ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, ততই ক্রেতার ভিড় বাড়ছে ঈদবাজারে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিপণিবিতানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। অভিজাত বিপণিবিতান, বিভিন্ন মার্কেট, এমনকি ফুটপাথেও চলছে জমজমাট বেচাকেনা। বৈশাখের কাঠফাটা রোদ ও গরম উপেক্ষা করেও পরিবার-পরিজনের জন্য ঈদের পোশাকসহ অন্যান্য সামগ্রী কিনতে দেখা গেছে। বাড়ি যাওয়ার আগেই আপনজনদের জন্য কেনাকাটা সারতে ঘুরছেন দোকান থেকে দোকানে। ক্রেতা ধরতে পোশাকের গুণকীর্তনে ব্যস্ততা বেড়েছে বিক্রয়কর্মীদেরও। বেশ কিছুদিন সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ও ফুটপাথ ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, যারা পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে একটু আগে ঢাকা ছাড়ার চিন্তা করছেন, তারা এখন বেশি কেনাকাটা করছেন। ঢাকায় ঈদ করা ক্রেতারাও কেনাকাটা শুরু করেছেন।
তারা বলছেন, দিনে তিন সময় ক্রেতার উপস্থিতি বেশি থাকে মার্কেটে। বেলা ১১টা থেকে দুপুরের আগ পর্যন্ত, বিকেলে অফিস ছুটির পর ঘণ্টা খানেক এবং সন্ধ্যার পর সাড়ে ৭টার দিক থেকে শুরু করে মাঝরাত পর্যন্ত। তবে সন্ধ্যার পরে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়।
রাজধানীর ফার্মগেটের সেজান পয়েন্ট ঝর্ণাধারা ফ্যাশনের বিক্রয়কর্মী মাহবুব সুমন বলেন, কেনাকাটা অনেক ভালো। রোজার প্রথম দিকে বেচাকেনা কম ছিল, এখন বাড়ছে। করোনার কারণে গত দুই বছর তেমন একটা বেচাকেনা ছিল না, এখন যে বিক্রি চলছে, এভাবে থাকলে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে আসবে।
বøু আইয়ের কর্মী সালাহ উদ্দিন বাবু বলেন, আগের চেয়ে বেচাকেনা অনেক বেড়েছে। দুপুরের আগে এবং সন্ধ্যার পর কাস্টমার বেশি থাকে। মানুষ ইফতার করে আস্তে ধীরে বাজার করতে আসে। আমি নিজেও দোকানের স্থায়ী কর্মী নই। এটা আমার বন্ধুর দোকান, বিক্রি বাড়ায় আমি তারে সাহায্য করতে আসছি।
সেখানে থাকা সূচনা ফ্যাশনের বিক্রয়কর্মী শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রথম দিকের তুলনায় বেচাকেনা অনেক বেড়েছে। চাঁদরাত পর্যন্ত এমন থাকলেই চলবে। আরও বাড়লে তো সেটা খুব ভালো।
সেজান পয়েন্টে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতা আনোয়ারা বেগম বলেন, সারা বছর তো ঢাকায় থাকা হয়। শুধু ঈদেই আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয়, সুখ-দুঃখ বিনিময় হয়। পরিবারের প্রায় ১২-১৩ সদস্যের জন্য জামাকাপড় কিনতে হবে। এ জন্য অফিস শেষ করে জামাকাপড় কিনতে এসেছি। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা ছাড়তে হবে। তাই তাড়াহুড়ো করে কেনাকাটা করতে হচ্ছে। দামটা একটু বেশি মনে হচ্ছে। তারপরও কিছু তো করার নেই, দুই বছর কাউকে তো তেমন কিছু দেয়া হয়নি।
এদিকে নিম্নবিত্তরাও ঈদবাজার করতে ঘুরছেন রাজধানীর ফুটপাথগুলোতে। তাই সেখানে বেচাকেনা বেশ ভালোই হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা। দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোয় তো ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। আজিজ সুপার মার্কেটের দোকান বালুচরের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার শাহিন চৌধুরী বলেন, আমাদের এখানে হোলসেল রিটেলার ধরনের পণ্য বিক্রি হয়। শবেবরাতের পর থেকে রোজার প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত হোলসেল মার্কেট খুব ভালো গেছে। এখন রিটেল মার্কেটও আলহামদুলিল্লাহ ভালো। গত দুই বছরের চেয়ে অনেক ভালো। তবে আরেকটু ভালো আশা করেছিলাম। যত ভালো হয় ততই তো ব্যবসায়ীদেরই ভালো। এতে দুই বছরের ক্ষতি কিছুটা কাটিয়ে ওঠা যাবে।
ফুটপাথের বিক্রেতা শাহাবুদ্দিন বলেন, ফুটপাথে বেচাকেনা চলছে ভালোই। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে পাঞ্জাবি। নানা ডিজাইনের পাঞ্জাবি রয়েছে আমাদের কাছে। দামও তুলনামূলক কম, তাই কাস্টমার বেশি নিচ্ছে।