1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
গরুর মাংসের দাম যে উপায়ে কমানো যায় | Bastob Chitro24
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪২ পূর্বাহ্ন

গরুর মাংসের দাম যে উপায়ে কমানো যায়

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২১ জুলাই, ২০২৩

সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের যৌথ প্রচেষ্টায় গত দুই দশকে বাংলাদেশে ও দুধ উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে আমরা মাংস উৎপাদনে ইতিমধ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। দুধ উৎপাদনেও আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতার পথে। সরকার সার্বিক প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে, তথা মাংস উৎপাদন বাড়ানোর জন্য খামারিদের বিশেষভাবে উৎসাহিত করছে, যা এ দেশের জনগণের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রেখেছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের (ডিএলএস, ২০২৩) তথ্য অনুযায়ী, ২০০১-০২ সালে মাংস উৎপাদন ছিল প্রায় ৯ লাখ মেট্রিক টন এবং ২০২১-২২ সালে উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৯৩ লাখ মেট্রিক টন (প্রায় ১০ গুণ)। মোট মাংস উৎপাদনের একটি বড় অংশ (প্রায় ৪৯ দশমিক ৮১ শতাংশ) আসে গরু থেকে (ডিএলএস, ২০২৩)। যদিও গত ১০ বছরে গরুর সংখ্যা মাত্র ৬ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু মাংস উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ১৫৬ শতাংশ।

বর্তমানে বাৎসরিক মাথাপিছু মাংস গ্রহণ প্রায় ৫৫ কেজি, যা চাহিদার তুলনায় কিছুটা বেশি। আমাদের দেশে মাংস উৎপাদনের জন্য ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের খামার গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফ) এবং ডিএলএসের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ১২ লাখ খামার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং ৯৪ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

এসব খামারে বিভিন্ন আকারের এবং ওজনের গরু পালন করা হয়, যা সারা বছর, বিশেষ করে কোরবানির সময় বিক্রি করা হয়ে থাকে। মাঠপর্যায়ে তথ্য অনুযায়ী, এসব গরুর ওজন সাধারণত ২০০ কেজি (যার বাজারমূল্য প্রায় ১ লাখ টাকা) থেকে ৭০০-৮০০ কেজি (যার বাজারমূল্য প্রায় ৫ লাখ টাকা) বা তারও বেশি।প্রাণিসম্পদ খাতের অন্যতম একটি অবদান হচ্ছে, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির প্রাণী সরবরাহের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন। খুশির খবর হলো, এ বছর চাহিদার তুলনায় কোরবানির জন্য উপযোগী প্রাণীর উৎপাদন বেশি। যেমন এ বছর প্রাণীর চাহিদা হলো ১ দশমিক শূন্য ৪ কোটি, বর্তমানের সরবরাহের সংখ্যা ১ দশমিক ২৫ কোটি। এর মধ্যে গরুর সংখ্যা প্রায় ৪৮ দশমিক ৪ লক্ষ (ডিএলএস, ২০২৩)।

বিভিন্ন তথ্য থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের গরুর মাংসের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। যেমন বাংলাদেশে এক কেজি গরুর মাংসের দাম ৬ দশমিক ৯৪ ডলার, মালয়েশিয়াতে ৫ দশমিক ৩৭ ডলার, নেপালে ৪ দশমিক ২৯ ডলার এবং পাকিস্তানে ৩ দশমিক ৬০ ডলার (সূত্র: বাংলাদেশ বিফ প্রাইজ, গ্লোবাল প্রোডাক্ট প্রাইজ ২০২৩, বিফ প্রাইজ, সিপিডি ২০২৩)।

কাজেই আমাদের দেশে মাংস উৎপাদনের খরচ কমানোর ওপর আরও গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের দেশে এখন শিক্ষিত যুবক ও নারীরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গরু পালন করছেন।

মাংস উৎপাদনের জন্য বর্তমানে শাহীওয়াল ও ফ্রিজিয়ান সংকর জাতসহ আরসিসি ও দেশি জাতের গরু পালন করা হচ্ছে। প্রশ্ন হলো, আমাদের দেশে মাংসের দাম আশপাশের দেশ থেকে কেন বেশি, এবং কীভাবে উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব?

আমরা জানি, উন্নত জাতের গরু দেশীয় জাতের গরুর তুলনায় কম খাদ্যে দ্রুত ওজনে বৃদ্ধি পায়। গরুর জাত বাছাইয়ের ওপর এর উৎপাদন বৃদ্ধি ও উৎপাদন খরচ নির্ভর করে। মাংসের দাম কমাতে হলে এর উৎপাদন খরচ কমাতে হবে। উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য নিচের বিষয়গুলো বিবেচনা করা যেতে পারে:

১.

আমাদের দেশে বর্তমানে গরুর মাংসের দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। সুতরাং আমাদের দেশে আবহাওয়া উপযোগী অধিক টেকসই গরুর ভালো একটি জাত প্রয়োজন (হাই বিফ জেনেটিকস), যার এফসিআর (খাদ্য রূপান্তর হার) হবে ৫ থেকে ৭, অর্থাৎ ৫ থেকে ৭ কেজি খাবার খেয়ে এক কেজি মাংস হবে।

এটি দ্রুত বর্ধনশীল হতে হবে এবং দুই থেকে আড়াই বছরে ওজন হবে ৫০০ থেকে ৭০০ কেজি। স্থানীয়ভাবে পালন করলে রোগবালাই কম হয়। বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, দেশি গরুর এফসিআর প্রায় ১২, ক্রসব্রিড ৮ থেকে ১০ এবং ব্রাহমা ক্রস ৫ থেকে ৭।

উল্লেখ্য, এফসিআর যত কম হবে, উৎপাদন খরচ তত কমবে। ব্রাহমার দৈনিক ওজন বৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে বেশি এবং দৈনিক বৃদ্ধি প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি