দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রভাবে গত মার্চ মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব বলছে, মার্চে দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬.২২ শতাংশ, যা ১৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত ফেব্রুয়ারি মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৬.১৭ শতাংশ। তার আগের মাস জানুয়ারিতে ছিল ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এর আগে ২০২০ সালের অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, মার্চ মাসে গ্রামের খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ। আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে গ্রামে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমি ৬২ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।
মার্চ মাসে শহর এলাকায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ। আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে শহর এলাকায় খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৫ দশমিক ৩০ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৫ দশমিক ৯১ শতাংশ।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে টানা ছয় মাস বাড়ার পর জানুয়ারিতে কমেছিল এই সূচক। ফেব্রুয়ারিতে তা আবার বেড়েছে। যা মার্চেও অব্যাহত ছিল।
তবে সরকার বা বিবিএসের দেয়া হিসাবের চেয়ে মূল্যস্ফীতির হার বাস্তবে অনেক বেশি বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে মূল্যস্ফীতির প্রকৃত হার বিবিএসের হিসাবের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি। এতে বলা হয়েছে, শহর এলাকায় সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার এখন ১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ। আর গ্রামে এই হার ১২ দশমিক ১০ শতাংশ।
সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, পণ্যমূল্য নিয়ে সরকারি সংস্থা বিবিএস যে তথ্য দিচ্ছে, তা বাস্তবের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। এ ক্ষেত্রে যদি সঠিক তথ্য তুলে আনা না হয়, তবে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া টেকসই হবে না। তিনি আরও বলেন, বিবিএস পুরোনো ভিত্তি বছর ধরে মূল্যস্ফীতির হিসাব করছে, যা বর্তমান সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য না। আরেক গবেষণা সংস্থা সিপিডিও এমন মূল্যস্ফীতি নিয়ে একই মতামত দিয়েছে।