যাতায়াত দুর্যোগের কারণে এতদিন দেশি-বিদেশি পর্যটকদের মূল গন্তব্য ছিল কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও সিলেটের দিকে। অথচ দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম পর্যটন স্পট সুন্দরবন, কুয়াকাটা বা ষাটগম্বুজ মসজিদে পর্যটক আসার ক্ষেত্রে মূল বাধা ছিল যাতায়াত দুর্ভোগ। বিশেষ করে পদ্মা নদী ও এর ‘হিংস্রতা’। যাতায়াতের দুর্ভোগের কারণে অনেক পর্যটক সুন্দরবন-কুয়াকাটামুখী হতেন না। আর পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশের পর্যটন সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। শুধু অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ নয়, পর্যটন খাতেও অপার সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। যোগাযোগের বিস্ময়কর এই সাফল্য শুধু পদ্মার দুপাড়েই নয়, গোটা দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে পুরো বাংলাদেশকে যুক্ত করছে এক সুতোয়। সেতুর সুবাদে দেশের গোটা দক্ষিণাঞ্চলই হয়ে উঠেছে পর্যটনের উর্বরভূমি। স্বপ্নের সেতুকে ঘিরে মানুষের তাই অন্যরকম অনুভূতি ও উচ্ছ্বাস। বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাংলার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন পূরণের অনন্য এক নিদর্শন তো বটেই সঙ্গে ওই অঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থানের নতুন এক সম্ভাবনাও। এই সেতু পাল্টে দেবে দেশের পর্যটন মানচিত্র। এছাড়া পদ্মা সেতুকে ঘিরে পদ্মার দুই পাড়ে সিঙ্গাপুর ও চীনের সাংহাই নগরের আদলে স্যাটেলাইট সিটি গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে সরকার। সেতু ঘিরে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও কনভেনশন সেন্টারও গড়ে উঠবে। ইতোমধ্যে গড়ে ওঠা আবাসন প্রকল্পগুলোকে আকর্ষণীয় দৃষ্টিনন্দন করার ভাবনাও রয়েছে। তাছাড়া সুপরিকল্পিতভাবে আধুনিক মানের হোটেল-মোটেল রিসোর্ট গড়ে তোলার কথাও বলা হচ্ছে। এসব দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো, স্থাপনা, আবাসন পর্যটন খাতের চেহারা পাল্টে দেবে।
আর পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পর্যটকদের ভিড় কয়েকগুণ হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই পর্যটন সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা নেয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। পর্যটন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুধু পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করেই নেয়া হচ্ছে নানা পরিকল্পনা।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সিইও আবু তাহের মো. জাবের বলেন, পর্যটন ঘিরে আমরা সারা দেশের জন্য মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করছি। যেটা ডিসেম্বরে শেষ হবে। ইতোমধ্যে সারা দেশে এগারোশ’ স্পট নিয়েও মাস্টারপ্ল্যান করেছি। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গার আর্কিটেকচারাল, স্ট্রাকচারাল এবং ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যানও করেছি। তারই ভিত্তিতে কিছু এ্যাকশন প্ল্যান হচ্ছে। এতে খুলনা এবং বরিশাল অঞ্চলকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু কেবল সেতু নয়, এটা আমাদের স্বপ্ন। পদ্মা সেতু ঘিরে ট্যুরিজমের ক্ষেত্রে অভাবনীয় পরিবর্তন ঘটে যাবে। অর্থনীতিতে পড়বে এর বিশাল প্রভাব।
আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও তৈরী পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সাবে সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, সেতু নির্মাণ পরিকল্পনা আর কাজ শুরুর পর থেকেই পদ্মার পাড় ও সেতুর আশপাশে ব্যবসায়ীরা পর্যটনকেন্দ্র, শিল্প পার্ক তৈরির পরিকল্পনা করেছে। ইতোমধ্যে চেহারা বদলাতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু শুধু অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ নয়, পর্যটন খাতেও অপার সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। যোগাযোগের বিস্ময়কর এই সাফল্য গোটা দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে পুরো বাংলাদেশকে যুক্ত হচ্ছে এক সুতোয়। সেতুর সুবাদে কুয়াকাটা, সুন্দরবনসহ দেশের গোটা দক্ষিণাঞ্চলই হয়ে উঠবে পর্যটনের উর্বরভূমি।
সূত্র মতে, গত শনিবার পদ্মা সেতুতে যানচলাচল উদ্বোধনের মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর জেলার জাজিরাসহ দক্ষিণাঞ্চল ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যান্য জেলার সাথে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এক যোগসূত্র স্থাপন হয়েছে। আর এটি সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিল্প বিকাশের অনন্য অবদান রাখবে। পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সাথে সংযোগ স্থাপন করবে। ওইসব জেলায় ভ্রমণ সময় চার থেকে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত কমিয়ে দিচ্ছে। এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন বাস্তব। ঢাকার সাথে মংলা বন্দর, বরিশাল, কুয়াকাটা, পায়রা বন্দর, খুলনা, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যান্য জেলার অর্থনৈতিক খাতে এক নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। পদ্মা সেতুর ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৩ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হবে।
পদ্মা সেতু কেন্দ্রিক পরিকল্পনার বিষয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন সূত্র জানায়, এই রুটে এখন অত্যাধুনিক ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন নতুন যানবাহন চালু হবে। পদ্মার ওপারে একাধিক বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। বাগেরহাটের খান জাহান আলী বিমানবন্দরের কাজও দ্রুত শুরু করবে সরকার। এর ফলে সুন্দরবন, কুয়াকাটা, পায়রা বন্দর, মোংলা মন্দরে জমজমাট পর্যটন স্পট গড়ে উঠবে। পাশাপাশি বরিশাল, পটুয়াখালী, চুয়াডাঙ্গা, খুলনা, বরগুনা, পটুয়াখালী, গোপালগঞ্জসহ দক্ষিণাঞ্চল ঘিরে গড়ে উঠবে বিশাল পর্যটন নগরী।
কুয়াকাটার পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যারা কোনো না কোনোভাবে জড়িত, তাদের কাছে পদ্মা সেতুর হিসাবটা সহজ। কেবল কুয়াকাটা নয়, সুন্দরবনকেন্দ্রিক ট্যুর অপারেটররাও বলছেন, পদ্মা সেতু হলে দক্ষিণ-পশ্চিমে পর্যটকদের ভিড় বহুগুণে বাড়বে। ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেও সামগ্রিক প্রস্তুতির অনেক কিছুই বাকি। পর্যটকদের মানসম্মত সেবা দেয়ার মতো পর্যাপ্ত অবকাঠামো এখনো গড়ে ওঠেনি। পর্যটন বোর্ডের পরিচালক আবু তাহের মুহাম্মদ জাবেরও তা মানছেন। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এখন পর্যটকরা ব্যাপকভাবে বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলে যাবেন। এসব জায়গায় সরকারের বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে, কিন্তু বেসরকারি বিনিয়োগটাকে আমরা বেশি আকৃষ্ট করার চেষ্টা করব। এটাই আমাদের এখনকার মতো প্রস্তুতি। আর তাই এতদিন ছুটির দিনে যাদের দৌড় ছিল বড়জোড় মাওয়া ঘাটের ইলিশ পর্যন্ত, তারা এখন ছুটির দিনটা কুয়াকাটার সৈকত কিংবা সুন্দরবনে কাটানোর পরিকল্পনা করতেই পারেন।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতের আবাসিক হোটেলগুলোতে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত এবং রেস্তোরাঁগুলোতে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়ের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এ ছাড় আগামী ৬ জুলাই পর্যন্ত চলবে। কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ এ তথ্য জানান। পদ্মা সেতু চালুর পর ইতোমধ্যে পর্যটকের সংখ্যাও বেড়েছে।
সিলেটের বাসিন্দা দেওয়ান তানভির। চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকেন। দীর্ঘদীনের ইচ্ছে ছিল পরিবার নিয়ে কুয়াকাটায় যাবেন। যাতায়াত দুর্ভোগের কারণে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। অবশেষে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় চরম উৎসাহে গত সোমবার পরিবার নিয়ে তিনি কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন। শুধু তানভিরেরই নয়; স্বপ্নের সেতুকে ঘিরে মানুষের তাই অন্যরকম অনুভূতি ও উচ্ছ্বাস।
রুহুল আমীন একটি বেসরকারি ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট। ছুটির দিনে কর্মব্যস্ত শহরের বাইরে গিয়ে গায়ে একটু খোলা হাওয়া লাগাতে পারলে তার ভালোই লাগে। তাই প্রায়ই পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে গাড়ি চালিয়ে ঢাকার আশপাশে যান। তিনি বললেন, মাঝে-মধ্যে রাতে বন্ধুদের সঙ্গে মাওয়াও যাই। তবে এবার হয়ত কুয়াকাটা কিংবা অন্য কোথাও যেতে পারব।
পদ্মা সেতু দেশের পরিবহন নেটওয়ার্ক এবং আঞ্চলিক উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর দুই পাড় পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক পদ্মার দুই পাড়ে নান্দনিক সৌন্দর্য দেখার জন্য ঘুরতে যাচ্ছে। মাওয়া ও শরীয়তপুর প্রান্তে রেস্টুরেন্ট, রিসোর্ট, হোটেল-মোটেলসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট নানাবিধ প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। পদ্মা সেতুর ল্যান্ডিং পয়েন্ট জাজিরায় তাঁত পল্লী প্রতিষ্ঠার কাজ চলমান ও খ্যাতনামা দেশীয় অনেক প্রতিষ্ঠান এসব এলাকায় বিনিয়োগ করছে যা উক্ত অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে। পর্যটনের বিকাশে পদ্মাপাড়ে হোটেল-রিসোর্ট করার কথা বলছেন বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহাবুব আলীও। তিনি বলছেন, পদ্মা পাড়ে রিসোর্ট স্থাপনের জন্য সুবিধা দেয়ার চিন্তা আছে। হোটেল সোনারগাঁর মতো চেইনগুলোর শাখা যেন সে পর্যন্ত বর্ধিত হতে পারে, সে চিন্তাও করা হচ্ছে।
পদ্মা সেতু চালুর মধ্য দিয়ে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পর্যটনশিল্পের বিকাশ ঘটার সম্ভাবনা দেখছেন এ খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, দেশের পর্যটনের মানচিত্র পাল্টে দেবে পদ্মা সেতু। দ্রুততম সময়ে যাওয়া যাবে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন ও সাগরকন্যা কুয়াকাটা। লঞ্চে পটুয়াখালী হয়ে কুয়াকাটা পৌঁছাতে সময় লাগে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা। তবে পদ্মা সেতু হয়ে গেলে অর্ধেক সময়েই পৌঁছানো যাবে। গত বছর পটুয়াখালীর লেবুখালী সেতুর উদ্বোধন হওয়ায় এ যাতায়াত আরো সহজ হয়েছে। বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবন, ষাটগম্বুজ মসজিদসহ বাগেরহাট ঘিরে পর্যটনশিল্পে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখছেন তারা। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকার ও বন বিভাগকে সমন্বিত ও কার্যকর কর্মপরিকল্পনা নিলে এর গতি আরো তরান্বিত হবে।
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ বলছেন, বর্তমানে কুয়াকাটার সব হোটেল-রিসোর্ট মিলে ১৫ হাজার মানুষের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। সেগুলোর সবগুলোই মোটামুটি ব্যবসা করে আসছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় কয়েক ঘণ্টা দূরত্বের কুয়াকাটায় আরো বেশি মানুষ আসা শুরু করেছে। এজন্য এখানে কয়েকটি দেশীয় ও বহুজাতিক সংস্থা হোটেল-রিসোর্টের কাজ অনেক আগেই শুরু করেছে। কিছু দিনের মধ্যে সেগুলোও চালু হয়ে যাবে।
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) সভাপতি শিবলুল আজম কোরেশি বলেন, পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ছোট ছোট অসংখ্য পর্যটন স্পট তৈরি হয়েছে। অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি পটুয়াখালী জেলাকে বলা হয় সাগরকন্যা। বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এ জেলারই ঐতিহ্য বহনকারী বেলাভূমি। একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার এই পর্যটন স্পটটি আগামীতে দক্ষিণাঞ্চলকে গোটা বিশ্বের মাঝে দেশকে ঈর্শ্বনীয় পর্যায়ে নিয়ে যাবে। একমাত্র কুয়াকাটা এসেই সাগরের নানা রূপ বিভিন্ন ঋতুতে উপভোগ করা সম্ভব।
সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটকদের জন্য দুটো জাহাজ পরিচালনা করে পাগমার্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস। এর স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, পদ্মা সেতু হওয়ায় খুলনা পর্যন্ত যাত্রার সময় অর্ধেক হয়ে যাবে। মানুষ হয়ত গাড়িতে খুলনা বা মাংলা পর্যন্ত গিয়ে ছুটির দু’দিনেই সুন্দরবনটা একটু ‘ঢু মেরে’ আসতে চাইবেন। তিনি পর্যটনখাতে সামনে বড় সম্ভাবনা দেখছেন। তবে এক্ষেত্রে তিনি নিদর্দিষ্ট পরিকল্পনামাফিক আগানোর কথা বলেন। নজরুল ইসলাম মনে করেন, যতটা দরকার ততটা অবকাঠামো গড়ে তোলা বেসরকারি ট্যুর অপারেটরগুলোর পক্ষে ‘অসম্ভব’। সুতরাং সরকারকে এগিয়ে আসতেই হবে।
এ বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেছেন, পদ্মা সেতু দেশের অর্থনীতির জন্য একটি আশীর্বাদ হিসেবে দেখা দেবে। এর ছোঁয়া লাগবে অর্থনীতির সব খাতে। বিশেষ করে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে পদ্মা সেতুকে ঘিরে। তবে এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে দরকার সঠিক পরিকল্পনা। আমাদের দেশে যেটি দেখা যায়, সঠিক পরিকল্পনার অভাবে অনেক সম্ভাবনার মৃত্যু ঘটে। পদ্মা সেতুকেন্দ্রিক পর্যটনের সম্ভাবনাগুলোর যেন মৃত্যু না ঘটে তার জন্য সরকারের পদক্ষেপ বেশি নিতে হবে। উদ্যোক্তারা যাতে নির্বিঘ্নে ও স্বাচ্ছন্দ্যে বিনিয়োগ করতে পারেন তার ক্ষেত্র তৈরি করে দিতে হবে সরকারকে।