মোংলা-ঘষিয়াখালী বঙ্গবন্ধু নৌ চ্যানেলে ট্রলারচালকদের খামখেয়ালিপনা আর প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় ইচ্ছেমতো অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই করে নদী পারাপার করছেন চালকরা। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছেন শ্রমিক ও স্থানীয়রা।
মোংলা নদী পারাপারে স্থানীয় যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে মোংলা উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর দাশ সম্প্রতি সময় সংবাদকে বলেন, উপজেলায় দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে বেশ কয়েকবার মোংলা নদীতে যাত্রী পড়ে যাওয়া, মালামাল খোয়া যাওয়া এবং দুর্ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে ট্রলার চালক ও তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে এর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, নদী পারাপার আর যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে দুই পাশে আলাদা ঘাট নির্মাণ করা হবে, আর দুর্ঘটনা রোধে তদারকিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস স্থানীয় প্রশাসনের।
মোংলা নদীর উত্তর পাড়ে স্থায়ী বন্দর এলাকা আর দক্ষিণ পাড়ে পুরাতন বন্দর ও প্রায় দুই লক্ষাধিক লোকের বসবাস। বন্দর এলাকায় রয়েছে ইপিজেড, ইকোনমিক জোন, সিমেন্ট ও গ্যাস ফ্যাক্টরিসহ প্রায় ৫৩টি বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া বন্দরসংলগ্ন মোংলা নদী দিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে নৌপথে যাতায়াতের জন্য একমাত্র রুট মোংলা ঘষিয়াখালী বঙ্গবন্ধু নৌ ক্যানেল।
স্থানীয়রা জানায়, মোংলা থেকে ভাটা-জোয়ারের সময় প্রায় ৪ থেকে ৫ শতাধিকেরও বেশি কার্গো-লাইটার ও গ্যাসের জাহাজ চলাচল করছে। এপার থেকে ওপারে শুধু জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন অন্তত ৩৫ থেকে ৪০ হাজারেরও বেশি যাত্রী ট্রলারযোগে ঝুঁকি নিয়ে এ নদী পার হন। অন্য পেশার আরও কয়েক হাজার মানুষকেও নানা কাজে ঝুঁকি নিয়ে এ নদী পার হতে হয়। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস বা প্রাকৃতিক যত দুর্যোগ থাকুক না কেন সবকিছু মাথায় নিয়েই প্রতিনিয়ত নদী পার হতে হচ্ছে কর্মজীবী নারী-পুরুষের।
অভিযোগ রয়েছে, নদী পারাপারের প্রশাসনের নজরদারি তেমন না থাকায় এবং অনেক সময় তাদের সামনেই অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নদী পারাপার করছেন এসব ট্রলারচালকরা। হয়রানিসহ অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। নদী পারাপারে অনেক যাত্রী ও মোটরসাইকেলসহ মূল্যবান মালামাল নদীতে পড়ে যাওয়ার অনেক ঘটনা ঘটেছে। আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ১৫ জন যাত্রীর স্থলে ৮০ থেকে ৯০ জন যাত্রীবোঝাই করে পারাপার করছে ট্রলার মালিকরা। অনেক চালকরা মানছেন না কোন বাধা বা প্রশাসনের উপস্থিতিও।
মোংলা বন্দর পৌরসভা মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবদুর রহমান বলেন, মোংলা নদী পারাপারে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে নদীর পশ্চিম পাড়ে নতুন ঘাট নির্মাণ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া পূর্ব পাড়ে আরও একটি ঘাট নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন। এ দুটি ঘাট পুরোপুরি চালু হলে সমস্যা আর থাকবে না, তাই নিরাপদে যাত্রী পারাপারে দ্রুত সমাধানের আশ্বাস পৌর কর্তৃপক্ষের।
এ জাতীয় আরো খবর..