প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি করার বিধান নেই। কিন্তু গত এক যুগ ধরে সচিবালয় থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে দলবাজি ও দলদাসের প্রতিযোগিতা চলছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কে কত বড় নেতাকর্মী সেটা প্রমাণের চেষ্টা চলছে। জেলা পর্যায় ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি অফিসকে অনেক সরকারি কর্মকর্তা রাজনৈতিক দলের অফিসে পরিণত করেছেন। সরকারি চাকরি করেও চাকরির বিধি ভঙ্গ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন অনেক কর্মকর্তা। এতে করে আওয়ামী লীগ, দলটির সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মতো তারাও দলবাজিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। এতে স্বার্থের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ায় সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকেই জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় নেতাদের হাতে লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত হচ্ছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের গায়ে হাত তোলার ঘটনা ইদানীং বেড়ে গেছে। কুষ্টিয়ার এক এসপির ‘সরকারের সমালোচনা করলে ‘হাত-পা ভেঙে দেয়ার হুমকি’ এবং বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের বিরুদ্ধে বরিশাল সদর উপজেলার ইউএনও’র বিরোধের খবর দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছিল।
জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ইনকিলাবকে বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তারা দলনিরপেক্ষ হয়ে কাজ না করায় অপ্রীতিকর ঘটনা বেশি ঘটছে। রাজনীতিবিদদের ওপর আমলাদের আধিপত্য এখন ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মধ্যে অন্যতম আলোচিত বিষয়। জনগণের ভোটের অধিকার না থাকায় এটা প্রমাণিত হচ্ছে বাংলাদেশ আমলাদের প্রজাতন্ত্র হয়ে গেছে। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, আমলাদের হাতে প্রশাসন তো আছে তারপর রাজনীতি তুলে দিয়েছেন রাজনীতিবিদরা। বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থায় নির্বাচনে জনপ্রতিনিধিদের জয় নির্ভর করে সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর। ফলে আমলারা জনপ্রতিনিধিদের ওপর হুকুম চালাচ্ছেন। বাস্তবে যা হওয়া উচিত ছিল হচ্ছে তার উল্টো।
দীর্ঘদিন থেকে দলবাজির এবং দলীয়করণের কারণে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অনেকেই উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে এবং বিশৃঙ্খলায় জড়িয়ে পড়ছেন। কোনো কোনো কর্মকর্তা দলীয় অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন। আবার প্রশাসনে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত লাঞ্ছিত হচ্ছেন। আবার কোনো কোনো কর্মকর্তা মারামারিতে জড়িয়ে পড়ছেন। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কিছু করলে বিনা কারণে মামলায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। টেকনাফের ইউএনও’র অশালীন আচরণের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। অন্যদিকে উচ্চ আদালত ডিসিদের অফিসের দরজা খোলা রাখতে নির্দেশনা দিয়েছেন। ইতোমধ্যে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে এসিল্যান্ডের ওপর হামলার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। আবার নেত্রকোনার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। তবে প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা ১৯৭৯-এর ২৫ উপবিধি (সংশোধিত) ২০০২ সালের সংশোধিত বিধিতে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারবেন না এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা থেকে তাদের বিরত থাকতে বলা হয়েছে। কিন্তু সেটা মানা হচ্ছে না প্রশাসনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি কর্মকর্তাদের জনগণকে সেবা প্রদানের নির্দেশনা দিয়েছেন। তারপরও এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ওপর।
জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা কারো সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলে সেটা দুর্নীতি হিসেবে বিবেচিত হবে। কর্মকর্তারা যাতে আচরণ বিধিমালা মেনে দায়িত্ব পালন করেন সে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাদেরকে জনগণের সঙ্গে মিশে যেতে হবে। সেবা নিতে গেলে যদি অভ্যর্থনা জানানো না হয়, সেটাই অন্যায়। দুর্ব্যবহারও এক ধরনের দুর্নীতি। আইনের মধ্যে থেকে সাধ্যমতো সেবা দিতে হবে। কর্মকর্তাদের মনে রাখতে হবে, আপনার আচরণ সরকারের আচরণ।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম ইনকিলাবকে বলেন, সরকারি কর্মচারীদের অসদাচরণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হলে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ৩(খ) বিধি অনুসারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাজশাহী-১ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী একজন কলেজ অধ্যক্ষকে অপদস্ত করে আলোচনায় আসেন দেশব্যাপী। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই জাতীয় সংসদ ভবনের এলইডি হলে দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যানকে ঘুসি মেরে সমালোচনার ঝড় তোলেন কুমিল্লা-৪ আসনের সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল। গত ১৬ জুলাই দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে ঘুসি মেরে তিনি হাসপাতালে পাঠান বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনভাবে গত এক বছরে অর্ধডজন এমপি মানুষ পিটিয়ে নানা সময়ে খবরের শিরোনাম হয়েছেন।
নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছনার ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, এই অধ্যক্ষকে লাঞ্ছনার পেছনে ছিলেন নড়াইলের এক এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান। গত ২২ ফেব্রুয়ারি কুড়িগ্রামের উলিপুরে ইউপি নির্বাচনের সময় বিপক্ষে কাজ করার অভিযোগ তুলে এক মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক ফিরোজ আলমকে লাঞ্ছিত করেন নির্বাচিত চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। এ ঘটনায় ওই শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
দুই বছর আগে ২০২০-এর ১৪ মার্চ মধ্যরাতে কুড়িগ্রামের সেই সময়ের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সুলতানা পারভীনের নির্দেশে স্থানীয় সাংবাদিক আরিফুলকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরে জেল-জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাকে সাজা দেয়া হয়। এ ঘটনায় দেশের গণমাধ্যম কর্মীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে সাংবাদিক আরিফ মুক্তিলাভ করেন। আর শাস্তির মুখোমুখি হন সুলতানা পারভীন।
কক্সবাজারের টেকনাফে উপহারের ঘর নির্মাণের বিষয়ে ঢাকার একটি অন-লাইন নিউজ পোর্টালে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কায়সার খসরু স্থানীয় সাংবাদিকের সঙ্গে অশালীন-অসংযত আচরণ করেন। ইউএনও’র অশোভন আচরণের বিষয়টি নজরে আনলে হাইকোর্ট বলেন, এটা কোনো ভাষা হতে পারে না, মাস্তানদের চেয়েও খারাপ ভাষা ব্যবহার করেছেন। একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির মুখে এমন অশালীন শব্দ কাম্য নয়। ইউএনওর ভাষা খুবই আপত্তিকর, দুঃখজনক, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। কোনো রং হেডেড পারসন ছাড়া এ রকম ভাষায় কথা বলতে পারে না।
গত বছর সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ইউএনও শফি উল্ল্যাকে ‘স্যার’ সম্বোধন না করায় একজন সাংবাদিকের ওপর চড়াও হয়েছিলেন তিনি। ভাই বলে ডাকায় তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। বাগি¦তণ্ডার একপর্যায়ে তিনি সিলেট মিরর পোর্টালের এই প্রতিবেদকের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। তিনি বলেন, ‘ইউএনওকে ভাই ডাকা যাবে না। আপনি জানেন না, না জানলে জেনে নিন, একজন ইউএনওকে স্যার বলতে হয়।’ পরে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আহাদের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
গত ৮ জুলাই মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুনা লায়লাকে ‘স্যার’ না বলে ‘আপা’ ডাকায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। তার (ইউএনও) নির্দেশে একজন ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে আহত করে পুলিশ। উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের জায়গীর বাজার বাসস্ট্যান্ডে এমন ঘটনা ঘটে। পরে জেলা প্রশাসকের মধ্যস্থতায় বিষয়টির সমাপ্তি ঘটে। কোনো প্রকার শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়নি রুনা লায়লাকে।
৭ জুলাই রাজশাহী-১ আসনের (গোদাগাড়ী-তানোর) সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে উপজেলার রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে প্রকাশ্যে কিল-ঘুসি ও হকিস্টিক দিয়ে পেটানোর অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে শিক্ষক সংগঠনসহ বিভিন্ন মহল থেকে সংসদ সদস্য ফারুকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার দাবি ওঠে। অবশ্য নিজের কৃতকর্ম ঢাকতে ১৪ জুলাই অধ্যক্ষকে পাশে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আলোচিত-সমালোচিত সংসদ সদস্য। সংবাদ সম্মেলনে ওই অধ্যক্ষ দাবি করেন, সংসদ সদস্য ওমর ফারুক তাকে পেটাননি। ধাক্কাধাক্কি হয়েছিল মাত্র।
সরকারি কর্মকর্তা, দলীয় নেতাকর্মী থেকে সাধারণ মানুষ পিটিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে আলোচনায় আসেন বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন। এই সংসদ সদস্য ২১ মে জেলার পাথরঘাটার হরিণঘাটা বাজারসংলগ্ন সøুইসঘাট এলাকায় সালিসি বৈঠক ডেকে এক মাছ ব্যবসায়ীকে চড়থাপ্পড় মারেন। ফোরকান মিয়া নামের ওই মাছ ব্যবসায়ী বাকিতে মাছ না দেয়ায় শাস্তি হিসেবে নিজেই চড়থাপ্পড় দেন। ফোরকানের অভিযোগ, তিনি বরগুনার সংরক্ষিত (নারী) আসনের এমপি সুলতানা নাদিরার সমর্থক। নাদিরার সমর্থক হওয়ার কারণেই তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে মেরেছেন শওকত হাচানুর রহমান রিমন। গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর সংসদ সদস্যের মোটরসাইকেল বহরকে সাইড না দেয়ায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও মাছ ব্যবসায়ী মো. নজরুল ইসলামকে বেধড়ক মারধর করেন বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন। নির্যাতনের শিকার মাছ ব্যবসায়ী নজরুল ৮ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বিএফডিসি মৎস্য পাইকার সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক।
গত ১৯ মে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারি মাহতাব উদ্দীন কলেজের দুই সহকারী অধ্যাপককে পেটানোর অভিযোগ ওঠে ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের বিরুদ্ধে। লাঞ্ছিত দুই শিক্ষক হলেন পদার্থ বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন ও গণিতের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন। শিক্ষক পেটানোর ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় জেলাজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন কলেজ অধ্যক্ষ ড. মাহাবুবুর রহমান। গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর ডেমরা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের এক দলিল লেখককে ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য কাজী মনিরুল ইসলাম মনু মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ অনুযায়ী, চেয়ার দিয়ে মারধর করার পাশাপাশি ভুক্তভোগীর মাথা লক্ষ্য করে পানির গ্লাস ছুড়ে মারেন সংসদ সদস্য। ভুক্তভোগী দলিল লেখক আনোয়ার হোসেন ডেমরা সাবরেজিস্ট্রি অফিস দলিল লেখক ও স্ট্যাম্প-ভেন্ডার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক।
কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি সম্প্রতি টেকনাফে দলের বর্ধিত সভায় তিন নেতাকে পিটিয়ে আলোচনায় আসেন। মারধরের শিকার নেতারা হলেনÑ টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. ইউছুফ মনো, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. ইউছুফ ভুট্টো ও উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক। নেতাদের পেটানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা গেছে, বদির সঙ্গে তার ভাই আবদুস শুক্কুর ও কয়েকজন নেতা মিলে তাদের পেটাচ্ছেন। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের ভেতরে ও বাইরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
গত ১৬ জুলাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে বৈঠক চলাকালে দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদকে কিল-ঘুসি মারার অভিযোগ ওঠে কুমিল্লা-৪ আসনের সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের বিরুদ্ধে। এতে উপজেলা চেয়ারম্যান আহত হন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় বেশ তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
গত ২১ আগস্ট সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে খেলার মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর হামলায় উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) লিয়াকত সালমান গুরুত্বর আহত হন।
মাদারীপুরের ডাসারে আওয়ামী লীগের দলীয় অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন ইয়াছমীন প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন। আওয়ামী লীগের আয়োজনে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় শহীদদের স্মরণে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন ইয়াছমীন। এ ব্যাপারে মাদারীপুর আইন সহায়তা কেন্দ্র লিগাল এইড অ্যাসোসিয়েশন সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম মিয়া বলেন, সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা ১৯৭৯-এর ২৫ উপবিধি (সংশোধিত) ২০০২ সালের সংশোধিত বিধি মোতাবেক সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন ইয়াছমীন বলেন, আমি প্রধান অতিথি ছিলাম এবং ডাসার থানার ওসি বিশেষ অতিথি ছিলেন।
গত ২৭ আগস্ট খেলার মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ নিয়ে আলোচনায় আসা নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা বেগমকে এবার চট্টগ্রামে বদলি করা হয়েছে। এর আগে গত বুধবার ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. খবিরুল আহসান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাঁকে কেন্দুয়ার পাশের উপজেলা মদনে বদলি করা হয়েছিল।