প্রেম প্রত্যাখান করায় ও কথা বলতে না চাওয়ায় এক স্কুল ছাত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মুখ ও হাতে আঘাত করে জখম করেছে এক বখাটে যুবক। ধারালো অস্ত্র দিয়ে মুখের ৪টি স্থানে ও বাম হাতের একটি স্থানে আঘাত করা হয়েছে। এতে রক্তক্ষরন হয়েছে ছাত্রীটির। তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ছাত্রী কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঝাউদিয়া বাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। তার বাড়ি একই ইউনিয়নের মাঝপাড়া গ্রামে। তার বাবা একজন কৃষক। এ ঘটনায় ইবি থানা পুলিশ আশরাফুল ইসলাম নামের একজনকে আটক করেছে। গতকাল শনিবার বিকেলে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় ঝাউদিয়া বাজার এলাকায় এ হামলা চালায় রানা (১৭) নামের এক যুবক। তার পিতার নাম আব্দুল জলিল। বাড়ি ঝাউদিয়া ইউনিয়নের মাঝপাড়ায়। সে সদর উপজেলার লক্ষীপুর খাতের আলীর ডিগ্রী কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। দীর্ঘদিন ধরে সে ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলো। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আহত ছাত্রী জানায়, প্রতিদিনের মত এলাকার বড় ভাই সজলের কাছে শনিবার বিকেলে প্রাইভেট পড়তে যান ঝাউদিয়া বাজারের কালিতলা এলাকায়। সেখানে যাওয়ার পর এলাকার সম্পর্কে দুলাভাই আশরাফুল ইসলাম তাকে দেখা করার জন্য খবর দেন। পড়া শেষে আমি সেখানে গোলাপের হোটেলে দেখা করতে গেলে দেখি বখাটে রানা সেখানে উপস্থিত আছেন। ছাত্রীকে দেখে রানা বলে, তোমার সমস্যা কি? এ সময় আমি বলি, আমার ছবি আপনার ছবির সাথে জোড়া লাগিয়েছেন কেন? আমার ছবিগুলো ডিলিট করে দেন। এ সময় রানা জানতে চান তার সাথে কেন কথা বলিনা। আমি বলি আপনার সাথে আমি কোন কথা বলব না। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে পকেট থেকে ধারালো কিছু বের করে আমার মুখে ও হাতে পোচ মারে। আমার মুখে শেষ করে দিয়েছে। মুখে ৪টি স্থানে আঘাত করে সে। এরপর হাতেও পোচ মারে। দ্রুত আঘাত করেই হোটেলের পেছনে পালিয়ে যায় সে। ওই ছাত্রী বলেন, আমি যখন ক্লাস এইটে পড়ি তখন থেকে সে আমার পেছনে ঘোরে। আমি তাকে পাত্তা দেয়নি, সে কথা শোনে না। এ ঘটনার বিচার চান ওই ছাত্রী। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আশরাফুল আলম বলেন,‘ আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে এক ছাত্রী হাসপাতালে আসে। তার মুখে ও হাতে আঘাত রয়েছে। ব্লেড বা খুর জাতীয় কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। আঘাত গভীর নয়। তাকে চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি রাখা হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তম কুমার সরকার বলেন,‘ বিকেলের দিকে ঘটনা ঘটেছে। আমার স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী সে। এলাকার এক বখাটে ব্লেড দিয়ে তাকে আঘাত করেছে বলে জানতে পেরেছি। আমরা খোঁজ খবর রাখছি। পরিবার থেকে মামলা করার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। এদিকে ঘটনার পর দুলাভাই আশরাফুল ইসলামকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা পুলিশ আটক করেছে। ঘটনার আগে ওই ছাত্রীকে দেখা করতে বলে আশরাফুল। পুলিশের সন্দেহ সেও জড়িত থাকতে পারে। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আন্নুর জায়েদ বলেন,‘ আশরাফুলকে আটক করা হয়েছে। রানা নামের বখাটে যুবককে আটক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পরিবার থেকে এখনো কোন অভিযোগ আসেনি। তারপরও পুলিশ চেষ্টা করছে তাকে আটক করা জন্য।’