সিলেটে ফেসবুকে মেয়ে সেজে একজনকে ডেকে এনে মুক্তিপণ দাবী করে না পেয়ে হাত পা বেধে শ্বাসরোধ করে একজনকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। লাশ উদ্ধারের ২ ঘণ্টার মধ্যেই ঘাতককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে গোয়াইঘাট উপজেলার জাফলং সীমান্তের একটি টিলায় হাত পা বাধা অবস্থায় এক যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে তার পকেটে থাকা মোবাইল ফোন ও কাগজপত্র দেখে নিশ্চিত হয় তার নাম কাউছার আহমদ রাজু। তিনি সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার কালাম বহরপুর গ্রামের আব্দুল বাছিদের ছেলে।
এ ঘটনায় প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুই ঘণ্টার মধ্যেই চাপাই নবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার দাদনচক মিয়াপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে শামছুল ইসলামকে জাফলং এর একটি হোটেল থেকে আটক করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার বিকালে পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন আহমদ জানান, শামছুল ইসলাম ৯ এপ্রিল জাফলং মামার বাজারস্থ হোটেল মেঘালয়ে সরকারি একটি বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে অবস্থান করে। শামছুলের কাছ থেকে ৪টি মোবাইল ফোন ১টি খেলনা পিস্তল, ১টি কম্পিউটার হার্ডডিস্ক উদ্ধার করা হয়। সে কাউছার আহমদ রাজুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে ফেক আইডি থেকে মেয়ে পরিচয়ে চ্যাট করে।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার কাউছার আহমদ রাজুকে দেখা করার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে জাফলং মামার বাজারস্থ হোটেল মেঘালয়ে নিয়ে আসে শামছুল ইসলাম। এখানে আসার পর হোটেল কক্ষে মেয়ে পরিচয়দাতা ব্যক্তি মেয়ে নয় জেনে প্রতিবাদ করলে ঘাতক শামছুল তাকে মারপিট করে। পরে রাত ৯ থেকে ১০টার দিকে ফিল্মি স্টাইলে হোটেল থেকে ভিকটিম কাউছার আহমদ রাজুকে একটি ব্যাটারিচালিত অটো রিক্সায় করে সংগ্রাম বিজিবি ফাঁড়ির অদূরে একটি টিলায় নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের পর শামছুল আবারো মেঘালয় হোটেলে অবস্থান করে।
পুলিশ সুপার জানান, পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর একাধিক সূত্র ও তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে লাশ উদ্ধারের ২ ঘণ্টার ভিতরেই ঘটনায় জড়িত ঘাতক শামছুল ইসলামকে হোটেল মেঘালয় থেকে গ্রেফতারে সক্ষম হয় গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, ধৃত শামছুল একজন পেশাদার অপরাধী এবং আইটি এক্সপার্ট। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা তদন্তাধীন রয়েছে। লাশ উদ্ধার পরবর্তী ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেলে কলেজে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।