উজানের দেশ ভারতের চেরাপুঞ্জি থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের হাজার হাজার একর জমির আধাপাকা ধান বাঁধ ভেঙে ডুবে গেছে। হাওরের বাঁধ নির্মাণ, সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করেও বাঁধ উজানের পানি আটকে রাখতে পারেনি। ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতি হওয়ায় পানির নিচে চলে গেছে হাওরের হাজারো কৃষকের স্বপ্ন।
অভিযোগ বাঁধ নির্মাণের নামে কোটি কোটি টাকা প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের আমলা থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা, এমপি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পানি উন্নয়নের ঠিকাদারেরা সিন্ডিকেট করে ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছেন। এ নিয়ে গঠিত এক তদন্তে এ চিত্র উঠে এসেছে। অথচ এখন ওই সরকারি কর্মকর্তা, এমপি এবং জনপ্রতিনিধিরাই হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার বক্তব্য দিচ্ছেন। দুর্নীতিবাজদের মুখোশ খুলে দেয়ার দাবিতে মিডিয়ায় কথা বলছেন। জানা গেছে হওরে বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের চিত্র পেয়েছে এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদন চলতি সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হবে।
সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জের লাখো কৃষকের স্বপ্ন পানিতে ভেসে গেছে। গত ১৫ দিন ধরে হাওরের ফসল রক্ষায় পানি ঠেকানোর চেষ্টা করেছে প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, পিআইসি ও হাওরপাড়ের কৃষকরা। কিন্তু বাঁধের শেষ রক্ষা হয়নি। হাওর অঞ্চলের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ এখন লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক প্রভাবশালীরা মিলে হাওরে বাঁধ সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন।
আবার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা পর্যন্ত এ টাকার ভাগ পাচ্ছেন। এ কারণে কাজে দুর্নীতি, অনিয়ম হচ্ছে। বাঁধের সংস্কারের নামে কোটি কোটি টাকার অপচয় ও লুটপাট হচ্ছে। এতে কপাল পুড়ছে কৃষকের। হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্তে পানি মন্ত্রণায়ের গঠিত কমিটি এক সপ্তাহ থেকে মাঠে কাজ করলেও সে প্রতিবেদন এখনো জমা হয়নি। চলতি সপ্তাহে তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
গতকাল মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সব হাওরসহ নিচু অঞ্চলসমূহে সাধারণ সড়কের পরিবর্তে উড়াল সড়ক নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান। প্রধানমন্ত্রীর বরাদ দিয়ে তিনি জানান, হাওর পরিস্থিতি নিয়ে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী, মৎস্যমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী এবং পরিকল্পনামন্ত্রী কথা বলেছেন। অতঃপর সুস্পষ্ট নির্দেশনা (ক্লিয়ার ইন্সট্রাকশন) দিয়ে দেয়া হয়েছে যে, হাওর এলাকায় কোনো রকমের সাধারণ রাস্তাঘাট এখন থেকে আর করা যাবে না। এখন থেকে হাওরে কোনো সড়ক হলে সেটি এলিভেটেড (উড়াল) হতে হবে।
গত রোববার সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বর্ধিত গুরমার হাওরের ২৭ নম্বর ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওর সংলগ্ন কান্দা উপচে পানি হাওরে প্রবেশ করেছে। হাওরের একটি বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যায় ছোট-বড় কয়েকটি হাওরের পাকা ও আধা পাকা ধান। এ ছাড়া হুমকির মুখে রয়েছে আরো কয়েকটি হাওরের বাঁধ।
জানা গেছে, সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলায় ৪২টি হাওরে এবার দুই লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমি চাষাবাদ হয়েছে। এসব জমির ফসলরক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ১২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৩৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত করেছে। নিয়ম অনুযায়ী ২৮ ফেব্রুয়ারি বাঁধ নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ১০ দিন সময় বৃদ্ধি করেও কাজ শেষ হয়নি। কৃষকদের অভিযোগ, বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। গত ২ এপ্রিল সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালী বাঁধটি প্রথম ভেঙে যায়।
এরপর ধর্মপাশার চন্দ্রসোনার তাল, দিরাইয়ের চাপতির হাওরসহ জেলার ছয়টি উপজেলার অন্তত ১৫টি হাওরের ৭ হাজার হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। যদিও প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের দাবি তলিয়ে যাওয়া জমির পরিমাণ ৫ হাজার হেক্টর। টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালী বাঁধ ভাঙার পর পাশের গুরমার হাওরের বাঁধ ঠেকাতে দিনরাত কাজ করেছেন সবাই। কৃষক, প্রশাসনের কর্মকর্তা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও পিআইসির লোকজন দিন-রাত বাঁধে কাটিয়েছেন। পানি ঠেকাতে যুদ্ধ করেছেন হাওরের একমাত্র বোরো ফসলরক্ষায়। কিন্তু গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণ ও সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানির চাপে রোববার সকাল থেকে তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওর সংলগ্ন কান্দা উপচে পানি হাওরে প্রবেশ করে।
গলগলিয়া হাওরের কৃষক শফিক নুর বলেন, গলগলিয়া একটি ছোট হাওর, এখানে প্রায় ৫০-৬০টি কৃষক পরিবার জমি চাষাবাদ করেছিলেন। কিন্তু গুরমার হাওরের একটি ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেছে।
দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য শিমুল আহমেদ বলেন, পাটলাই নদীতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে রোববার বিকেলে হঠাৎ গুরমার হাওরের বাঁধ ভেঙে যায়। এতে আট-দশটি গ্রামের কৃষকের শতশত বিঘা জমির ধান পানিতে ডুবে যায়।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান উদ দৌলা বলেন, দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের গুরমার হাওরের বর্ধিতাংশ উপ-প্রকল্প ২৭ নম্বর বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় গলগলিয়া ও পানার হাওরের প্রায় ৩০৯ বিঘা জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে কৃষকরা কিছু ধান কেটে ফেলেছেন। হাওরের পাকা ধান কেটে ফেলায় ক্ষতির পরিমাণ কম হয়েছে। দুটি হাওরেই ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়েছিল।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তাহিরপুর উপজেলার উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান সেলিম ইনকিলাবকে বলেন, গুরমার হাওরের ২৭ নম্বর বাঁধটি কেন ভেঙে গেছে এবং প্রকল্পের কাজে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, তা আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি। তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান কবির ইনকিলাবকে বলেন, আমরা সর্বশক্তি প্রয়োগ করে ঝড়-বৃষ্টি উপক্ষো করে দিন-রাত বাঁধ রক্ষায় কাজ করেছি। কিন্তু বর্ধিত গুরমার হাওরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৭ নম্বর প্রকল্পের বাঁধটি হঠাৎ করে ভেঙে গেছে।
গুরমার হাওরের বোরো ফসলের বাঁধ রক্ষায় কাজ করেছেন সুনামগঞ্জ জেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. জাকির হোসেন। তিনি বলেন, আমরা গত দুই সপ্তাহ ধরে সবাই মিলে অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু হটাৎ করে পানির চাপে গুরমার হাওরের বাঁধের এই অংশ ভেঙে গেছে।
সুনামগঞ্জে এবার হাওরের ফসল রক্ষায় ৭২৭টি প্রকল্পে ১২২ কোটি টাকার বাঁধের কাজ হয়েছে। তবে এবারও কাজ সময়মতো শেষ হয়নি। প্রতিটি কাজে স্থানীয় এমপি তার পছন্দের লোকজন দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) গঠন করেছে। ইতোমধ্যে সরকারে বড় বড় মন্ত্রী হাওর এলাকা পরিদর্শন করেছেন। হাওরে বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম হয়েছে সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করবেন জানিয়েছেন। কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক গত শনিবার পরিদর্শন করেছেন এর আগে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম পরির্দশন করেছেন। তার সামনে এলাকাবাসী দুর্নীতি চিত্র তুলে ধরেছেন। তিনি ব্যবস্থা নিবেন জানিয়েছেন হাওর এলাকার কৃষকদের।
এদিকে স্থানীয় এমপি ও উপজেলার ইউনিয়ন চেয়াম্যান এবং রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা মিলে হাওরে বাঁধ নির্মাণ কাজে জড়িত রয়েছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত কমিটির এক সদস্য। তিনি বলেন, বাঁধ নির্মাণে পিআইসি পদ্ধতি রাখতে হবে। তবে অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত করতে পিআইসির সংস্কার দরকার। কাজে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। যারা বাঁধের অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত, তদন্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। সরকারের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও দলের নেতারা সিন্ডিকেটের কারণে সময়মতো বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় হাওরের কৃষকদের ধান খেয়েছে উজানের ভারত থেকে নেমে আসা পানি। ভুক্তভোগী এবং স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, হাওরের মানুষের এই চরম পরিণতির জন্য দায়ী তারাই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাধারণ মানুষ এমনকি এমপিও এমন অভিযোগ করেছেন। স্থানীয়রা বলছেন, হাওর রক্ষা বাঁধের টাকা খেয়েছেন সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এবং কিছু পাতি নেতা।
তবে এসব দুর্নীতি আর লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রভাবশালী ঠিকাদারেরা, কিছু উপজেলার চেয়ারম্যান, কিছু ইউপি চেয়ারম্যানসহ একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতে টাকা লুটে খেয়েছে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দা সালমা জাফরীন ফোনে ইনকিলাবকে বলেন, হাওরের বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত যারা, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। হাওরে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন বাঁধ আমরা পরিদর্শন করেছি। যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেব।
এ বিষয়ে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম ইনকিলাবকে বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। হাওরের বাঁধ রক্ষায় স্থায়ী সমাধানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ এখন লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। কৃষকদের স্বার্থে বাঁধ রক্ষায় সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়, কিন্তু যারা কাজ বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত, তারা কৃষকের নয়, নিজেদের স্বার্থ বড় করে দেখেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা, স্থানীয় রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক প্রভাবশালীর মিলে হাওরে বাঁধ সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। বাঁধের সংস্কারের নামে টাকার অপচয় ও লুটপাট করে নেন।
হাওর অ্যাডভোকেসি প্ল্যাটফর্ম (হ্যাপ) নামের একটি সংগঠন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরে। সংগঠনটির প্রতিনিধিরা দুদিন জেলার ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন হাওর ও বাঁধ ঘুরে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পাবলিক লাইব্রেরিতে এই সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুজ্জামান। হাওরের নানা সঙ্কট নিয়ে কথা বলেন সুনামগঞ্জে হাওরের কৃষি ও কৃষক রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্যসচিব অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার, হ্যাপের সদস্য ইয়াহিয়া সাজ্জাদ, সুনামগঞ্জ হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতা নির্মল ভট্টাচার্য। দুদিন সুনামগঞ্জ জেলার তিনটি উপজেলার পাঁচটি হাওর ঘুরে দেখেন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, একসময় হাওরে ঠিকাদারদের মাধ্যমে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ হতো। কিন্তু ২০১৭ যে ফসলডুবির পর ঠিকাদারি প্রথা বাদ দিয়ে স্থানীয় কৃষক ও সুবিধাভোগীদের নিয়ে গঠিত প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে কাজ হচ্ছে। এই কমিটিতে নামে-বেনামে স্থানীয় রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক প্রভাবশালীরা ঢুকে পড়েন। তারা পিআইসি নিজেদের কবজায় নিয়ে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন। সরকারি টাকা লুটপাট হচ্ছে। এতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগসাজশ আছে। এ কারণেই বাঁধের কাজ হয় দায়সারাভাবে, সময়মতো কাজ শুরু ও শেষ করা যায় না। এবারও দেখা গেছে, বাঁধ নির্মাণ যেমন যথাযথভাবে হয়নি, তেমনি রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকির দায়িত্বটিও ঠিকমতো হয়নি। এখন পাহাড়ি ঢল আসায় দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দোষারোপ করছে।