পাকিস্তানের অভিবাসন ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান ব্যুরো জানিয়েছে, গত বছর পাকিস্তান ছেড়েছেন আট লাখের বেশি শিক্ষিত তরুণ। দেশে চলমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তারা দেশ ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উন্নত জীবন ও ভবিষ্যত সমৃদ্ধির প্রত্যাশায় চাকরির খোঁজে কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন মেধাবী পাকিস্তানি তরুণরা। এমন তথ্য দিয়েছে পাকিস্তানের অভিবাসন ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান ব্যুরো। গত বছরই আট লাখের বেশি পাকিস্তানি চাকরির খোঁজে দেশ ছেড়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
অভিবাসন ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান ব্যুরো জানায়, করোনা মহামারির আগে ২০১৯ সালে এ সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ২৫ হাজার ৮৭৬। তার আগের বছর পাকিস্তান ছেড়েছিল আরও কম। তথ্য বলছে সেই সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৮২ হাজার ৪৩৯ জন।
পাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা তরুণদের মধ্যে দেশ ছাড়ার হার ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্থানীয় একটি জরিপ পরিচালনাকারী সংস্থা।
তরুণদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার বেশ কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাওয়া পাকিস্তানে গত বছরের বিপর্যয়কর বন্যা পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে খাবারের সংকট। বেড়ে গেছে মূল্যস্ফীতি। মুদ্রাবাজারে ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানের রুপির দরপতন হচ্ছে।
এসব বিষয়ের পাশপাশি তরুণরা শিক্ষা অর্জন ও অন্যান্য কারণে পাকিস্তান ছাড়ছেন। একবার দেশ ছেড়ে গেলে তাদের ফিরে আসার প্রবণতাও অনেক কম বলে জানিয়েছে দেশটির অভিবাসন ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান ব্যুরো।
তবে এই অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ’র কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সংকট সামলানোর চেষ্টা করছে তারা। এ পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষিত, মেধাবী তরুণদের দেশ ছেড়ে যাওয়ার প্রবণতা সামনের দিনগুলোতে পাকিস্তানকে আরও ভোগাতে পারে বলে উদ্বিগ্ন প্রশাসন ও বিশেষজ্ঞরা।