রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকার দশ তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী। আত্মহত্যার আগে চিরকুটে তিনি মৃত্যুর জন্য নিজের বাবাকে দায়ী করেন। গত শনিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। দক্ষিণখান থানা এসআই রেজিয়া খাতুন জানান, ওই শিক্ষার্থীর রেখে যাওয়া চিরকুটে লেখা, আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী আমার বাবা। একটা ঘরে পশুর সাথে থাকা যায়, কিন্তু অমানুষের সাথে না। একজন অত্যাচারী এবং রেপিস্ট যে কাজের মেয়েকেও ছাড়ে নাই। আমি তার করুণ ভাগ্যের সূচনা।
তিনি আরো বলেন, বাসার ছাদ থেকে ওই ছাত্রী নিচে লাফিয়ে পড়ে আহত হন। পরে তার পরিবারের লোকজন মিরপুরের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
স্থানীয়রা জানান, ১০ তলা ভবনের সাত তলায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন ওই ছাত্রী। তার রুমের বিছানার একটি বালিশের নীচ থেকে তার পরিবারের সদস্যরা নিহতের হাতের লেখার (প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত) একটি চিঠি বের করে দেয়। সেই চিঠিতেই আত্মহত্যার জন্য বাবাকে দায়ী করেন ওই ছাত্রী। ঘটনার পরপরই তার বাবা পালিয়ে যান।
তাকে হত্যা করা হয়েছে: অন্যদিকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেননি, তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন সহপাঠীরা। গতকাল রোববার মহাখালীতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধনে এ দাবি করেন তারা। মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘হত্যার বিচার চাই’, ‘আত্মহত্যা নয়, হত্যা’ লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
নিহতের সহপাঠীরা বলেন, একজন মানুষ ১২তলা থেকে পড়ে গেলে তার শরীর থেঁতলে যাওয়ার কথা। আমরা তার লাশ দেখেছি। তার শরীরে সে রকম কিছু হয়নি। তার শরীরে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখার চিহ্ন ছিল। তাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।
আরেক সহপাঠী অর্ণব দেব বলেন, তার বাবা শাহিন ইসলাম দুটি বিয়ে করেছেন। শাহিন ইসলাম দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে আলাদা থাকতেন। আমাদের সহকর্মী দুই ভাই–বোন নিয়ে তার মায়ের সঙ্গে থাকতেন। তার বাবা মাঝেমধ্যে তাদের বাসায় এসে তার মাকে মারধর করতেন। বিভিন্ন সময়ে এর প্রতিবাদ করায় তাকেও মারধর করা হতো। গত ঈদের আগে তার বাবা মেরে তার হাতের আঙুল ভেঙে দেন। এ ঘটনায় থানায় জিডিও করেছিলেন তার মা। আর কোনো দিন তঁর গায়ে হাত তুলবে না, এমন আশ্বাস দেয়ার পর ওই জিডি তুলে নেয়া হয়।