বাঁ পায়ের জাদু দেখিয়ে, ফুটবলকে তুলির আঁচড়ে অনন্য শিল্পকর্ম গড়ে ক্যারিয়ারে অসংখ্য পুরস্কার জিতেছেন সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী লিওনেল মেসি। ক্লাব ফুটবলে সম্ভাব্য সব শিরোপা জেতা ফুটবল জাদুকরের ক্যারিয়ারে একমাত্র অপ্রাপ্তি কিংবা আক্ষেপ বলতে ছিল কেবল বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফিটা। এবার সম্ভাব্য শেষ বিশ্বকাপ খেলতে নেমে সেটির সুধাও পান করলেন।
৩৬ বছর ধরে যে শিরোপার পানে চেয়েছিল আর্জেন্টিনা। তার পূর্ণতা পেল মেসির হাত ধরে। আট বছর আগে মারাকানায় চির আরাধ্য বিশ্বকাপ হাতে উঠতে পারতো ফুটবল জাদুকরের। কিন্তু মারিও গোতজের এক গোলেই হৃদয় ভেঙে চুরমার হয়েছিল আলবিসেলেস্তেদের।
এদিকে, আর্জেন্টাইন সুপারস্টার মেসির অবিশ্বাস্য ক্যারিয়ারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাকে সুপার ব্যালন ডি’অর দেয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমে। এর আগে একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে আলফ্রেডো ডি স্টেফানো সুপার ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন।
ব্যালন ডি’অরকে ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তিগত পুরস্কার হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু যদি এর সামনে ‘সুপার’ শব্দটি যুক্ত করা হয় তাহলে কী হবে? প্রথম ব্যালন ডি’অর পুরষ্কারটি ১৯৫৬ সালে কোনো খেলোয়াড়ের হাতে তুলে দেয়া হয়েছিল। বিশ্বের সর্বকালের বহু সেরা খেলোয়াড় এই সম্মান ছুঁয়ে দেখেছে। তবে ‘সুপার ব্যালন ডি’অর’ জয়ী হয়েছেন কেবল একজনই। এবার দ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে সেটি হাতে উঠতে পারে ফুটবল জাদুকর মেসির।
২০০৬ থেকে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার জার্সিতে একটা শিরোপার আশায় কতই না দিবস রজনী লড়ে গেছেন ফুটবলের মহাতারকা লিও। অবশেষে ধু ধু মরুতে ফুল ফোটালেন। ফুটবল বিধাতা দু হাত ভরে দিলেন তাকে। মেসি শুধু একজন ফুটবলারই নন। তিনি তো হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। তার বাঁশির জাদুতে লড়েছে সতীর্থরা। বিশ্বকাপ জিতে মেসি গড়েছেন অনন্য সব রেকর্ড।
ছাড়িয়ে গেছেন জার্মানির ১৯৯০ বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক লোথার ম্যাথিউজের ২৫ ম্যাচ খেলার রেকর্ড। বিশ্বকাপে ফাইনালসহ মেসি খেলেছেন ২৬টি ম্যাচ। রেকর্ডের রাজা কাতার বিশ্বকাপে এত রেকর্ড গড়েছেন, যেগুলোর পাতার পাতা লিখেও শেষ হবে না মেসি বন্দনা। পাওলো রসির পর বিশ্বকাপে এক আসরে গোল্ডেন বুট ও বল জেতা দ্বিতীয় ফুটবলার হতে পারেননি।
তবে বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারে দুইবার গোল্ডেন বল জেতা একমাত্র ফুটবলারের রেকর্ডটা পরম যত্নে নিজের করে নিয়েছেন লিও। ফাইনালে ২ গোল করে মেসি ছাড়িয়ে গেছেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার পেলের বিশ্বকাপে ১২ গোল। শিরোপা জিতে শেষটা স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছিলেন মেসি।