টানা দুই সপ্তাহের তাপপ্রবাহের পর গতকাল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শ্রাবণের বৃষ্টির দেখা মিলেছে। অসহ্য গরমের পর এই বৃষ্টি মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে। গত দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে প্রকৃতি ছিল উত্তপ্ত। ভরা বর্ষায়ও ছিলনা বৃষ্টি। বিভিন্ন জেলায় বইছিল তাপপ্রবাহ। এতেমানুষ চাতক পাখির মতো আকাশের দিকে বৃষ্টির আশায় তাকিয়ে ছিল। মাঝে মাঝে কোথাও কোথাও সামান্য বৃষ্টি হলেও তাতে কমেনি গরম। দুর্বিষহ গরমে দেশবাসীর নাকাল অবস্থা। অবশেষ শ্রাবণের ৫ম দিনে মুষলধারে বৃষ্টি এলো রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। তবে এক ঘণ্টার স্বস্তির বৃষ্টিতে রাজধানীবাসীকে চার ঘণ্টা ভোগান্তি পোহাতে হয়।
সকাল থেকে আকাশ কিছুটা মেঘলা ছিল। বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীতে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। ঘণ্টাখানেকের বৃষ্টিতে ঢাকার বিভিন্ন রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। এতে পথচারীরা চরম বিপাকে পড়েন। বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা খোঁড়াখুড়ি এবং যত্রতত্র ময়লা ও পলিথিন ফেলার কারণে রাজধানীর ড্রেনেজ ব্যবস্থা অনেকটা বিকল হয়ে পড়ে আছে। এর ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। এসব রাস্তার পানি ড্রেন দিয়ে নিষ্কাশনের বদলে উল্টো ড্রেন থেকে সুয়ারেজের ময়লা পানি যুক্ত হয় সড়কে। এতে মুনুষের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। পানিতে তলিয়ে যাওয়া রাস্তায় গাড়ি চলতে গিয়ে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। পানি গাড়ি চলে ধীরগতিতে, এজন্য প্রচন্ড যানজটের সৃষ্টি হয়।
বাসায় ফিরতে ময়লা পানির সামনে দাঁড়িয়ে রিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তেজগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, এখান থেকে আমার বাসা দেখতে পাচ্ছি। তবুও এই ময়লা পানি দিয়ে হেঁটে যাওয়া সম্ভব নয়। শুধু বৃষ্টির পানি হলে কথা ছিল, এখানে ড্রেন থেকে ময়লা পানি যুক্ত হচ্ছে। এখন বাধ্য হয়ে দুই মিনিটের সড়ক পার হতে রিকশা নিতে হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হওয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় সব বিভাগেই বৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে ফেনীতে। এ সময়ে ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে ২ মিলিমিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে থাকা ৪৩টি বৃষ্টি পরিমাপক পয়েন্টের মধ্যে ৩৬টিতে বৃষ্টি হয়েছে। আরো দুয়েকদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।