বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গতিপ্রকৃতি কেমন হবে তা পর্যবেক্ষণ করবে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ (এআইবিএস) আয়োজিত ‘ফিফটি ইয়ারস অফ ইউএস-বাংলাদেশ রিলেশনস: ক্রিটিক্যাল রিফ্লেকশনস এন্ড ওয়েস ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এমন বক্তব্য উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সরকার বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর, আটলান্টিক কাউন্সিলের অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো এবং এআইবিএস এর প্রেসিডেন্ট আলী রীয়াজ ওয়েবিনারটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন। বৃহস্পতিবার (৩১ শে মার্চ) বাংলাদেশ সময় রাত ৮ টায় শুরু হওয়া ওয়েবিনারটিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (আমেরিকা) সৈয়দ শাহ সাদ আন্দালিব, ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সাবেক ডেপুটি চিফ অফ মিশন জন ড্যানিলোভিচ, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) এর গ্লোবাল স্টাডিজ ও গভর্নেন্স প্রোগ্রামের প্রধান অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ হুসাইন এবং যুক্তরাষ্ট্রের থিংক ট্যাংক উইলসন সেন্টারের এশিয়া প্রোগ্রামের উপ পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ওয়েবিনারটি রেজিস্ট্রেশন সাপেক্ষে সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল এবং আলোচকরা দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। নিজের ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সাবেক ডেপুটি চিফ অফ মিশন জন ড্যানিলোভিচ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে কোন নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে বাংলাদেশের অনেক মানুষ মনে করেন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের দিকে নজর দেবে। কিন্তু বিষয়টি সেরকম নয়। সারা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অগ্রাধিকারের জায়গা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সাথে বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিদের দেখা না করার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এই সরকার যতদিন আছে ততদিন বিষয়টি এমনই থাকবে বলে মনে হয়। র?্যাবের উপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা আগামী নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে কিনা দর্শকের এমন প্রশ্নের জবাবে মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, আমি মনে করি, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করবে যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব মনোযোগ থাকা উচিত বলেও মনে করেন এশিয়া বিষয়ক এই বিশেষজ্ঞ। সৈয়দ শাহ সাদ আন্দালিব এবং ড. ইমতিয়াজ হুসাইন যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে বিগত ৫০ বছরের সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনায় বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা,বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ, এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য ভূমিকা সহ নানা বিষয় উঠে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের অনুদানকৃত করোনার টিকার সবচেয়ে বড় গ্রহীতা যে বাংলাদেশ এবং সেটি যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য দিক তা নিয়েও আলোচনা হয়। বক্তারা যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কোন্নয়নে ‘পিপল-টু-পিপল কনট্যাক্ট’ বা দু’দেশের মানুষের মধ্যে সরাসরি সম্পর্কের উপর গুরুত্বারোপ করেন।