সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হয়ে এক মাসে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে ৫৯ হাজার ৯৩৮ জন মারা গেছেন।
এছাড়া চীনে করোনা পরিস্থিতির আরও বিস্তারিত তথ্য চেয়ে দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যুর খবর বেইজিং সঠিক সময়ে প্রকাশে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।