1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
১০ নয়, ৫ বছরে হবে জনশুমারি | Bastob Chitro24
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৯ অপরাহ্ন

১০ নয়, ৫ বছরে হবে জনশুমারি

ঢাকা অফিস
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২২

জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ পাঁচ বছর বা স্বল্পসময়ে জনশুমারি সম্পন্ন করে থাকে। তাহলে আমরা কেন ১০ বছর অপেক্ষা করবো। স্বল্পসময়ে জনশুমারি সম্পন্ন করার জন্য আমাদেরও সমসাময়িক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। আমরা আশা করছি, পরবর্তী গণনা ৫ বছর পর পর করবো।
গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২’ বিষয়ে সাংবাদিকদের অবহিতকরণ কর্মশালায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এসব কথা বলেন। কয়েক দফা তারিখ পরিবর্তনের পর অবশেষে দেশব্যাপী মাঠ পর্যায়ে একযোগে সাত দিনব্যাপী জনশুমারির তথ্য সংগ্রহ করা হবে আগামী ১৫ থেকে ২১শে জুন। এ লক্ষ্যে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ট্যাব কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমাদের গত বছর শুমারি করার কথা ছিল। কিন্তু আমরা শুমারির কাজ করতে গিয়ে পিছিয়ে গেছি। কয়েকটি কারণে আমরা শুমারির কাজ করতে গিয়ে পিছিয়ে গেছি।

কোভিডের কারণে আমরা প্রথম ধাক্কা খেয়েছি। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম ম্যানুয়ালি শুমারি করবো, পরে ডিজিটালি শুমারি করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। যেহেতু বাংলাদেশ ডিজিটালি অনেক এগিয়ে গেছে। সব জায়গায় এখন স্মার্টফোন ব্যবহার হচ্ছে, ইন্টারনেট সংযোগও বেড়েছে। ডিজিটালি শুমারির কারণে বেশি নিখুঁত হবে, বিশুদ্ধতা বেশি হবে। তিনি বলেন, শুমারি করতে গিয়ে প্রকিউরমেন্টে আমরা হোঁচট খেয়েছি। বিরাট একটা ক্রয়াদেশ ছিল ট্যাব কেনার। এটা তিনবার ক্রয় কমিটি থেকে ফিরে এসেছে। সর্বোচ্চ পরিমাণে স্বচ্ছতার সঙ্গে ক্রয় কমিটিতে বার বার গেছি, ওনাদের বুঝিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা সরকার প্রধানকে সবসময় শুমারির বিষয়ে অবহিত করেছি। ১৫ থেকে ২১শে জুন জনশুমারি অনুষ্ঠিত হবে। কাজটা সম্পাদন করতে দেশের সব নাগরিকের সহায়তা চাইবো। এ বিষয়ে আমাদের সরকারপ্রধান দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন।
১০ বছর অন্তর অন্তর শুমারির পক্ষে আমি নই দাবি করে মন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় এভাবে মাথা গোনার আয়োজনের দরকার নেই। আমরা এর মধ্যে চিন্তাভাবনা করছি স্বল্পসময়ে শুমারি করার। দেশ এগিয়ে গেছে, জ্ঞান-বিজ্ঞান আরও প্রসারিত হয়েছে, সংস্কৃতি বাড়ছে, স্মার্টফোনের সংখ্যা প্রায় সর্বত্র চলে গেছে। ফলে কেন ১০ বছরের পরিবর্তে স্বল্পসময়ে শুমারি করতে পারবো না? শুমারির অপারেশন রিয়েল টাইমে করবো। আমরা আশা করছি, পরবর্তী গণনা ৫ বছর পর পর করবো। এটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে, আমাদের সক্ষমতা যাচাই করতে হবে। দরকার হলে এক্সপার্টদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। কিন্তু আমি চাই ১০ বছর পর পর মহাযজ্ঞ না করে টাইম টু টাইম জনশুমারি করতে হবে। আজকে কেন সময়মতো প্রধানমন্ত্রী দেশের জনসংখ্যার সঠিক তথ্য পাবেন না। আমাদের হাতের কাছে টেকনোলজি আছে, এটা ব্যবহার করতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, প্রতিটি তথ্য বাংলায় হতে হবে। জনশুমারির জন্য যে ফরম হাতে যাবে সেটা বাংলায় হবে। যে তথ্য সংগ্রহ করা হবে সেটাও বাংলায় হবে। এটা নিয়ে যে প্রকাশনা বের হবে সেটাও বাংলায় হতে হবে। কোনো আবেগ নয়, ইংরেজির প্রয়োজন আছে, কারণ আমাদের বিদেশি বন্ধু আছে। তাদের জন্য কিছু প্রকাশনা ইংরেজিতে হবে। তবে মেজর কাজগুলো বাংলায় করা হবে। সবার একসেস যেন স্বস্তিদায়ক হয়। ছাপার কাজও আমরা নিজেরাই করবো। প্রচারের জন্য সংবাদমাধ্যম পাশে থাকবে। জেলা, উপজেলা অফিসার আমাদের সহায়তা করবে। উপজেলা পর্যায়ে যেসব ডিজিটাল বোর্ড আছে সেগুলোতে প্রচার করতে হবে।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, আমরা ডিজিটালি শুমারি করতে যাচ্ছি, এটা খুশির বিষয়। স্বাধীন বাংলাদেশে এই প্রথম ডিজিটালি শুমারি হচ্ছে। শুমারিতে দেশের সব মানুষ যাতে তাদের তথ্য দিতে পারেন সেজন্য প্রচার-প্রচারণায় অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সাংবাদিক ভাইবোনেরা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন। সবার সহযোগিতায় একটা সঠিক, স্বচ্ছ ও বিশুদ্ধ ডিজিটাল শুমারি সম্পন্ন করতে পারবো বলে আশা করি।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২’ এর প্রকল্প পরিচালক দিলদার হোসেন। কর্মশালায় প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ড. দীপঙ্কর রায়।
দিলদার হোসেন বলেন, সময় ও যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সময়োপযোগী, নির্ভুল তথ্য প্রদান এবং সরকারঘোষিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে অবদান রাখার অভিপ্রায়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রথম ‘ডিজিটাল শুমারি’ পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে পরিকল্পনা প্রণয়নে নিয়োজিত পরিকল্পনাবিদ, নীতিনির্ধারক, সরকারি- বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, এনজিও এবং সর্বোপরি জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য আর্থ-সামাজিক, জনতাত্ত্বিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য, স্থুল জাতীয় উৎপাদন, জাতীয় আয় নিরূপণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, সংকলন ও প্রকাশের গুরুদায়িত্ব জাতীয় পরিসংখ্যান সংস্থা হিসেবে বিবিএস নিয়মিতভাবে পালন করে আসছে। দিলদার হোসেন আরও বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে পৃথিবীর অন্য অনেক দেশের ন্যায় ৬ষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনায় ১০ বছর পর্যাবৃত্তি অনুসরণপূর্বক ২০২১ সালে পরিচালনা করা সম্ভব না হলেও আগামী ১৫-২১শে জুন, ২০২২ সময়ে মূল শুমারি তথা তথ্যসংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
কর্মশালায় পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক (ডিজি) মো. তাজুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি