চরাঞ্চলে চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর বন্যার প্রকোপ তুলনামূলক কম থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি ফসল। তাই খুশি চরাঞ্চলের কয়েক হাজার কৃষক পরিবার।
সরেজমিন দেখা গেছে, নদীতীরবর্তী চরাঞ্চলে চারদিক এখন সবুজের সমারোহ। দিগন্ত জোড়া সোনালি ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। মাঠভরা ফসল দেখে কৃষকের চোখেমুখে ফুটে ওঠেছে খুশির ঝলক।
গত বছরে বন্যায় ফসলের ক্ষেত নষ্ট হলেও এবার বন্যার প্রকোপ তুলনামূলক কম থাকায় আশানুরূপ ফলন ঘরে তুলতে পারবে বলে আশা করছেন তিস্তার চরাঞ্চলের কৃষকরা।
চলতি আমন মৌসুমে জেগে উঠা জেলার ৫৯টি চরাঞ্চলের ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে আগাম ধান কেটে ঘরে তোলাও শুরু করেছেন অনেকে। গত বছর বিঘা প্রতি ৩ মণ পর্যন্ত ধান পেলেও এ বছর ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা বিঘাপ্রতি ১২ থেকে ১৪ মণ পর্যন্ত ধান ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখছেন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার হরিণ চওয়া এলাকার কৃষক ছাবের আলী জানান, ‘আমাদের ফলন ভালো হলেও ডিজেল, সার, কীটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদনে বাড়তি খরচ গুনতে হয়েছে। যদি বাজারে ধানের দাম ভালো পাই, তা হলে লাভের মুখ দেখতে পারব।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের চর গোবর্ধানের কৃষক আজিজার রহমান বলেন, এ বছর ৬ বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছিলাম। ২ বিঘা জমির ধান ঘরে তুলেছি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাকি জমির ধান কাটব। প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ১৭ মণ ধানের ফলন পেয়েছি। গত বছরও ৬ বিঘা জমিতে আমনের চাষ করেছিলেন। বন্যার কারণে প্রায় ৩ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়েছিল। এ বছর বন্যার প্রকোপ কম থাকায় চরের জমি থেকে আমন ধানের আশানুরূপ ফলন পেয়েছি।
চরাঞ্চলের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘কৃষি বিভাগের লোকজন যদি চরাঞ্চলে এসে কৃষকদের পরামর্শ দিত, তাহলে ফলন আরও ভালো হতো। কিন্তু কৃষি বিভাগের লোকজন আমাদের এ চরাঞ্চলে কখনো আসে না।’
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চরাঞ্চলে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা আমনের আশানুরূপ ফলন পাওয়ায় খুব খুশি।