ঈদের পর এখনও কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেনি সিরাজগঞ্জের তাঁত কারখানার শ্রমিকরা। ফলে তাঁত কারখানার চাকা এখনো ঘুরতে শুরু করেনি। তবে তাঁতের চাকা সচল না হলেও সুতার দাম বাড়তে শুরু করেছে।
গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সুতা প্রতি পাউন্ডে বেড়েছে ১৫ টাকা। ফলে বিপাকে পড়েছেন সিরাজগঞ্জের তাঁত শিল্প সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে সুতার দোকান ঘুরে দেখা যায়, মতিন, নাহিদ, শুভ রাজ, বি আর এস, সুন্ধরাম, আয়না-৮০, মোশাররফ, নান্নু, হংকং, এম হোসেন, সাবেদ আলী, আফতাব, দোয়েল, টিউলিপ, রাসেল, সূর্যমুখী, জোড়া হাতী, মানিকা, মাস্তানিসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সুতার দাম প্রতি পাউন্ডে বেড়েছে ১৫ টাকা। এতে তাঁত কারখানার মালিকদের প্রতি বস্তা সুতা আগের চেয়ে ১৫০০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে।
জেলার বেলকুচি চন্দন গাঁতি গ্রামের তাঁত কারখানা মালিক বৈদ্য নাথ রায় জানান, ঈদের পর শ্রমিকেরা এখনো পুরোপুরি কাজে যোগ দেয়নি। ফলে কারখানায় তাঁতের চাকা এখনও পুরোদমে সচল হয়নি। কিন্তু সুতার দাম বাড়তে শুরু করেছে। গত দুই সপ্তাহে প্রতি পাউন্ড সুতায় বেড়েছে ১৫ টাকা। এভাবে বাড়তে থাকলে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে যাবে।
শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী গ্রামের শফিকুল মোল্লা বলেন, কাপড়ের দাম না থাকলেও সুতার দাম ঠিকই বাড়ছে। ফলে কাপড় তৈরিতে যে খরচ হচ্ছে সে তুলনায় দাম পাচ্ছি না। এতে লোকসান দিয়ে ব্যবসায় করছি। জানি না এভাবে কতদিন ব্যবসায় টিকিয়ে রাখতে পারবো।
বেলকুচির তামাই গ্রামের শামী হোসেন জানান, তাঁতের লুঙ্গির দাম কম থাকায় এমনিতেই কারখানা অর্ধেক করেছি। যেভাবে সুতার দাম বাড়ছে তাতে দেখছি ব্যবসা বাদ দিতে হবে।
সিরাজগঞ্জ শহরের নুরুল ইসলাম, শামীম শেখ, হাসেম আলীসহ বেশ কয়েকজন সুতার পাইকারি বিক্রেতা বলেন, ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে সুতার দাম বেড়েছে। ফ্যাক্টরি থেকে যে দাম নির্ধারণ করে দেয় সেই দামেই সুতা বিক্রি করি।
এদিকে বাংলাদেশ হ্যান্ডলুম অ্যান্ড পাওয়ারলুম অ্যাসোসিয়েশনের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান জাগো নিউজকে জানান, সুতার দাম বাড়তে থাকলে সিরাজগঞ্জের তাঁত শিল্প বিলুপ্ত হয়ে যাবে। তাই তাঁতিদের স্বার্থে সরকারে সুদৃষ্টি কামনা করছি।
তিনি আরও বলেন, সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে কারখানার মালিকদের স্বল্প সুদে ঋণ, শুল্ক মুক্ত সুতা, রংয়ের দাম স্থিতিশীল রাখার পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে এ শিল্প বিলুপ্ত হয়ে যাবে।