গত ১৫ এপ্রিল রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত ছয় বছরের মধ্যে রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
১০ দিনের মাথায় ফের রাজশাহীর তাপমাত্রা স্পর্শ করল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
সোমবার বিকেল ৫টার দিকে দিনের সর্বোচ্চ এই তাপমাত্রা রেকর্ড হয় বলে জানিয়েছেন রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাজীব খান।
তিনি বলেন, গত রোববার রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন শনিবার ছিল ৩৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টি না হলে তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যাবার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পদ্মাপাড়ের শহরটি তীব্র তাপদাহে পুড়ছে এখন। পবিত্র রমজানে এমন তাপদাহে নাভিশ্বাস উঠেছে মানুষের। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে না গরমের কারণে।
মাঝে মাঝেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে এ গরমকে আরো অসহনীয় করে তুলেছে। মানুষ রীতিমতো অস্থির।
এরই মধ্যে রোজা রাখছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
রোদ থেকে বাঁচতে ঘর থেকে রাস্তায় বের হচ্ছেন না অনেকে। তবে রোদের আগুনকে উপেক্ষা করে ঈদের কেনাকাটাসহ প্রয়োজনীয় কাজ করতে বাইরে বের হতেই হচ্ছে অনেককে।
এখন এক পশলা বৃষ্টির আশায় চাতকের ন্যায় আকাশের পানে চেয়ে আছেন রাজশাহীবাসী।
গত বুধবার ভোরে ১৭ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয় রাজশাহীতে। এতে তাপমাত্রা একটু কমে। কিন্তু এর পর থেকে আর বৃষ্টির দেখা নেই। মেঘের দেখা নেই।
সূর্যের প্রখরতায় শনিবার থেকে আবার তাপমাত্রা আবার বাড়তে শুরু করেছে।
সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন শ্রমজীবী, দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষেরা। এই তীব্র তাপদাহ সহ্য করে তাদের রাস্তায় নামতে হচ্ছেই। না হলে উননে আগুন জ্বলবে না।
তীব্র গরমে কাজ করতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। একটু প্রশান্তি পেতে অনেকে ঘর ছেড়ে বাগানে গাছের নিচে আশ্রয় নিচ্ছেন। রিকশাচালকেরাও বসে জিরিয়ে নিচ্ছেন গাছতলায়।
এবারের তাপদাহের তীব্রতা অতিমাত্রায় বলে জানিয়েছেন রাজশাহীর তেরখাদিয়ার বাসিন্দা জান্নাতুল ফেরদৌস।
তিনি যুগান্তরকে জানান, গত কয়েক বছরের চেয়ে এবার বেশি গরম অনুভব করছি। জীবন দুর্বিসহ। ছাতা মাথায় ছাড়া বাইরে বের হতে পারছি না। অসহ্য গরমে শিশুরা বেশি কষ্ট পাচ্ছে। পানিশূন্যতায় যেন না ভুগে তাই ইফতারে তরমুজ আর জুসের ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছি। কিন্তু তরমুজের যে দাম, অনেকের নাগালের বাইরে। এই গরমে হতদরিদ্রদের কথা ভাবলে কষ্ট হয়।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক কামাল উদ্দিন জানান, সাধারণত ৪ এপ্রিলের পর শুরু হয় তাপপ্রাবাহ। এবার পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ার কারণে তাপপ্রাবহ দীর্ঘায়িত হচ্ছে। গত বুধবার রাজশাহীতে মাঝারি মানের বৃষ্টিপাত হলেও তাপপ্রবাহ প্রশমিত হয়নি। দু’একদিনের মধ্যে বৃষ্টির কোন পূর্বাভাসও নেই।