রোজা যত পেরিয়ে যাচ্ছে ইদ ততই এগিয়ে আসছে। আর এ ইদকে সামনে রেখে কুষ্টিয়ার কাপড়ের মার্কেটগুলোতে জমতে শুরু করেছে কেনাকাটা। ছোট থেকে বড় সবাই ছুটছে দোকানে দোকানে। কেউ নিজের জন্য আবার কেউ স্ত্রী-সন্তানের জন্য। কেউবা বোনের জন্য, তো কেউ ভাইয়ের জন্য। আবার কেউ কেউ বাবা-মায়ের জন্য। যদিও দ্রব্যমূল্যের কারণে বাজেট নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ লেগেই আছে তারপরও। কুষ্টিয়া শহরের লাভলী টাওয়ার, পরিমল শপিং কমপ্লেক্স, এন.এস. রোড মার্কেট, বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেট, তমিজউদ্দিন সুপার মার্কেট, আজিজুর রহমান সুপার মার্কেট ও বিপণী বিতান ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই ক্রেতারা ভিড় করছেন। শিশুদের পাশাপাশি মহিলাদের কাপড়ের চাহিদাই বেশি। এবারের ইদে মার্কেটে বেশি বিক্রি হচ্ছে পুষ্পা শাড়ি, থ্রিপিচ ও পাঞ্জাবী, সারারাহ থ্রিপিচ, গরোরাহ থ্রিপিস, শাড়ি ইত্যাদি। বাজারে দেশি থ্রিপিচ ৭০০ থেকে ১২০০ টাকা, জর্জেট থ্রিপিচ ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। লেহেঙ্গা ৩৫০০ থেকে ৭০০০ টাকা, প্রকারভেদে আরও বেশি। দেশি সুতি, টাঙ্গাইল শাড়ি ৬৫০ থেকে ৩০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে ভালো চাহিদা রয়েছে শারারা ও গারারা থ্রিপিচের। এগুলো বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ থেকে ৪৫০০ টাকায়। পাঞ্জাবী বাড়ি ও মিম ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী রানা বলেন, এবার পাঞ্জাবীর কালেকশন বেশ ভালো। ক্রেতাদের চাহিদা মেটানোর জন্য বিপুল পরিমাণ পাঞ্জাবীর সমাহার রয়েছে। পাশাপাশি জিন্স প্যান্টও। এখানে পাঞ্জাবী বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ১১০০ টাকা থেকে ৭-৮ হাজার টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে সিল্ক ৪০০০ থেকে ৪৫০০ টাকা, এনডি কটন/এনডি সিল্ক ৬০০০ টাকা, রাজশাহী সিল্ক ৪০০০-৪২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কুমারখালি বেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী আকতার হোসেন বাবুল বলেন, ইদে নতুন পোশাকের চাহিদার পাশাপাশি ঘরের সৌন্দর্য বাড়াতে বেডশিট ও চাদরের ব্যবহার বাঙালিদের কাছে অপরিহার্য। তাই ইদের আগে শাড়ি লুঙ্গির পাশাপাশি বেডশিট চাদর নানান ধরনের পাপোশ বিক্রিতেও হিড়িক লেগেছে এই দোকানে। তিনি বলেন, গেল কয়েক বছরে করোনার কারণে ভালো ব্যবসা হয়নি, তবে এবারের ইদে বেশ ভালো বেচাকেনা হবে বলে আশা করেন তিনি। তিনি বলেন, এখন যে পরিমাণ কাস্টমার রয়েছে আগামি কয়েকদিনে আরও কাস্টমার বাড়বে। থানা ট্রাফিক মোড়ের আপন বুটিকসের স্বত্বাধিকারী নাজমুন নাহার রীনা জানান, দুই বছর করোনার কারণে কোনো ব্যবসা হয়নি। দুই বছর আগে ব্যবসা শুরু করার পর থেকে ব্যবসা বন্ধ। মাঝে যে কয়েকদিন করেছি তা চাহিদার তুলনায় কিছু না, তাই হতাশায় ভুগছিলাম। আল্লাহর অশেষ রহমতে এবার রমজানের শুরু থেকেই ক্রেতারা আসছেন। বেচা-বিক্রিও ভালো হচ্ছে। তার দোকানে বিশেষ করে শিশু এবং নারীদের জন্য বিপুল পরিমাণের তৈরি পোশাক থ্রিপিচসহ নানান ধরনের কালেকশন রয়েছে এই আপন বুটিকসে। সেখানে কিনতে আসা আলপনা বেগম জানান, আমি এখানে পছন্দ করে একটা জয়পুরি থ্রিপিচ কিনেছি। মেয়ের তৈরি পোশাক ৬শ টাকা এবং একটা জয়পুরি থ্রিপিচ সাড়ে ৮শ টাকায় পেয়েছি। দরদামে বেশি চায়নি, যার কারণে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই কেনাকাটা করতে পেরেছি এই দোকান থেকে। সাজিদ ফ্যাশনের স্বতাধিকারী মো. অপু বলেন, করোনার রেশ কাটিয়ে এবার রমজানের শুরু থেকে ক্রেতারা আসছেন। কেউ কিনছে কেউ পছন্দ করে দাম জেনে যাচ্ছে। বিক্রিও মোটামুটি হচ্ছে। ইয়াং জেনারেশনের পছন্দসই পোশাক তুলতে হয়েছে এবারের ইদে। পাঞ্জাবী, শার্ট ও প্যান্টের ব্যবসা আমার। আরও বেশ কিছুদিন ব্যবসা করার সুযোগ পাবো। এদিকে নির্বিঘ্নে ব্যবসা পরিচালনা করতে যথাযথ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছেন বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাব্বিরুল আলম।