শহরের পাশাপাশি এখন গ্রামগঞ্জে যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা। তেমন কোনো চিকিৎসা না থাকলেও নিয়মকানুনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ এসব রোগীর চিকিৎসা। এদিকে চিকিৎসক বলছেন ওষুধ সেবন নয়, সচেতনতার মাধ্যমে এই রোগ নিরাময় সম্ভব।
প্রতিদিন ভোর হলেই শহর ও গ্রামের পথেঘাটে দেখা মেলে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের। হাঁটাহাঁটির মাধ্যমে শরীর থেকে ঘাম ঝরাতে ব্যস্ত থাকেন, তবে ঘাম ঝরানো শরীরের মেদ কমানোর জন্য নয়। এটি ডায়াবেটিকস নিরাময় বা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টামাত্র। গ্রাম থেকে শহর, সবখানেই এই রোগীর সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। একেবারে নিরাময়যোগ্য কোনো চিকিৎসাসেবা এখনও আবিষ্কৃত হয়নি এই রোগের। তাই নিয়মিত সকাল-বিকেল শরীরচর্চা ও মিষ্টিজাতীয় খাবার বর্জনের মাধ্যমে সুস্থ থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ডায়াবেটিকস রোগীরা।
কিছুদিন আগেও যেখানে গ্রামগঞ্জের মানুষের ধারণা ছিল ডায়াবেটিস নামক রোগটি ধনী কিংবা চাকরিজীবী মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, তবে সেই ভ্রান্ত ধারণা ভেঙে গেছে এসব মানুষের। এখন গ্রামগঞ্জেও বেড়েছে এই রোগের প্রকোপ, এই রোগের তেমন কোনো চিকিৎসা না থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শ মতে নিয়মিত শরীরচর্চা, ডায়াবেটিস হবে এমন খাবার পরিহার করেই চলছে এসব রোগীর জীবন।
আমেনা বেগম নামের ডায়াবেটিসের এক রোগী বলেন, আমার ৫ বছর আগে ডায়াবেটিস ধরা পরেছে। তখন থেকে নানা ধরনের স্বাস্থ্যে সমস্যায় ভুগছি। তা ছাড়া আমার প্রিয় বা পছন্দের কোনো খাবার তৃপ্তি করে খেতে পারি না।
আরেক রোগী জানান, ডায়াবেটিস ধরা পড়ার পর থেকে প্রতিদিন ওষুধ সেবন করতে হয়। মাসে ওষুধ লাগে ২ হাজার টাকার এতে সংসার চালাবো না ওষুধ খাব খুবই কষ্টে আছি।
হাকিমপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার প্রিতম বিশ্বাস বলেন, শহর কিংবা গ্রাম। সব খানেই সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা। বাংলায় এটিকে বহুমূত্র রোগ বলা হয়। এই রোগের সমাধান যোগ্য কোন চিকিৎসা সেবা নেই। তবে সচেতনতার মাধ্যমেই এই রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময় করা সম্ভব।
দীর্ঘমেয়াদি এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দীর্ঘসময় ধরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে। এ কারণেই তারা এই রোগে আক্রান্ত হয়। ডায়বেটিস রোগে আক্রান্ত রোগীরা প্রাথমিক ভাবে ঘনঘন প্রস্রাব, অত্যধিক তৃষ্ণা এবং অত্যধিক ক্ষুধায় ভোগে।
বর্তমানে বিশ্বে ডায়াবেটিস সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩৭ মিলিয়ন। এভাবে বাড়তে থাকলে ২০৩০ সালে হবে ৬৪৩ মিলিয়ন এবং ২০৪৫ সালে ৭৮৩ মিলিয়ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। স্বাস্থ্য সচেতনতা ও নিয়মিত পরীক্ষা মাধ্যমেই এই রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া অনেকাংশ সম্ভব বলে জানান এই চিকিৎসক।
বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সপ্তম প্রধান কারণ এই ডায়াবেটিস। ২০২১ সালে এই রোগে মারা গেছে ৬৭ লাখ লোক। চলতি বছর এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ জাতীয় আরো খবর..