দেশ-বিদেশে লাগামহীন সোনার দাম। দেশের বাজারে বিক্রি নেমেছে অর্ধেকে। উল্টো অনেক ক্রেতা বিক্রি করছেন স্বর্ণালংকার। এদিকে যেকোনো সময় আবারও দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা বাজুসের।
সভ্যতার ক্রমবিকাশে সোনার ব্যবহার বেড়েছে বহুমুখী। সোনা কখনো অলংকার হিসেবে বাড়িয়েছে নারীর সৌন্দর্য, কখনো বিনিময় মাধ্যম আবার রিজার্ভের অংশ হিসেবে হয়েছে কোনো দেশের সক্ষমতার প্রতীক।
বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিরতার মধ্যে সুদিন ফেরে যে কয়টি ধাতুর, তারমধ্যে অন্যতম সোনা। ২০২৩ সালে বৈশ্বিক মন্দার শঙ্কায় তাই বর্তমানে চাঙা সোনার বাজার।
বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্সের দাম বেড়ে গত এপ্রিলের পর আবারও ছাড়িয়েছে ১৯৫০ ডলার। দাম বাড়ার এই উত্তাপ লেগেছে দেশের বাজারেও। গত তিন মাসে টানা ছয় দফা দাম বেড়েছে সোনার। এক ভরি স্বর্ণালংকারের দাম পৌঁছেছে লাখ টাকার কাছে।
ক্রেতারা বলেন, সোনার দাম বেড়ে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এমনকি উচ্চবিত্তদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে সোনা ক্রয়ে। ভ্যাট ও মজুরি মিলিয়ে অলংকারের দাম প্রায় ১ লাখ টাকার বেশি হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা জানান, সোনার দাম বাড়ার চাপে তাদের বিক্রি নেমেছে অর্ধেকে।
টিকে থাকার জন্য ব্যবসা চালিয়ে যেতে হচ্ছে জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, বেচাকেনা অর্ধেকে নেমে এসেছে। এ ছাড়া ক্রেতাদের মধ্যে পুরোনো সোনা বেচার প্রবণতা বেড়েছে বলেও জানান তারা।
এ অবস্থায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বলছে, বিশ্ববাজারে দাম আরও বাড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে ।
এ বিষয়ে বাজুসের সহসভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, দাম কমতে থাকলে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা ক্রয় অর্ডার দিয়ে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করে। তিন মাস ধরে এ প্রক্রিয়া চলছে।
আর অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিশ্ববাজারে সোনার দামের ঊর্ধ্বগতি অর্থনীতির জন্য দিচ্ছে মন্দ পূর্বাভাস।
অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেন, সোনার দামের ঊর্ধ্বগতি বড় ধরনের বিনিয়োগকে নির্দেশ করছে। আন্তর্জাতিক বড় ব্যবসায়ীরা এখানে বিনিয়োগ করেছে। এ ছাড়া বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আতঙ্কের মধ্যেই এই দাম বাড়ানো হয় বলে জানান তিনি।
গত মার্চ থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ১১ মাসে দেশের বাজারে মোট ২৪ বার সমন্বয় করা হয়েছে মূল্যবান ধাতুটির দাম। এর মধ্যে ১০ বার কমলেও বেড়েছে ১৪ বার।