ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) দায়িত্ব আর সামলাতে দেখা যাবে না সৌরভ গাঙ্গুলিকে। বোর্ড প্রেসিডেন্ট থেকে সরে যাওয়ার পরে কী করবেন, তা নিয়ে হাজার জল্পনা গত কয়েক দিন ধরেই ভাসছিল। আপাতত ওই সবের অবসান হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, মহারাজের জন্য বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার (আইসিসি) দরজা এখনো খোলা। আগামী বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) মনোনয়ন। আইসিসিতে না হলে বাংলা ক্রিকেট সংস্থার নির্বাচনের (সিএবি) জন্য মনোনয়ন জমা দেবেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক। তবে আগামী শনিবার (২২ অক্টোবর) সিএবিতে তিনি জমা দিতে পারেন মনোনয়ন।
আগামী ৩১ অক্টোবর সিএবির নির্বাচন। অন্যদিকে, ভারতীয় বোর্ডের সমর্থন ছাড়া যে আইসিসির চেয়ারম্যান হওয়া অসম্ভব, তা নিয়ে কোনো দ্বিধা নেই সংশ্লিষ্ট মহলের। বিশ্বের অন্যতম ধনী ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের সমর্থন না থাকলে কোনোভাবেই আইসিসির শীর্ষ পদে বসা সম্ভব নয়। ফলে খাতায়-কলমে সুযোগ থাকলেও আদতে যে সেই সম্ভাবনার বিসর্জন হয়ে গেছে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
আগামী মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বোর্ডে শেষবারের মতো প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসবেন সৌরভ। তারপর দায়িত্ব তুলে দেবেন নতুন সভাপতি রজার বিনিকে। এরপর সৌরভের গন্তব্য কোথায়? তা নিয়ে জোরকদমে আলোচনা চলছিল। সে আলোচনার ইতি করলেন সৌরভ নিজেই। পরিষ্কার করে দিলেন, তার সিদ্ধান্তের কথা।
শনিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে নিজেই জানিয়ে দিলেন তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। সিএবিতে এসে সাফ বলে দিলেন, ‘আমি সিএবি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছি। কোনো রকম সমঝোতা নয়, যা লড়াই হবে, নির্বাচনে হবে।’
বারবারই অভিযোগ, সৌরভ গাঙ্গুলি নির্বাচনে অতীতে কখনো জেতেননি। কখনো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কখনো বা দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাহায্য নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। সম্প্রতি সিএবির সাবেক সচিব বিশ্বরূপ দে বিবৃতি দিয়েছিলেন, নির্বাচনে না জিতে এভাবে ক্ষমতায় আসা সৌরভের মতো ব্যক্তিত্বের জন্য সম্মানজনক নয়।
আর তাই এবার সৌরভ স্পষ্ট করে বললেন, ভেবেছিলাম সিএবি প্রেসিডেন্ট হব না। কিন্তু বাইরে থেকে দেখলাম যা-যা চলছে, তাতে সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললাম। এবার সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। দেখা যাবে কী হয়।
এর আগে ২০১৫ সালে সৌরভ সিএবির প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন, কিন্তু নির্বাচন হয়নি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে মনোনীত হয়ে সিএবিতে পা দিয়েছিলেন মহারাজ। তবে এবারের পরিস্থিতি কিন্তু তেমন নয়, খুব ভালো করেই জানেন সৌরভ। তবুও নাছোড় মনোভাব নিয়েই ক্রিকেট প্রশাসনে টিকে থাকার লড়াইয়ে নামছেন তিনি।