1. rashidarita21@gmail.com : bastobchitro :
সিলেটে দুর্গন্ধ, সুনামগঞ্জ, বালাগঞ্জে তাঁবুর নিচে বাস | Bastob Chitro24
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৮ অপরাহ্ন

সিলেটে দুর্গন্ধ, সুনামগঞ্জ, বালাগঞ্জে তাঁবুর নিচে বাস

ঢাকা অফিস
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৮ জুন, ২০২২

সিলেট- সুনামগঞ্জের বন্যার পানি নামছে ধীর গতিতে। বিস্তীর্ণ এলাকা এখনো পানির নিচে। ডুবে আছে সড়ক, বাড়িঘর। ঘরে পানি ওঠায় অনেক মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন আশ্রয়কেন্দ্রে। আশ্রয়কেন্দ্রে যাদের ঠাঁই হয়নি তারা আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন উঁচু সড়কে। সড়কেই ত্রিপল, পলিথিন আর বাঁশ দিয়ে
তৈরি করা তাঁবুতে বসবাস করছেন তারা। রয়েছে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানির সংকট। পানি না কমায় অস্থায়ী আশ্রয় থেকে ঘরে ফিরতে পারছেন না এসব মানুষ। এ ছাড়া যেসব এলাকায় পানি কিছুটা নেমেছে সেখানেও শুরু হয়েছে নতুন দুর্ভোগ। পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে। চারদিকে পচা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। নোংরা পানি বাসা-বাড়িতে থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে জিনিসপত্র। সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী তাঁবুতে বসবাস করছেন অনেক মানুষ। মহাসড়কে থাকায় তাদের অনেকে ত্রাণ দিচ্ছেন। এসব মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পানি না কমায় তারা বাড়িতে ফিরতে পারছেন না।

 

দশদিন ধরে পানিবন্দি রয়েছেন সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলাবাসী। পানিবন্দি মানুষদের যা ত্রাণসামগ্রী দেয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া মানুষের বাইরে আজিজপুর বাজারসহ বাজারের আশপাশে তাঁবু বানিয়ে আরও প্রায় দুই-আড়াইশ’ পরিবার গবাদিপশু নিয়ে একসঙ্গে বসবাস করছেন। ওদিকে বন্যায় ভাসছিল সিলেট নগরের গোটা উপ-শহর। কয়েক হাজার বাসাবাড়িতে ছিল পানি। রাস্তাঘাট ছিল পানির নিচে। বিদ্যুৎ, গ্যাস সংযোগ ছিল না। বসবাস করাই ছিল দায়। এ কারণে উপ-শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন হাজার হাজার বাসিন্দা। প্রায় দুই সপ্তাহ পর পানি নেমেছে উপ-শহরের। দু’-একটি সড়ক ছাড়া সব ভেসে উঠছে। মানুষ বাসা-বাড়িতে ফিরতে শুরু করলেও নতুন সংকট চারপাশে উৎকট গন্ধ।

সিলেটে দুর্গন্ধ দুর্ভোগ চরমে
বন্যায় ভাসছিল নগরের গোটা উপ-শহর। কয়েক হাজার বাসাবাড়িতে ছিল পানি। রাস্তাঘাট ছিল পানির নিচে। বিদ্যুৎ, গ্যাস সংযোগ ছিল না। বসবাস করাই ছিল দায়। এ কারণে উপ-শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন হাজার হাজার বাসিন্দা। প্রায় দুই সপ্তাহ পর পানি নেমেছে উপশহরের। দু’-একটি সড়ক ছাড়া সব ভেসে উঠছে। ঘরে ফিরছে মানুষ। গোটা উপ-শহরজুড়ে এখন ফের জেগে ওঠার লড়াই চলছে। গতকাল রোজভিউ’র সামনের গলি দিয়ে ভেতরে ঢুকতে নাকে ভেসে এলো উৎকট গন্ধ। দম বন্ধ হওয়ার অবস্থা। টিকে থাকা দায়। ভেতরে যতই ঢোকা হলো ততই গন্ধ আরও তীব্র হলো। পঁচা গন্ধ। বাসা, বাড়ি, ড্রেন সবখান থেকেই বাতাসে ভেসে আসছে গন্ধ। উপ-শহরজুড়ে দুর্গন্ধ এখন নতুন সমস্যা। যারা বাড়ি ফিরছেন, তারা বাসা বাড়ি পরিষ্কার করছেন। রোদে শুকাচ্ছেন ভিজে যাওয়া জিনিসপত্র। সেখান থেকেও আসছে গন্ধ। স্থানীয় কাউন্সিলর সালেহ আহমদ সেলিম। তার বাসার নিচ তলায় ছিল বুক সমান পানি। গতকাল থেকে বাসার নিচতলা ধোয়া-মোছার কাজ শুরু করেছেন। অফিসেও ছিল পানি। আসবাবপত্র ভাসিয়ে নিয়ে গেছে বন্যা।

অনেক মালপত্র ভিজে গেছে। মানবজমিনকে সেলিম জানালেন- এ দৃশ্য কেবল আমার নয়। গোটা উপ-শহরের সব মানুষের। শতকরা ৯৮ ভাগ বাসার নিচ তলা পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল। কোনো কিছু উদ্ধার করা যায়নি। এসব জিনিসপত্র পচে এখন গন্ধ ছড়াচ্ছে। এখনো তিনটি রোডে পানি। রোববার থেকে সিটি করপোরেশনের দু’টি গাড়ি পরিষ্কার শুরু করেছে। একটু সময় লাগবে; পরিষ্কার হয়ে গেলে দুর্গন্ধ কমে যাবে। তিনি জানান- ইতিমধ্যে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে; যাদের ময়লা আছে, তারা যেন বাসার সামনে রাখেন। সিটির কর্মীরা সেগুলো পরিষ্কার করবেন। বন্যায় মানুষ ছিলেন এক ধরনের দুর্ভোগে। এখন নতুন করে আরেক ধরনের দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বলে কাউন্সিলর সেলিম নিজেই জানালেন। বন্যার পানি উঠে যাওয়ায় টানা দুই সপ্তাহ বাড়ির বাইরে ছিলেন রাজনীতিবিদ মালেক খান। গতকাল সকালে ডি- ব্লকের বাসায় ফিরেন। বন্যায় নিচতলা পুরোটাই তছনছ হয়ে গেছে। পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল আসবাসপত্র। সবকিছু ভিজে পচে গেছে। পানিতে ভিজে গেছে বইপত্র। গতকাল বিকালে মালেক খান জানালেন- নিচতলার সব ভিজে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে কোনো দুঃখ নেই। তার সংগ্রহে মুক্তিযুদ্ধের অনেক বই ছিল।

সেগুলো পানিতে ভেসে গেছে। অনেক নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলোর জন্য আফসোস করছেন মালেক খান। এফ-ব্লকের বাসিন্দা কামাল আহমদ জানালেন- বৃদ্ধা মাকে নিয়ে তিনতলায় ছিলেন। ১৩ দিন পর নিচ তলা খুললেন। সব নষ্ট হয়ে গেছে। চারদিক থেকে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এভাবে দুর্গন্ধ থাকলে উপ-শহরে বসবাস করা দায় হয়ে পড়বে বলে জানান তিনি। শুধু উপ-শহরই নয়, এবারের প্রলয়ঙ্করী বন্যায় নগরীর প্রায় অর্ধেক এলাকা পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তালতলা এলাকা। গতকাল ১৩ দিন পর গতকাল পানি নেমেছে। গোটা তালতলাজুড়ে এখন দুর্গন্ধে ভরা। পাশের ছড়ার পানি থেকে দুর্গন্ধ ভেসে আসছে। ব্যবসায়ীরা মুখে কাপড় গুঁজে ব্যবসা করছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ী কামরুল জামান জানিয়েছেন- তালতলায় সবার আগে পানি উঠে। সবার পড়ে নামে। এ কারণে যত ময়লা-আবর্জনা আছে সব এখানে এসে জমা হয়েছে। এখন গোটা এলাকা দুর্গন্ধময়।

পার্শ্ববর্তী জামতলার অবস্থাও একই। কাজিরবাজার তোপখানায়ও ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। পচা গন্ধে মানুষ পড়েছে স্বাস্থ্য ঝুকিতে। বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটও তীব্র হয়েছে। ফলে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে ঘরে ফেরা ওই এলাকার মানুষজন পড়েছেন নতুন সংকটে। স্থানীয় রুবেল আহমদ জানিয়েছেন- তোপখানা এলাকার হাজারো ঘরবাড়ি ছিল পানির নিচে। পানি নেমে যাওয়ার কারণে এখন ড্রেন, খাল ময়লার ভাগাড়। পানিতে ভেসে যাওয়া জিনিসপত্র এখন জমা হচ্ছে ড্রেন ও খালে। এ কারণে উৎকট গন্ধ ছড়াচ্ছে। এই গন্ধের কারণে এখন বাসা বাড়িতে বসবাস শুরু করা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি। স্থানীয় কাউন্সিলর শান্তনু দত্ত সন্তুও জানিয়েছেন দুর্গন্ধের কথা। তিনি জানান- সিটি করপোরেশন থেকে ৮ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। তোপখানার এসিল্যান্ড গলি পরিস্কার করা হয়েছে। মীর্জা জাঙ্গালের আশ্রয়কেন্দ্রও পরিষ্কার করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব এলাকা পরিস্কার করা হচ্ছে। নগরীর ১২ ও ১০ নং ওয়ার্ডের কয়েকটি এলাকা থেকে পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়  লোকজন জানিয়েছেন- পানিতে স্যুয়ারেজ লাইন, ড্রেনের ময়লা সব একাকার হয়ে গিয়েছিলা। এ কারণে পানি কমার সঙ্গে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

এতে করে মানুষের মধ্যে নতুন করে দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে বলে জানিয়েছেন তারা। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন- বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে শহরকে ময়লামুক্ত করতে অতিরিক্ত লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখনো অনেক স্থানে পানি থাকায় ময়লা পরিষ্কার করা যাচ্ছে না। এরপরও ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে যতটুকু সম্ভব দুর্গন্ধ কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এদিকে- গ্রামের মানুষজনও রয়েছেন দুর্ভোগে। বন্যার পানি নামতে শুরু করায় ভেসে উঠছে ক্ষত। একই সঙ্গে সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থা তছনছ হয়ে গেছে। জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, সিলেট সদর সহ কয়েকটি উপজেলার রাস্তাগুলোর বেহাল দশা। অনেক স্থানে রাস্তা ভেঙে ঢলের পানি প্রবাহিত হয়েছে। যোগাযোগের অভাবে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন মানুষ। এছাড়া পানিতে কয়েক হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগস্ত হয়েছে। এখনো অনেক এলাকার রাস্তাঘাটে পানি। সিলেট-জকিগঞ্জ, সিলেট-বিয়ানীবাজার ও সিলেট-বালাগঞ্জ সড়ক দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। সড়কের ওপর পানি থাকার কারণে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বন্যায় না খেয়ে  কেউ মারা যায়নি- স্বাস্থ্যমন্ত্রী: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও সরাসরি ব্যবস্থাপনায় সিলেট এবং সুনামগঞ্জের বন্যার্ত কোনো মানুষ না খেয়ে মারা যায়নি, স্বাস্থ্যসেবার অভাবে মৃত্যুবরণ করেনি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক। বন্যার শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সকল স্তরের প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তর এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। তার পরিপ্রেক্ষিতে সবাই বন্যার্ত অসহায় মানুষের সহযোগিতায় ঝাঁপিয়ে পড়েন।  সোমবার দুপুরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় ও জেলা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন- অনেকেই আমাদের সমালোচনা করছেন। কেউ সমালোচনা করতেই পারে। তবে যারা সমালোচনা বেশি করেন তারা কাজ কম করেন। আর যারা কাজ করেন তারা কারো সমালোচনা করার সময় পান না। ভয়াবহ বন্যায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পর্যন্ত পানি ঢুকে যায়। নিচতলায় বিভিন্ন কক্ষে ৩ হাত পরিমাণ পানি ছিলো। সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন এবং ত্রাণ বিতরণ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে রওয়ানা দেন তিনি। প্রথমে সুনামগঞ্জে ও পরে সিলেটে আসেন মন্ত্রী। হেলিকপ্টারে চড়ে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সিলেট-সুনামগঞ্জের প্রায় ৭ হাজার বন্যার্ত মানুষের মাঝে ত্রাণসহায়তা প্রদান করা হয়।
সরকার খাদ্য সহায়তা দিতে ব্যর্থ- গয়েশ্বর: বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন- স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত সিলেটের মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে সরকার। সিলেটের চার জেলার মানুষ যখন বন্যায় ডুবছে তখন ন্যূনতম টাকা বরাদ্দ দিয়ে সরকার সিলেটের মানুষের সঙ্গে তামাশা করেছে। সোমবার বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ও স্বেচ্ছাসেবকদল কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে এবং সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের ব্যবস্থপনায় আয়োজিত পৃথক দু’টি খাদ্য সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের ব্যবস্থাপনায় বেলা ১টায় সদর উপজেলার সাহেববাজার টিলাপাড়ায় অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন- সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল। সকাল ১১টায় দক্ষিণ সুরমায় ক্বীন ব্রিজের মুখে মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদলের খাদ্য সহায়তা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন- সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহিদ সুহেল। খাদ্য সহায়তা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বেচ্ছাসেবকদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান বলেন- দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে থাকা হচ্ছে রাজনীতি। বিএনপি’র ও স্বেচ্ছাসেবকদল সেই কাজটি করছে এবং করবে। সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল বলেন- ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সিলেটের মানুষের সঙ্গে সরকার যে অমানবিক আচরণ করেছে তার পরিণাম তাদেরকে একদিন ভোগ করতে হবে।

বালাগঞ্জে রাস্তায় তাঁবু বানিয়ে থাকছে মানুষ
দশদিন ধরে পানিবন্দি রয়েছেন সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলাবাসী। পানিবন্দি মানুষকে যা ত্রাণসামগ্রী দেয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। উপজেলার নিম্নাঞ্চল পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নে বানভাসি মানুষের মধ্যে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। জরুরি ভিত্তিতে সেখানে মেডিকেল টিম পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন তারা। বন্যার কারণে এক সপ্তাহ যাবৎ এই ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এই ইউনিয়নে আশ্রয় কেন্দ্রের উপযোগী কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আজিজপুর বাজার হারুন মার্কেটে প্রায় ৪০টি পরিবার, বাজার সংলগ্ন হেনা কমিউনিটি সেন্টারে ১০টি পরিবার, আজিজপুর গ্রামের ইয়াকুব আলীর বাড়িতে ১০টি পরিবার, নলজুড় গ্রামে জেসমিন-ছাদ জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪০টি পরিবার, নলজুড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০টি পরিবার ও নলজুড় টিএ কমিউনিটি সেন্টারে ৬০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। আজিজপুর বাজারসহ বাজারের আশেপাশে তাঁবু বানিয়ে আরও প্রায় দুই-আড়াইশ’ পরিবার গবাদিপশু নিয়ে এক সঙ্গে বসবাস করছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে একেকটি রুমে গাদাগাদি করে কয়েকটি পরিবার কোনোরকম দিনযাপন করছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের তথ্য মতেÑ পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নে সাড়ে ১৬ টন চাল, নগদ ৪০ হাজার টাকা ও আড়াইশ’ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ আহমদ মঞ্জু তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, ত্রাণ বিতরণ নিয়েও স্বজনপ্রীতি চলছে। উপজেলার সবচেয়ে নিম্নাঞ্চল এবং বন্যাকবলিত এলাকা পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়ন। একেকটি বাড়ি একেকটা দ্বীপ। এখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যদি উঁচু স্থানে হতো তাহলে সবচেয়ে বেশি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র এ ইউনিয়নেই হতো। সরকারি কোনো আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় মানুষের দুর্দশার শেষ নাই। প্রতিটি উঁচু বাড়ি একেকটি আশ্রয়কেন্দ্র তা জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের হিসাবে নেই। অসংখ্য পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যান্য এলাকায় আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। এই ইউনিয়নের দোহালিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পুরো গ্রামের মানুষ পানিবন্দি। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেছেন। প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী না পেয়ে গ্রামের মানুষ  খেয়ে না খেয়ে আছেন। কয়েকটি পরিবার সামান্য শুকনো খাবার পেয়েছে তা ক’দিনই বা খাওয়া যায়। মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো লজ্জায় কারও কাছে হাত পাততেও পারছেন না। পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনহার আলী বলেন, আমার ওয়ার্ডে আজিজপুর, দোহালিয়া ও আলমপুর গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে চরম কষ্টে দিনযাপন করছেন। সরকারি কোনো ত্রাণ সহায়তা এখনো আমার কাছে আসেনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
এই ওয়েবসাইটের লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
প্রযুক্তি সহায়তায়: রিহোস্ট বিডি