করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘এক্সই’ নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাসের নতুন রূপটি ওমিক্রনের বিএ.২ উপ-প্রজাতির তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি সংক্রামক।
আজ শুক্রবার বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের স্ট্যান্ডিং কমিটির ২৭১তম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, সম্প্রতি ভারতে প্রথমবারের মতো শনাক্ত হয়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ‘এক্সই’। মুম্বাইয়ের একজনের শরীরে কোভিড-১৯-এর নতুন ধরন শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ভিসি বলেন, প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, ওমিক্রন রূপের বিএ.১ ও বিএ.২ উপ-প্রজাতির সংমিশ্রণ বা রিকম্বিন্যান্ট মিউটেশনের ফলেই এক্সই ধরনটি সৃষ্টি হয়েছে। এ ভ্যারিয়েন্টের ফলে চীনের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক নগরী সাংহাইয়ের করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। লকডাউন দিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। হংকন তাইওয়ানের অবস্থা তেমন ভালো নয়।
এ অবস্থায় বাংলাদেশের চিকিৎসকসহ সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন বিএসএমএমইউ’র ভিসি ।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা অংশ নেন। সভায় সাংগঠনিক বিষয় ছাড়াও আসন্ন ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত আলোচনা হয়। একই সঙ্গে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত ভিসিদের বরণ করে নেয়া হয়।
সভায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের কোষাধ্যক্ষ ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. শহীদুল রশীদ ভূঁইয়া, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
‘এক্সই’ ভ্যারিয়েন্ট কী?
ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিবন্ধে যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এক্সই ভ্যারিয়েন্টটি করোনার ওতিসংক্রামক ধরন ওমিক্রনের বিএ১ এবং বিএ.২ প্রজাতির সংমিশ্রণে তৈরি হয়েছে।
যখন একজন রোগী কোভিডের একাধিক ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত হন, তখন নতুন ভ্যারিয়েন্টের উদ্ভব হয়। এই ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রেও সেটি ঘটেছে।
গবেষকরা বলেছেন, মানুষের ফুসফুসে প্রবেশের পর প্রতিলিপি তৈরির সময় ভাইরাসের বংশগত উপাদানগুলোর মিশ্রণ ঘটে। আর এই মিশ্রণের মাধ্যমে নতুন ভ্যারিয়েন্ট তৈরি হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, ওমিক্রণের উপধরন বিএ.২’র চেয়ে নতুন রূপান্তরিত এক্সই ভ্যারিয়েন্টটি ১০ শতাংশ বেশি সংক্রামক বলে মনে হয়েছে।
সংস্থাটি বলেছে, প্রাথমিকভাবে বিএ.২ উপধরনের তুলনায় এক্সই ভ্যারিয়েন্টটি ১০ শতাংশ বেশি কমিউনিটি ট্রান্সমিশন ঘটায়। তবে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও গবেষণা দরকার।