রোজায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কষ্ট ও অসুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়তে পারে। এ বিষয়ে এরই মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী আগাম একটি ইঙ্গিতও দিয়েছেন। গত শুক্রবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে।
এ দিকে রোজার আগেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি নির্ধারণ করে দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর মাউশি। সেখানে বলা হয়েছে আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস চলবে। বিশেষ করে বিগত দুই বছর করোনায় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। কাজেই সেই ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে এবার রমজানে বেশি সময় ধরে ক্লাস চালু রাখা হবে।
কিন্তু ২৬ এপ্রিল কিংবা ২০ রমজান পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস চালু রাখার ঘোষণায় শুরু থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তারা রমজানে ক্লাস বন্ধ রাখার বিষয়ে নানাভাবে আবেদন নিবেদন করে আসছেন। একই সাথে মাধ্যমিক ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও রমজানে বেশি সময় ক্লাস চালু রাখার বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। তাদের বক্তব্য অধিকাংশ শিক্ষার্থী রোজা রাখেন। এই গরমে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পক্ষেও রোজা রেখে ক্লাস করা কষ্টকর। এ ছাড়া প্রতি বছরই রোজায় ক্লাস বন্ধ থাকত। তাই এবছর তারা চান রোজায় ক্লাস বন্ধ কিংবা ছুটি বাড়িয়ে ক্লাস কমিয়ে দেয়ার জন্য।
মাউশি সূত্র জানিয়েছে রমজান মাসে মাধ্যমিক পর্যায়ে (স্কুল-কলেজে) আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত নিয়মিত ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। রোজায় ক্লাস কমিয়ে ছুটি বাড়ানো হবে। এ-সংক্রান্ত একটি সভা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষণা দেয়া হবে বলে আভাস পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে গতকাল রোববার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ছুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ ক্ষেত্রে মাউশির কোনো ভূমিকা নেই। তবে এটুকু বলতে পারি ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে চিন্তাভাবনা করছে। মনে হচ্ছে এ বিষয়ে পজিটিভ সিদ্ধান্ত আসতে পারে। আজকালের মধ্যেই একটি সভা করার কথা রয়েছে। সেখানে এ রমজানে ক্লাস কমিয়ে ছুটি বাড়ানো হবে। দ্রুত এ বিষয়ে ঘোষণা দেয়া হবে বলেও জানান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।
অবশ্য এর আগে গত ২৮ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব নজরুল ইসলামের স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে আগামী ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত নিয়মিত ক্লাস চালু রাখার কথা জানানো হয়। অফিস আদেশে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণ করতে এ বিভাগের আওতাধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান অব্যাহত রাখার অনুরোধ করা হয়।