পবিত্র রমযানের প্রথম জুমায় গতকাল সারাদেশের মসজিদে মসজিদে ঢল নেমেছিল মুসল্লিদের। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্যরে মধ্যদিয়ে জুমার নামাযে অংশ নিতে অনেক দূর থেকে এসেছেন মুসল্লিরা। আল্লাহর রহমত প্রত্যাশী নানা বয়সী মানুষ যেন স্রোতের গতিতে ছুটে এসেছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে। সময় গড়িয়ে নামাজের খুতবা শুরুর আগেই মুসল্লিদের ঢল নামে। মসজিদের সপ্তম তলার মূল ভবন, বারান্দা, যাতায়াতের পথ এমনকি মসজিদের বাইরেও মাদুর বিছিয়ে নামাযে অংশ নিতে দেখা যায় মুসল্লিদের।
প্রখর রোদের মধ্যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নামায আদায় করেন মুসল্লিরা। নামায শেষে দীর্ঘ মোনাজাতে জাতির জন্য সার্বিক মঙ্গল কামনায় দোয়া করেন মসজিদের খতিব মুফতি রুহুল আমিন।
প্রচণ্ড রোদে নামায শেষে বেশিরভাগ মুসল্লি আশপাশের ছায়াযুক্ত জায়গায় আশ্রয় নেন। তবে রোদ উপেক্ষা করে দক্ষিণ গেটের খোলা আঙিনায় বসে মোনাজাতে অংশ নেন অনেকে। সারাদেশের মসজিদগুলোতে মুসুল্লীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে বলে সংবাদদাতাগণ জানিয়েছেন। নামাযের আগে প্রতিটি মসজিদে রমযানের প্রথম জুমা উপলক্ষে বিশেষ বয়ান করা হয়। অনেক মসজিদে মুসল্লিদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় রাস্তায় চলে আসে নামাযের কাতার। প্রতিটি মসজিদে নামাযের পর মোনাজাতে কান্নায় মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন মুসল্লিরা।
চট্টগ্রাম সংবাদদাতা জানান, রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস পবিত্র মাহে রমযানের প্রথম জুমায় নগরীর মসজিদগুলোতে মুসল্লির ঢল নামে। জুমার আজানের আগেই মসজিদমুখী হন নগরবাসী। আজানের পর মসজিদগুলোতে তিলধারণের ঠাঁই ছিল না। প্রায় প্রতিটি মসজিদে নামাযের কাতার মসজিদ ছাড়িয়ে আশপাশের সড়ক পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। কয়েকটি এলাকায় জুমার নামায চলাকালে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চৈত্র দিনের তপ্ত রোদ উপেক্ষা করে অনেক মুসল্লি পিচঢালা সড়কে নামাজের জন্য কাতারবন্দী হন। সব শ্রেণি পেশা ও বয়সের মানুষ এক কাতারে সামিল হয়ে পবিত্র জুমার নামায আদায় করেন। নামায শেষে ইমাম ও খতিবগণ দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া করেন। নগরীর ঐতিহাসিক আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ, লালদীঘি জামে মসজিদ, হযরত শাহ আমানত খান দরগাহ মসজিদ, এনায়েত বাজার শাহী জামে মসজিদ, ধনিয়ালাপাড়ার বায়তুশ শরফ জামে মসজিদ, পাঠানটুলি চট্টেশ্বরাই গায়েবি মসজিদ, ফিরিঙ্গি বাজার জামে মসজিদ, মুরাদপুর মসজিদে বেলাল, বহদ্দারহাট জামে মসজিদ, মেহেদিবাগ সিডিএ আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, কাজির দেউড়ি জামে মসজিদ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, সিজিএস কলোনি জামে মসজিদ, বন্দরটিলা হযরত আলী শাহ জামে মসজিদসহ নগরীর বেশিরভাগ মসজিদে ছিল মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড়।
এদিকে কক্সবাজার সংবাদদাতা জানান, পবিত্র রমযানের প্রথম জুমাবারে জুমার নামাযে জেলার জামে মসজিদ গুলোতে উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হয়েছে কক্সবাজার এর মসজিদগুলোতে এই অবস্থা দেখা গেছে। বিশেষ করে কক্সবাজার শহরের মসজিদগুলোতে মসজিদের আশপাশের রাস্তা ও মাঠে মুসল্লিদের উপচে পরা ভিড় দেখা গেছে। শহরের বদর মোকাম জামে মসজিদে সকাল থেকেই মুসল্লিরা আসতে থাকে। নামাযের আগেই মসজিদ ও মসজিদ চত্বর উপচিয়ে পার্শ্ববর্তী সড়কে মুসল্লিদের ভীড় জমে।
সিলেট সংবাদদাতা জানান, পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম জুমার নামাজে প্রতিটি মসজিদে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের ব্যাপক সমাগম ঘটেছিল সিলেট নগরীর সবকটি মসজিদে। গতকাল জুমার নামাজের সময় নগরীর শাহজালাল, শাহপরান, গাজী বুরহান উদ্দিন (রহ.) মাজার মসজিদ সহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মসজিদগুলোতে এমন দৃশ্য ছিল মুসল্লীদের। প্রতিটি মসজিদে খুৎবা পূর্ব বয়ান হয় রমজানের মোবারক তুলে ধরে। অনেক মসজিদে মুসল্লিদের স্থান সংকুলান না হওয়ায় রাস্তায় নামাজ পড়তে হয় মুসল্লীদের। নামাজের পর মুনাজাতে বিনীতভাবে মুসল্লীরা কামনা করেন আল্লাহর সন্তুষ্টি। এসময় মহান আল্লাহর দরবারে ক্ষমার প্রার্থনা করেন মুসল্লীরা।