1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
চীন-ভারতের শত বছরের পুরনো ক্ষত | Bastob Chitro24
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৬ অপরাহ্ন

চীন-ভারতের শত বছরের পুরনো ক্ষত

ঢাকা অফিস
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৩

ভারত-চীনের সীমান্ত দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। এর শেকড় গাড়া হয় ভারতে ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনামলে। আফগানিস্তানকে ঘিরে যখন ব্রিটিশ সাম্রাজ্য এবং রুশ সাম্রাজ্যের মধ্যে ‘গ্রেট গেম’ শুরু হয় তখন ভারতের ব্রিটিশ শাসকেরা চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত নির্ধারণ করার বিষয়টি প্রথম আমলে নেন।

সে সময় অর্থাৎ ১৮৬৫ সাল থেকে শুরু করে ১৮৯৯ সাল পর্যন্ত বেশ কয়েকবার ব্রিটিশ ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সীমান্ত নির্ধারণের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনোটাই টেকেনি। পরে ব্রিটিশ জরিপবিদ জর্জ ম্যাককার্টনি ও ক্লড ম্যাকডোনাল্ডের নেতৃত্বে ভারত-চীনের সীমারেখা চিহ্নিত করা হলেও চীনের তৎকালীন শাসক মাঞ্চু রাজবংশ সেটাকে কখনোই মেনে নেননি।

১৯১৪ সালে গিয়ে সংকট আরও ঘণীভূত হয়। তিব্বতের অবস্থান কী হবে এবং চীন-ভারতের মধ্যে সীমান্ত নির্ধারণ কীভাবে হবে তা নিয়ে আলোচনা করতে সে সময় ভারতের সিমলায় ব্রিটিশ ভারত, চীন এবং তিব্বতের নেতারা এক বৈঠকে মিলিত হন। সীমান্ত নির্ধারণের আলাপ শুরু হওয়ার আগেই তিব্বতের স্বায়ত্তশাসনের প্রশ্নে ভারত-চীনের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হয় এবং আলোচনা ভেস্তে যায়।

সে সময় চীনের সঙ্গে না হলেও তিব্বতের সঙ্গে সীমান্ত নির্দিষ্ট করে চুক্তি করে ব্রিটিশ ভারতের কর্তৃপক্ষ। ইতিহাসে সেটিই ‘ম্যাকমোহন লাইন’ নামে পরিচিত। ব্রিটিশ কর্মকর্তা হেনরি ম্যাকমোহন এই সীমান্ত চিহ্নিতকরণের কাজে  জড়িত ছিলেন বলে এর নামকরণ করা হয় ম্যাকমোহন লাইন।

এভাবেই চলছিল। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মধ্যে ১৯১৭ সালে রাশিয়ায় জার সাম্রাজ্যের পতন হলে ভারতে ব্রিটিশরা কিঞ্চিত স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলা শুরু করে। রুশ আক্রমণের ভয় অনেকটাই কমে আসতে থাকে। তবে প্রথম মহাযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ব্রিটিশরা ভারতে তীব্র আন্দোলনের মুখোমুখি হতে শুরু করে। ক্রমেই বাড়তে থাকে স্বাধীনতার দাবি। এ ছাড়া বিশ্বযুদ্ধের ব্যয়ের কারণে নিজ দেশেও জনগণের অসন্তোষের মুখে পড়ে ব্রিটিশ সরকার। এসব কারণে তারা চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত নির্দিষ্ট করার বিষয়ে মনোযোগী হতে পারেনি। এ অবস্থায় চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত নিয়ে কোনো সমঝোতাও হয়নি। এরই মধ্যে ১৯৪৭ সালের আগস্টে ব্রিটিশরা ভারত ছেড়ে চলে যায়। শুরু হয় ভারত-চীন সীমান্ত দ্বন্দ্বের নতুন অধ্যায়।

চীন ও ভারতের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ঐকমত্য না হলেও এখন পর্যন্ত দুটি দেশই লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বা এলওসি এবং ম্যাকমোহন লাইন বরাবর দাঁড়িয়ে রয়েছে। তবে চীন কখনোই এই দুই সীমান্তকে মেনে নেয়নি। চীনের দাবি অরুণাচল প্রদেশ তাদের। ভারতেরও দাবি, লাদাখ সংলগ্ন আকসাই চীন নামে যে ভূখণ্ড দখল করে রেখেছে তা তাদের।

বিশ্ব অর্থনীতি এবং রাজনীতিতে বর্তমানে অন্যতম দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় চীন-ভারত। বিশ্বের ৮০০ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ৩০০ কোটি মানুষের বসবাস এই দুই দেশে। অর্থনীতি তো বটেই ভূ-রাজনীতির ক্ষেত্রেও এই দুই প্রতিবেশী দেশ এখন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। বিআরআইসিএস, সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক ফোরামে চীন-ভারত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করলেও সীমান্তে দুই দেশের সেনারা প্রায়ই দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ছে। গোলাগুলি তো বটেই, সরাসরি হাতাহাতিতেও জড়িয়ে পড়ছে তারা। এই অবস্থা আর যাই হোক, দুই দেশের নীতি নির্ধারকদের মনে প্রতিবেশী সম্পর্কে কখনোই ভালো বার্তা দেবে না।

১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার ২ বছর পর মাও সে তুংয়ের নেতৃত্বে চীনের নয়াযাত্রা শুরু হয়। দুই দেশেরই নতুন যাত্রা শুরু হলেও পুরনো সমস্যা অর্থাৎ দুই দেশের মধ্যকার তিন হাজার কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ সীমান্ত নিয়ে কোনো ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। ১৯৫০-এর দশকজুড়ে ভারত-চীনের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। কারণ চীনের দাবি তিব্বতের কোনো কর্তৃত্ব নেই যে, তারা ভারতের সঙ্গে সীমান্ত নির্ধারণ বিষয়ে চুক্তি করবে। এই সময়ের মধ্যে বেশ কয়েকদফা শান্তিপূর্ণভাবে সীমান্ত সংকট নিরসনের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।

এরই মধ্যে ভারত সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় জীবনযাত্রার মান বাড়াতে রাস্তাঘাট এবং অবকাঠামো নির্মাণ শুর করে চীন। তাদের এই অবস্থান ভালোভাবে নেয়নি দিল্লি। এর বাইরেও ভারত এই সময়টায় এসে সোভিয়েত বলয় থেকে বের হয়ে ক্রমেই পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক ভালো করতে শুরু করে এবং পশ্চিমারাও আশঙ্কা করতে থাকে যে চীনে মাওবাদের উত্থান ভারতেও প্রভাব ফেলতে পারে। এই আশঙ্কা থেকে পশ্চিমারা ভারতকে উসকে দিতে থাকে নীরবে।

এরই ধারাবাহিকতায় চীন ১৯৬২ সালে ভারতের ভূখণ্ড অরুণাচলের অনেক ভেতরে প্রবেশ করে হামলা চালায়। ওই বছরের অক্টোবরে বিশ্ব যখন স্নায়ুযুদ্ধের টানটান উত্তেজনায় নিমগ্ন, যে সময়টাতে স্নায়ুযুদ্ধের দুই প্রবল প্রতিপক্ষ কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকট নিয়ে ব্যস্ত, তখন চীন-ভারতে আক্রমণ করবে এমনটা কেউ ভাবতে পারেনি।

এ হামলা চালানোর পেছনে চীনের দাবি ছিল, অরুণাচল তাদের এলাকা। সে সময় চীন অরুণাচলের এতটাই ভেতরে চলে গিয়েছিল যে, বেশ কয়েকটি শহরসহ ভারতের ৩৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা দখল করে নিয়েছিল। পরে অবশ্য চীনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট চৌ এনলাই একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন এবং জানান, চীনা সেনার দখলকৃত এলাকা ফিরিয়ে দিয়ে ভারতের দাবি করা লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে ফিরে যাবে। সেই যুদ্ধে ভারতের প্রায় এক হাজার সেনা নিহত হন এবং প্রায় তিন হাজার সেনাকে বন্দি করে নিয়ে গিয়েছিল চীনা সেনারা। বিপরীতে চীনেরও প্রায় ৮০০ সেনা নিহত হয়েছিল।

এর মাত্র বছর পাঁচেক পর ১৯৬৭ সালের অক্টোবরে চীন-ভারত আবারও মুখোমুখি হয় রণাঙ্গনে। এবার রণাঙ্গন হলো তিব্বত এবং সিকিমের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনকারী গিরিপথ নাথু লা পাস এবং চোল পাস। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৮ হাজার ফুট উঁচু এই গুরুত্বপূর্ণ দুই পয়েন্টে ভারতীয় সেনারা কাটাতারের বেড়া তৈরি শুরু করে। জবাবে চীনা সেনারা গোলা ছোড়ে। দ্বিতীয় চীন-ভারত যুদ্ধ নামে পরিচিত এই যুদ্ধে দেড় শতাধিক ভারতীয় এবং ৩৪০ জন চীনা সেনার মৃত্যু হয়।

এরপর ২০ বছর দুই দেশ সীমান্ত নিয়ে আর কোনো দ্বন্দ্বে জড়ায়নি। তবে ১৯৮৭ সালে এসে ভারত কেন্দ্রশাসিত অরুণাচলকে রাজ্য বলে ঘোষণা করে এবং সেখানে সামরিক উপস্থিতি জোরদার, অবকাঠামো নির্মাণ এবং জনবসতি স্থাপন শুরু করে। এতে ক্ষুব্ধ হয় চীন। জবাবে তারাও সীমান্তের ওপারে সেনা সমাবেশ বাড়াতে থাকে। তবে উভয় পক্ষ কেবল হুমকিতেই সীমাবদ্ধ ছিল এবার। কোনো যুদ্ধে জড়ায়নি।

এর ২৬ বছর পর, ২০১৩ সালের এপ্রিলে এসে ভারত-চীনের মধ্যে আবারও ইঁদুর-বিড়াল খেলা শুরু হয়। চীন কারাকোরাম পর্বতমালার দৌলত বেগ ওল্ডিতে একটি সেনা চৌকি বসায়। জবাবে উত্তর লাদাখের এই অংশে ভারতও চীনের চৌকির মাত্র ১০০০ ফুট দূরে আরেকটি চৌকি বসায়। এক মাস ধরে উভয় পক্ষই সেখানে সেনা এবং অস্ত্রের মজুত বাড়াতে থাকে। কিন্ত মাত্র এক মাসের মাথায় এসে মে মাসে উভয়পক্ষই সেখান থেকে নিজ নিজ চৌকি সরিয়ে নিতে সম্মত হয়।

ভারত-চীন আবারও দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে ২০১৭ সালের জুন মাসে। চীন প্রতিবেশী ভুটানের সীমান্ত সংলগ্ন ডোকলাম উপত্যকায় সড়ক এবং অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করলে ভারত ক্ষুব্ধ হয়। ভারতের দাবি, ভুটান একটি বাফার স্টেট এবং তাই চীন ভুটানের সঙ্গে এমন যোগাযোগ গড়ে তুলতে পারে না। ভারতীয় সেনারা বুলডোজার এবং গোলাবারুদসহ চীনকে বাধা দিতে হাজির হয়। তবে সে সময় যুদ্ধ না হলেও দুই দেশের সেনাদের মধ্যে পাথর ছোড়া থেকে শুরু করে হাতাহাতিও হয়।

২০২০ সালে এসেও চীন ও ভারতের সৈন্যদের মধ্যে কয়েক দফা হাতাহাতি হয়। এমন এক লড়াইয়ে পূর্ব লাদাখের প্যানগং লেকের কাছে বেশ কয়েকজন ভারতীয় সৈন্য গুরুতর আহত হন। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর ছিল যে, বেশ কয়েকজনকে হেলিকপ্টারে করে সেখান থেকে হাসপাতালে পাঠাতে হয়। এই সময়ে চীন সেখানে সেনা উপস্থিতি বৃদ্ধি করে। সে সময়কার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সংকট নিরসনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে সমঝোতার প্রস্তাব দেন।

সবশেষ চলতি বছর আবারও দুই দেশ জড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষে। তবে এবারও রক্তক্ষয়ী কোনো সংঘর্ষ নয়, অরুণাচলের তাওয়াং সেক্টরে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশের সেনারা।

কেন চীন-ভারতের সীমান্ত দ্বন্দ্ব জিইয়ে রয়েছে শতবর্ষ ধরে শত বছর ধরে দেশ দুটির মধ্যে দ্বন্দ্ব জিইয়ে রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে ভালো অর্থনৈতিক সম্পর্ক থাকার পরও এই দ্বন্দ্ব কেন? তার জবাব নিয়ে আসলে বিশ্লেষকেরাও ধন্ধে রয়েছেন। বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপট বিবেচনায় মোটা দাগে চীন-ভারতের বড় ধরনের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ার সে রকম কোনো কারণ নেই। চীনের মিত্র রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভালো। আর বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বীতাই স্বাভাবিক।

চীন কখনোই ব্রিটিশ ভারতের নির্ধারিত সীমারেখা মানেনি। দেশটি সবসময়ই অরুণাচলকে নিজেদের অংশ বলেই ঘোষণা করে এসেছে। ১৯৮৭ সালে অরুণাচলকে রাজ্য ঘোষণার পর থেকেই চীন সরকার সেখানে ভারতের কেন্দ্রের কোনো নেতা সফরে গেলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।

২০০৮ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং অরুণাচল সফরে গিয়ে সেখানে সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের ঘোষণা দিলে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় চীন। একই সঙ্গে বেইজিং অরুণাচল প্রদেশকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে ঋণ দেয়ার বিরোধিতা করে। এরপর ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অরুণাচল প্রদেশে ২ হাজার কিলোমিটার নতুন রাস্তা নির্মাণ এবং প্রত্যন্ত ও অবহেলিত এলাকার উন্নয়নে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন। সে সময়ও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখায় বেইজিং।

তবে ভারতের কেন্দ্রীয় শাসকদের দাবি, তারা চীনকে উত্ত্যক্ত করতে নয়, নিজেদের উন্নয়ন করতে এমন উদ্যোগ নিচ্ছে। এ বিষয়ে ভারতের সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজ্জু মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম ব্লুমবার্গকে বলেন, ‘আমরা চীনের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করার জন্য কিছু করছি না। চীনকে চ্যালেঞ্জ জানানো বা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার জন্যও কিছু করছি না। নিজেদের ভূখণ্ডকে নিরাপদ রাখতেই আমরা এটা করছি।’

কিন্তু চীনের কাছে এই ভাষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। তার প্রমাণ বারবার দেখা গেছে। অনেক বিশ্লেষকের মতে, চীন অরুণাচলকে নিয়ে খেলছে। কারণ, দেশটির এর মাধ্যমে ভারতকে বাধ্য করতে চায় যে, দিল্লি আকসাই চীনকে চীনের অংশ হিসেবে স্বীকার করে নিক।

তবে যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শেরিং তোপগিয়ালের মতে বিষয়টি আরও গভীর। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে চীনের প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রেও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্রন্ট। ড. শেরিংয়ের মতে, ‘তিব্বতের ওপর চীনের নিয়ন্ত্রণ এবং অরুণাচল ও আকসাই চীনের মধ্যে অদলবদলের ক্ষেত্রে এসব লড়াইয়ের একটি সংযোগ থাকলেও থাকতে পারে। তবে আমি মনে করি, চীন সীমান্ত বিরোধের দিকে যাচ্ছে কেবল আঞ্চলিক লাভ বা ক্ষতির হিসেব করে নয় বরং ক্রমবর্ধমান বৃহত্তর জাতীয় এবং বিদেশি নীতির স্বার্থকে মাথায় রেখে।’

ড. শেরিংয়ের বিবেচনায় অরুণাচলকে দিয়ে ভারতকে চাপে রাখার আরেকটি কারণ হলো, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের ক্রমবর্ধমান হৃদ্যতাকেও বশে রাখা। ভারতের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে সংযত করা ও তার আচরণ নিয়ন্ত্রণ করার একটি উপায় বলেই মনে হয় একে। এ ক্ষেত্রে অরুণাচল দিয়ে ভারতকে চীনের চাপ দেয়ার বিষয়টিও কৌশলগত অর্থ হাজির করে। এ কারণেই শেরিং প্রশ্ন রেখেছেন, এমনটাই যদি না হবে তবে, ‘চীনের যেসব প্রতিবেশী দেশ আছে সবার সঙ্গেই তাদের সীমান্ত বিরোধ থাকলেও এখনো কেন শুধু ভারতের সঙ্গে বিরোধ টিকে আছে?’

যদি এমনটাই হয় তবে শিগগিরিই আবারও এবং বারবার ভারত-চীন সীমান্ত উত্তপ্ত হয়ে উঠবে। এমনটাই আশঙ্কা ভারতের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক মনোজ যোশীর।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি