তারকাদের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ল পিএসজি। উত্তেজনায় ভরা ম্যাচটিতে ৫-৪ গোলে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দল হেরে গেলেও ফুটবলের মজা পেয়েছেন ভক্তরা। আর জয় তুলে নিয়ে নিজেদের শক্তির বিষয়ে জানান দিলেন লিওনেল মেসি, নেইমার, কিলিয়ান এমবাপ্পেরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সৌদি আরবের কিং ফাহাদ স্টেডিয়ামে সৌদি অলস্টার দলের মুখোমুখি হয় লিগ ওয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি। অলস্টার একাদশের হয়ে মাঠে নামনে পর্তুগিজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। আর পিএসজির হয়ে নেইমার, মেসি এবং এমবাপ্পেরা। শেষ পর্যন্ত ৫-৪ গোলে রোনালদোদের হারিয়ে জয় পায় ফরাসি ক্লাবটি।
ম্যাচটিতে পিএসজির হয়ে গোল করেন লিওনেল মেসি, মারকুইনহোস, সার্জিও রামোস, কিলিয়ান এমবাপ্পে এবং হুগো একিতিকে। আর সৌদি অলস্টারের পক্ষে দুই গোল করেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। একটি করে গোল পান জ্যাং হিউন-সু ও তালিস্কা।
খেলার শুরুর দিকেই গোল করেন মেসি। মাত্র তিন মিনিটের সময়ে তিনি গোলটি করেন সৌদি অলস্টার দলের বিপক্ষে। আর মেসিকে গোল করতে সহায়তা করেন ব্রাজিল তারকা নেইমার। বল পেয়ে ডান প্রান্ত দিয়ে রোনালদোদের সীমানায় নিয়ে যান নেইমার। সেখানে ক্ষুধার্ত বাঘের মতো অপেক্ষা করছিলেন মেসি। প্রথম সুযোগটি তাই হাতছাড়া করেননি বিশ্বকাপজয়ী তারকা।
সৌদি অলস্টারের গোলরক্ষক মোহাম্মদ আল-ওয়াইসকে ফাঁকি দিয়ে মেসি বল জড়ান জালে। তাতে শুরুতেই ধাক্কা খান পর্তুগিজ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
তবে মেসির গোলের পাল্টা জবাব দিয়েছেন সৌদি অলস্টারের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ৩৪ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচে ফেরান সমতা। পিএসজির গোলরক্ষক কেইলর নাভাস ফাউল করেন রোনালদোকে। যার কারণে দেয়া হয় পেনাল্টি। আর সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচে সমতা ফেরান তিনি।
৩৯ মিনিটে অলস্টারের খেলোয়াড় সালেম আল-দাউসারিকে ফাউল করেন হুয়ান বারনেট। তাতে লালকার্ড দেখতে হয় বারনেটকে। সে সময়ে ১০ জনের দলে রূপ নেয় পিএসজি।
৪৩ মিনিটে পিএসজির হয়ে গোল করেন ব্রাজিল তারকা মারকুইনহোস। তাতে ২-১ গোলে লিড পান মেসিরা। পিছিয়ে পড়ে রোনালদো আবারও সুযোগের অপেক্ষা করেন। কিন্তু সুযোগ পেয়ে যান নেইমার। ৪৬ মিনিটে সৌদি অলস্টারের ডি-বক্সে ফাউলের শিকার হয়ে নেইমার পেয়ে যান পেনাল্টি। পেনাল্টি থেকে পিএসজিকে লিড গোলের বদলে হতাশা দেন ব্রাজিল স্ট্রাইকার। তার স্বভাবজাত শট ধরে ফেলেন মোহাম্মদ আল-ওয়াইস।
প্রথমার্ধের শেষ সময়ে ম্যাচে আবারও সমতা ফেরান রোনালদো। ৫০ মিনিটে পিএসজির ডি-বক্সের সামনে থেকে ফ্রি-কিকের সুযোগ পান পর্তুগিজ স্ট্রাইকার। কিন্তু তার নেয়া শট মেসিদের মানব দেয়ালে লেগে ফিরে আসে। সে সময়ে দলকে বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হন নেইমাররা। তাতে কয়েক পা ঘুরে বল রোনালদোর পায়ে আসলেই জালে জড়াতে ভুল করেননি তিনি। ফলে প্রথমার্ধের বিরতিতে যাওয়ার আগে ২-২ গোলের সমতা আসে ম্যাচে।
প্রথমার্ধের বিরতি শেষে সার্জিও রামোসের গোলে এগিয়ে যায় মেসিরা। তবে কয়েক মিনিট পরেই জ্যাং হিউন-সুর গোলে ম্যাচে আবার ফেরে সমতা। তখন গোল সংখ্যা হয় ৩-৩।
৬০ মিনিটে পেনাল্টির সুযোগ পান কিলিয়ান এমবাপ্পে। নেইমারের মতো এ সুযোগটি নষ্ট না করে তিনি পিএসজিকে এনে দেন লিড গোল। তাতে ৪-৩ গোলে এগিয়ে যায় ফরাসি ক্লাবটি। সে সময়ে দুই দলে তারকাদের পরিবর্তন করায় ভক্তদের হতাশ হতে হয়েছে।
তবে হতাশার মাঝেও গোল করেছে মেসিদের দল। এমবাপ্পের বদলে মাঠে নামা হুগো একিতিকে ৭৮ মিনিটে গোল করে ম্যাচে ব্যবধান গড়েন ৫-৩ গোলের। রোনালদোকে ছাড়া সৌদি অলস্টার তখন ২ গোলে পিছিয়ে পড়ে। সেখান থেকে শেষ মুহূর্তে অলস্টারের হয়ে গোল করেন তালিস্কা। ৫-৪ গোলের ম্যাচটিতে আবারও সমতা ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হয়। আর তখনই বেজে ওঠে শেষ বাঁশি। তাতে ৫-৪ গোলের জয় নিয়ে রোনালদোকে হতাশ করে মেসি বাহিনী।