1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
ঈদ করতে বিদেশ যাচ্ছেন হাজার হাজার বাংলাদেশি | Bastob Chitro24
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৬ পূর্বাহ্ন

ঈদ করতে বিদেশ যাচ্ছেন হাজার হাজার বাংলাদেশি

ঢাকা অফিস
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১ মে, ২০২২

করোনাভাইরাসের মহামারিকালীন সময়ে ভ্রমণের ক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ থাকায় দেশের বাইরে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ যেতে পারেননি। কিন্তু দীর্ঘ দুই বছর পর বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় এবারের ঈদের ছুটিতে বিদেশ ভ্রমণে ছুটছেন বাংলাদেশিরা। এবার ঈদের ছুটি একটু দীর্ঘ হওয়ায় বিদেশ ভ্রমণে আগ্রহ বেড়েছে অনেকের। অবশ্য গত ১০ বছরে দেশের বাইরে ঈদ করা মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এবার অন্তত ৫ লাখ বাংলাদেশি ঈদের ছুটিতে বিদেশ ভ্রমণে যাবেন বলে ধারণা করছে ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলো। এর মধ্যে ভারতে চিকিৎসাসহ ভ্রমণের জন্য বেশির ভাগ বাংলাদেশি যাবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
ট্যুর অপারেটর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত দুই বছর করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রকোপ থাকায় অনেক মানুষ হাঁপিয়ে উঠেছিলেন। চলতি বছর বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় মানুষের মাঝে বিদেশে ভ্রমণে আগ্রহ বেড়েছে। তারা বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই ঈদের ছুটি কাটাতে বাংলাদেশি পর্যটকরা থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া বা সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন। বিত্তবানরা যাচ্ছেন তুরস্কসহ ইউরোপের দেশগুলোতে। তবে হঠাৎ করেই বাংলাদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে জনপ্রিয় হয়েছে মধ্যপ্রাচ্য।
ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি রাফিউজ্জামান রাফি বলেন, এবার ঈদের ছুটি কাজে লাগাতে আমরা বিশেষ প্যাকেজের ব্যবস্থা করেছি ঈদে আমরা কক্সবাজার-সমুদ্র সৈকতে বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ করার ব্যবস্থা করেছি। করোনার বিধিনিষেধ উঠে যাচ্ছে, সেজন্য ট্র্যাভেল বেড়েছে। আমাদের ব্যবসা অনেক বেড়েছে। বাংলাদেশ থেকে অনেক পর্যটক এবারের ঈদে দুবাই, মালদ্বীপ এবং থাইল্যান্ডে যাচ্ছেন।
সংশ্লিষ্টদের মতে, করোনার কারণে ট্যুরিজম ১০০ শতাংশ বন্ধ ছিল। এখন পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে দেখা যাচ্ছে উপচে পড়া ভিড়। ঈদের ছুটিটাও লম্বা, তাই আমরা আশাবাদী। এ বছর প্রায় ৫ লাখ মানুষ দেশের বাইরে ঈদ করতে যাবে। তবে প্রকৃত সংখ্যা এর কিছু কম বা বেশিও হতে পারে। তিনি বলেন, ভারতে আগে আমেরিকান ট্যুরিস্ট বেশি হলেও এখন বাংলাদেশিরা বেশি। এর মধ্যে ভারতীয় ভিসার জন্য একদিনে ১১ হাজার আবেদন পড়েছে। অতিরিক্ত চাপ সামলাতে ভিসা আবেদন জমা দেয়ার বুথ, জনবল বাড়ানোর পাশাপাশি ভিসা আবেদনকেন্দ্রের কর্মঘণ্টা বাড়িয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন। গত তিন বছর ধরে ভারতের পর্যটকদের মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষ পর্যায়ে আছে। এরপর বাংলাদেশের মানুষ বেশি যায় থাইল্যান্ড ও ব্যাংককে। এ বছর সরাসরি মালদ্বীপে যাওয়া যাবে বলে সেখানেও একটা বড় চাপের সম্ভাবনা আছে।
রাজধানীর উত্তর বাড্ডার নাহিদা ইসলাম করোনার আগে ভারতীয় ভিসা নিয়েছিলেন। করোনা শুরু হওয়ায় আর যাওয়া হয়নি। এবার ঈদের ছুটিটা লম্বা বলে সুযোগটা নিতে চান তিনি। বেশ কিছুদিন ধরে শরীরটা ভালো যাচ্ছে না। অনেক ডাক্তার দেখিয়েছেন, কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। তাই চিকিৎসার সঙ্গে বেড়ানোও হবে।
ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ইমরুল কাওসার ইমন বলেন, এমনিতেই ঘুরে বেড়ানো তার বেশ পছন্দ। এবারের ঈদ তিনি থাইল্যান্ডে কাটাবেন। সঙ্গে স্ত্রীও আছে বলে জানান তিনি। তার আশা এবারের ঈদ তার ভালোই কাটবে। ভিন্ন একটি দেশে নিজেদের উৎসব সেলিব্রেট করা আমার কাছে ভালোই লাগে। ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘গুড বাই বাংলাদেশ’।
সমপ্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ছবিতে দেখা গেছে, ঢাকায় ভারতীয় ভিসা সেন্টারের সামনে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভিড় করছে ভিসা আবেদনের জন্য। সড়ক, রেল ও বিমানপথে বহু বাংলাদেশি এরই মধ্যে ভারতে পৌঁছেছেন।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে ঢাকার ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান বলেন, তার জীবনের প্রতিটি ঈদ তিনি গ্রামে করেছেন। ভিন্ন একটি অভিজ্ঞতা নিতে এবারই প্রথম দেশের বাইরে ঈদ উদ্‌যাপনের জন্য এসেছেন। আমি এবং আমার ওয়াইফ আসছি নতুন একটা অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের শিক্ষক সামসাদ নওরীন গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশের শহুরে উচ্চবিত্ত আগে থেকেই ঈদে বিদেশ ভ্রমণ করতো। সে সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে মধ্যবিত্তদের একটি অংশ। মধ্যবিত্তদের অনেকের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। অন্যদিকে ঈদের সময় শহরাঞ্চল থেকে গ্রামে যাবার যে ঝক্কি-ঝামেলা সেটি অনেকেই পছন্দ করেন না। সেজন্য যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো তাদের অনেকে বিদেশে যেতে পছন্দ করেন।
টোয়াবের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. আকবর উদ্দিন আহমেদ বলেন, করোনার কারণে পর্যটন শিল্পে ২০ হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আমরা সরকারি কোনো সহযোগিতা পাইনি। এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে তিনি সরকারের কাছে ১০ বছর ‘ট্যাক্স হলি ডে’র আহ্বান জানান। আর এজন্য সরকারকে পরিকল্পনা করে পর্যটনকেন্দ্রের সংখ্যাও বাড়াতে হবে বলে তিনি মনে করেন।
ইউএস-বাংলার গণসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, মহামারির কারণে ২ বছর ভারতসহ সব পর্যটন ভিসা বন্ধ ছিল। সমপ্রতি বাংলাদেশ থেকে ভিসা দেয়া শুরু করেছে ভারত। এবার নানা কারণে ঈদের সময়ে ৯ দিন টানা ছুটি কাটানোর সুযোগ আছে। ফলে অনেকেই লম্বা ছুটিতে দেশের বাইরে বেড়াতে যেতে আগ্রহী। সহজে ভিসাপ্রাপ্তি, কম সময় যাওয়া-আসা, অল্প খরচের কারণে অনেকের প্রথম পছন্দ ভারত। এবার আমাদের মালদ্বীপেও ফ্লাইট চালু করা হয়েছে। এই রুটেও যাত্রীর বেশ চাপ লক্ষ্য করা গেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি