1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
এটিএম বুথে পিনকোড সংগ্রহে কর্মচারী চক্র কলসেন্টারে ভোগান্তি | Bastob Chitro24
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪০ পূর্বাহ্ন

এটিএম বুথে পিনকোড সংগ্রহে কর্মচারী চক্র কলসেন্টারে ভোগান্তি

ঢাকা অফিস
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১ মে, ২০২২

ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ব্যাংকের বুথগুলোতে হানা দিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। টাকা লোপাটের পর হিসাবে গরমিল হওয়ায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানতে পারে যে তাদের টাকা খোঁয়া গেছে। ব্যাংকের প্রযুক্তির দুর্বলতায় সারা দেশে সুনাম নষ্ট হবে বলে কোন কোন ব্যাংক তা সহজেই তথ্য প্রকাশ করেন না। তারা শুধু থানায় অভিযোগ দেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো- টাকা লোপাটের ঘটনায় এটিএম বুথের সঙ্গে যারা মেকানিকের কাজে জড়িত এবং ব্যাংকের নিয়োগকৃত যে সব কর্মচারী বুথে টাকা ভরে তারাই জড়িয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল চুরির সঙ্গে। তারা কৌশলে গ্রাহকদের পিন কোড সংগ্রহ করে পরে বুথ থেকে টাকা চুরি করে। এমন কয়েকটি চক্র গড়ে উঠেছে ঢাকায়। তবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
র‌্যাব জানায়, যারা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন, তারা কল সেন্টারে অভিযোগ দিতে গেলে লম্বা লাইনের মধ্যে পড়েন। ৬ থেকে ৭ মিনিট বা কারও ১ ঘণ্টা পর লাইনের সংযোগ পান কোন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব যদি মাদারিপুর জেলায় হয় এবং ওই ব্যক্তি ঢাকার বুথ থেকে টাকা তুলতে যান পরে তার কার্ড যদি এটিএম বুথে আটকা পড়ে বা টাকা যদি না উঠে তাহলে তাকে মাদারীপুরের যে ব্যাংকে একাউন্ট আছে সেখানে যোগাযোগ করতে বলা হয়। এর মধ্যে প্রতারক চক্র টাকা পিনকোড চুরি করে টাকা সরিয়ে দেয়। গত ৬ই মার্চ এমন ৮ জনের একটি চক্রকে ধরেছে র‌্যাব।
এ বিষয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন মানবজমিনকে জানান, ‘এটিএম বুথ থেকে টাকা চুরির ঘটনায় একটি চক্রকে আইনের আওতায় এনেছে র‌্যাব। কোন ব্যাংকের অভিযোগ পেলে আমরা দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
সূত্র মতে, বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথের ব্যবস্থাপনা থার্ড পার্টি বা আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে। থার্ড পার্টি টাকা স্থাপন, নিরাপত্তা, কারিগরি ত্রুটি ইত্যাদি বিষয়টি পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে। সমপ্রতি একটি বেসরকারি ব্যাংকের অডিটে এটিএম বুথের টাকার বেশকিছু গরমিল পরিলক্ষিত হয়। ফলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ থার্ড পার্টি পরিবর্তন করে। তার পরও এটিএম বুথে অনিয়ম ও গরমিল পাওয়া গেলে তারা বিষয়টি র‌্যাবকে জানায়। পরে দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনা হয়।
সূত্র জানায়, চক্রটি এটিএম বুথে টাকা লোড করার সময় লোডিং ট্রেতে টাকা স্থাপনের সময় ১৯টি ১০০০ টাকার নোটের পরপর অথবা অন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ইচ্ছাকৃত ভাবে জ্যাম করে রাখে। যাতে কোনো ক্লায়েন্ট এটিএম বুথে টাকা উত্তোলনের জন্য এটিএম কার্ড প্রবেশ করিয়ে গোপন পিন নম্বর দিয়ে কমান্ড করলে ওই পরিমাণ টাকা ডেলিভারি না হয়ে পার্সবিনে জমা হতো। পরবর্তীতে সেই টাকা এই চক্রের সদস্যরা সরিয়ে নিতো। সূত্র জানায়, দুর্বৃত্তরা টাকা লোড করার সময় বা বুথের মধ্যে সিসি ক্যামেরা ভালো করার তালবাহানায় গ্রাহকের পিন কোড সংগ্রহ করে। পরে ওই গ্রাহক বুথ থেকে চলে গেলে তাদের তৈরিকৃত নকল কার্ড দিয়ে টাকা উত্তেলন করে চলে যায়।
সূত্র জানায়, চক্রটি প্রথমে অনুসরণ করে যে, কারা বেশি টাকা উত্তোলন করে এবং কাদের ব্যাংক হিসাবে মোটা অঙ্কের টাকা জমা আছে। পরে তারা তাদের টার্গেটকৃত গ্রাহকের পিন কোড চুরির পর বুথ থেকে টাকা চুরি করে।
সূত্র জানায়, দুর্বৃত্তরা হুবহু এটিএম কার্ডের মতো নকল কার্ড তৈরি করে। ওই কার্ডগুলোতে একটি গোপন নম্বর দেয়া থাকে। সেই নম্বরও তারা সংগ্রহ করে। এতে তাদের চক্রটি খুবই দক্ষ ও কৌশলী বলে জানা গেছে। এ কাজের সঙ্গে ব্যাংকের ভেতরে ঘাপটি মেরে বসে থাকা কর্মচারী ও কর্মকর্তারা জড়িত। তাদের চিহ্নিত করার জন্য কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ঢাকার একাধিক বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, তারা ব্যাংকগুলোতে নতুন নতুন ডিভাইস বসাচ্ছেন। যাতে টাকা চুরির সঙ্গে সঙ্গে আলার্ম পাওয়া যায়। এছাড়াও সিসি ক্যামেরাকে আরও উন্নত করার জন্য তারা কাজ করছেন। যেসব গ্রাহক টাকা চুরির শিকার হবেন তারা যাতে দ্রুত সেবা পান সে ব্যাপারে কল সেন্টারের সেবা বাড়ানোর জন্য তারা কাজ করছেন। এছাড়াও প্রতারিত গ্রাহকের কল পেলে তার সেবাটি আগে দেয়ার জন্য তারা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি